ঢাকা সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

মোরেলগঞ্জে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান

মোরেলগঞ্জে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ১১৬নং গাবতলা ইসলামাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে মাসের অর্ধেক সময় থাকে হাঁটু পানি। প্রতিনিয়ত এ পানি পেরিয়ে শিক্ষার্থীদের যেতে হয় ক্লাসের পাঠদানে। স্কুল টু সাইক্লোন শেল্টার ভবনটিও ঝুঁকিপূর্ণ। স্থানীয় অভিভাবকদের দাবি, বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটসহ নতুন ভবন নির্মাণের।

সরেজমিন গতকাল সোমবার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার পানগুছির নদীর তীরবর্তী মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের গাবতলা গ্রামের ১১৬নং গাবতলা ইসলামাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি দুপুর পেরিয়ে গেলেও বিদ্যালয়ের মাঠের চারিদিকে অতিরিক্ত জোয়ারের পানি ভরা। বিদ্যালয়ের প্রবেশ মুখে পানিতে ভরা। ১৯৭২ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হলেও ৮০ দশকে মূল ভবনটি নির্মিত হয়। সাইক্লোন টু স্কুল এ ভবনটি নির্মিত হয়। পরবর্তীতে অতিরিক্ত লবণাক্তাতায় স্কুল ভবনের বিভিন্ন স্থান থেকে পলেস্তারা খসে পড়লে ২০২৩ সালে সরকারিভাবে ক্ষুদ্র মেরামতের বরাদ্দ দিয়ে একবার কোনো মতে সংস্কার ও রং করা হয়। যে কারণে বাইরে থেকে মনে হয় চকচক করছে। প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভাইজোড়া, কাঁঠালতলা ও গাবতলা ৩টি ওয়ার্ডের প্রায় এক দেড় হাজার মানুষ এ সাইক্লোন টু স্কুল ভবনটিতে নিরাপত্তার জন্য আশ্রয় নিয়ে থাকে।

অথচ বর্তমানে ভবনটি নিজেই জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়। বিদ্যালয়ের ১৬০ জন শিক্ষার্থী প্রতিদিন হাঁটু পানি পেরিয়ে ক্লাসে যেতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকরা তাদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠিয়ে আতংকে থাকতে হচ্ছে। পূর্ণিমার জোয়ারের পানি বৃদ্ধিতে মাসের ১০ থেকে ১২ দিন শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম থাকে।

অভিভাবকদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পার করে দিয়ে যেতে হয়। আবার ছুটির সময় পার করে নিতে হয়। বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে দেখা যায় সাইক্লোনের ২য় তলায় ৩টি শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিচ্ছেন শিক্ষকরা। সহকারী শিক্ষক আব্দুল কাইয়ুম, শাহিনুর খানম, দোলা রায় বলেন, মাঠে জোয়ারের পানি ওঠার কারণে ছাত্রছাত্রীদের দৈনিক সমাবেশ করাতে হয় স্কুলের বারান্দায়। রং করার কারণে বাইরে থেকে মনে হয় স্কুল ভবনটি ভালো রয়েছে; কিন্তু এর অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। মাঠ ভরাট ও নতুন ভবনের জন্য এরইমধ্যে প্রধান শিক্ষক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেছেন। মাঠ ভরাট হলে শিক্ষার্থীদের আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। পাশাপাশি স্কুলটিতে নতুন একটি ভবনও প্রয়োজন। স্থানীয় অভিভাবক গফ্ফার হাওলাদার, রাজ্জাক শেখ বলেন, পুরাতন এ স্কুলটি ছাত্রছাত্রীও অনেক বেশি পানি মাঠে ভরে থাকায় নিজেদের স্কুলে এসে ছেলেমেয়েদের আনা নেওয়া করতে হয়। এ স্কুলের সাইক্লোন ভবনে নদীর আশপাশের ৩ গ্রামের মানুষ ঝড় বন্যা এলে আশ্রয় নেয়। অথচ ভবনটির নাজুক অবস্থা। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে স্থানীয় গ্রামবাসীদের দাবি এ বিদ্যালয়টিতে মাঠ ভরাটসহ নতুন একটি ভবন নির্মাণের। এ সম্পর্কে উপজেলা শিক্ষা অফিসার, শিকদার আতিকুর রহমান বলেন, তিনি সদ্যমাত্র এ উপজেলায় যোগদান করে অনেক স্কুলের খোঁজখবর নিয়েছেন। তবে শুধু গাবতলা এ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নয়, এরকম একাধিক বিদ্যালয় নাজুক অবস্থায় রয়েছে। প্রাথমিকভাবে টিনসেডের ১০টি বিদ্যালয়ের ভবনের জন্য তালিক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়েছে। তবে স্কুলের মাঠ ভরাটের একটি তালিকা ইতিপূর্বে কর্মকর্তা পাঠিয়েছেন। ওই বিদ্যালয়টির খোঁজখবর নিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত