ঢাকা মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ঠাকুরগাঁওয়ের আমন রোপণে খরচ বেড়েছে

ঠাকুরগাঁওয়ের আমন রোপণে খরচ বেড়েছে

বর্ষাকাল চললেও ঠাকুরগাঁওয়ে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়নি। ফলে জমিতে স্বাভাবিকভাবে কাদা তৈরি সম্ভব হচ্ছে না। এতে আমণ চাষে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন জেলার কৃষকরা। পাশাপাশি শ্রমিক সংকট ও চড়া মজুরিতে বেড়েছে উৎপাদন খরচ। চলমান সংকটে অনেক কৃষক বাধ্য হয়ে স্যালো মেশিনের সাহায্যে কৃত্রিমভাবে কাদা তৈরি করে আমণ রোপণ করছেন। জেলার রানীশংকৈল, হরিপুর, বালিয়াডাঙ্গী, পীরগঞ্জ ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, মাঠে জমি প্রস্তুতের ব্যস্ততা চলছে। স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, সময়মতো চারা রোপণ না হলে ফলন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই খরচ বাড়লেও স্যালো মেশিন চালিয়ে রোপণে নামতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

একজন কৃষক বলেন, এক বিঘা জমি তৈরি করতে এখন গড়ে ১,৫০০ থেকে ২,০০০ টাকা খরচ হচ্ছে, যা আগের তুলনায় অনেক বেশি। শ্রমিক মিলছে না, তাই অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে নেমেছেন জমিতে। তাদের মতে, বৃষ্টির ঘাটতিতে স্যালো মেশিনের ওপর নির্ভরতা বেড়েছে। এতে উৎপাদন খরচ যেমন বেড়েছে, তেমনি লাভের আশাও কমেছে। এছাড়াও কৃষকরা জানান, বাজারে বর্তমানে টিএসপি সার মিলছে না, ফলে রোপণ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি আমন মৌসুমে জেলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৮৮ হাজার টন চাল। ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মাজেদুল ইসলাম বলেন, গত বছর জুন-জুলাইয়ে বৃষ্টিপাত হয়েছিল প্রায় ৩০০ মিলিমিটার। এ বছর এ পর্যন্ত মাত্র ২০০ মিলিমিটার হয়েছে। তারপরও কৃষকরা থেমে নেই, কারণ আমনের সফলতার ওপরই পরবর্তী ফসল নির্ভর করে।

তিনি আরও জানান, টিএসপি সারে সংকট থাকলেও এর বিকল্প ডিএপি রয়েছে। কৃষকদের সরকারি অনুমোদিত ডিলারদের কাছ থেকে সার নিতে হবে। কেউ নিয়মের বাইরে গিয়ে দাম বেশি নিলে তার ডিলারশিপ বাতিল করা হবে।

তিনি বলেন, বেশিরভাগ কৃষক ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক। তারা সাধারণত খুচরা বিক্রেতার কাছ থেকে বাকিতে সার নেন। এখানেই মূল সংকট দেখা দিচ্ছে। সরকারিভাবে বরান্দ বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় জেলার ১,৪৩৯টি সেচ পাম্প চালু রয়েছে। অনেকে আগেই সেচ কার্ডে রিচার্জ করে প্রস্তুতি নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত জেলায় মোট ৯৬ হাজার ৭৪৪ হেক্টর জমিতে আমণের চারা রোপণ সম্পন্ন হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৭১ শতাংশ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত