ফ্যাসিবাদের অভিযোগে একঘণ্টা হট্টগোলের পর ময়মনসিংহ মহানগরীতে ওএমএস ডিলার নিয়োগ লটারি কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
গত বুধবার আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের উদ্যোগে নগরের তারেক স্মৃতি অডিটরিয়ামে ওএমএসের ডিলার নিয়োগ লটারি কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়। এতে অংশগ্রহণকারীরা দুপুর ১২টা থেকেই টাউন হলে জড়ো হতে থাকেন। একটার দিকে মঞ্চে বিভাগীয় কমিশনার, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকসহ অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তারা আসলে। ভুয়া ভুয়া স্লোগানে হট্টগোল শুরু করেন আবেদনকারীরা। সরকারি কর্মকর্তারা লটারির নামে কৌশলে ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে এমন অভিযোগে বিএনপি সমর্থিত ডিলারশিপ আবেদনকারীরা একটা থেকে দুইটা পর্যন্ত অডিটরিয়ামের ভেতর ও বাহিরে হট্টগোল শুরু করেন। এসময় বিভাগীয় কমিশনারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা হট্টগোলকারীদের বুঝানোর চেষ্টা করেন, তাতেও তারা কোনো কর্ণপাত না করায় লটারি কার্যক্রম স্থগিত করেন। ওএমএসের ডিলারশিপ পেতে আবেদনকারী বিএনপি নেত্রী মাহমুদা আক্তার মলি বলেন, ডিলার নিয়োগে বিগত সময় আমরা কোনো লটারি প্রক্রিয়া দেখি নাই। এবছর কেন লটারির ব্যবস্থা করা হয়েছে আমরা এর জবাব চাই। লটারির ব্যবস্থা করায় আওয়ামী লীগের দোসর ও তাদের স্বজনরা একাধিক আবেদন করেছেন; এতে তাদেরই পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা এমন লটারি চাই না। মহানগর বিএনপি নেতা টুটুল ওয়াহিদ বলেন, ফ্যাসিবাদের সময় যারা খাদ্য বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করতেন তারাই লটারির আয়োজন করেছেন। এতে বিষয়টি স্পষ্ট যে আওয়ামী লীগের দোসররাই সুযোগ পাবে। এটা প্রশাসনের একটি কৌশল। তাই আমরা হট্টগোল করলে লটারি কার্যক্রম স্থগিত হয়। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুল কাদের বলেন, হট্টগোলের কারণে লটারির মাধ্যমে ডিলার নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। পুরাতন ডিলার যারা রয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে তারা পণ্য বিক্রি করবে না সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়বে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, দ্রুত বিষয়টি সমাধান করে নতুন ডিলার নিয়োগের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করা হবে। এবিষয়ে বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার আহমেদ বলেন, দেশের অন্যান্য বিভাগে লটারির মাধ্যমে ডিলার নিয়োগ হয়েছে।
সর্বশেষ আমরা স্বচ্ছভাবে ডিলার নিয়োগের জন্য লটারির আয়োজন করেছি। এর আগে আওয়ামী লীগের কোনো দোসর যেন আবেদন করতে না পারে সে জন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। কিন্তু যখন লটারি কার্যক্রম শুরু করব তখন আবেদনকারীরা হট্টগোল শুরু করে। তাদের থামানোর চেষ্টা করলেও থামেনি। তাই কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছি। ময়মনসিংহ নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে ওএমএস ডিলার ছিল ৫৩ জন। ৫ আগস্টের পর অনুপস্থিত ১৬ জন ডিলারকে বাতিল করা হয় কার্যক্রম থেকে। ৩৭ জন ডিলার দিয়ে চলছে কার্যক্রম।