ঢাকা শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ঈশ্বরগঞ্জে বিদ্যালয়ের চারপাশ পানিতে থৈ-থৈ

ঈশ্বরগঞ্জে বিদ্যালয়ের চারপাশ পানিতে থৈ-থৈ

চলতি বর্ষা মৌসুমে টানা বৃষ্টির কারণে ডুবে গেছে ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় ১৩৪নং মগটুলা তরপপাছাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ। যেখানে শিশুদের খেলাধুলার কোলাহল থাকার কথা, সেই স্কুল মাঠ আজ যেন বিস্তীর্ণ জলাধার। দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টি হওয়ায় ফলে বিদ্যালয় সংলগ্ন জলাশয়ের পানি বেড়ে গিয়ে মাঠে ঢুকে পড়েছে। এতে স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাসে যাতায়াত ও স্কুল প্রাঙ্গণে চলাচল চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। শ্রেণিকক্ষ গুলোতে চলছে পাঠদান, তবে মাঠের এমন চিত্রে শিক্ষার্থীরা যেন বন্দি জীবনযাপন করছে। সরেজমিন দেখা গেছে, জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষার্থীদের শরীরচর্চা, সমাবেশ, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন ও খেলাধুলা ব্যাহত হচ্ছে। এমনকি শ্রেণিকক্ষ ছেড়ে মাঠে নামারও উপায় নেই। অনেক অভিভাবক ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠাতেও ভয় পাচ্ছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি এবং মানসিক বিকাশেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন অভিভাবকরা। গত সোমবার সরেজমিনে উপজেলার দেখা যায় বৃষ্টির পানিতে স্কুল মাঠসহ স্কুলে প্রবেশের রাস্তাটি পানিতে তলিয়ে গিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীরা হাঁটুপানি ভেঙে স্কুলে প্রবেশ করছে। পোহাতে হচ্ছে তাদের দুর্ভোগ।

এই বিদ্যালয়টিতে মোট ১৩৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। পানির কারণে অনেক শিশু শিক্ষার্থী বিদ্যালয় আসছে না। বর্তমানে ৪৫ শিক্ষার্থী রয়েছে। এছাড়াও বিদ্যালয়টিতে মোট শিক্ষক সংখ্যা ছয়জন, উপস্থিত সংখ্যা চারজন। প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকও অসুস্থ জনিত কারণে ১ মাস যাবত ছুটিতে আছে।

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. হাছিবুল বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই আমাদের স্কুল মাঠে হাঁটু সমান পানি হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। গত বৃহস্পতিবার স্কুলে ঢুকার সময় আমার পা পিছলে গিয়ে পানিতে পড়ে যাই। তাতে আমার বই-খাতা পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। পানির কারণে অনেকে স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। এছাড়াও বিদ্যালয়ে শিক্ষকসংকট হওয়ার ফলে ঠিকমতো ক্লাস হয় না। বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র হাছিবুলের বাবা জামাল উদ্দিন জানান, আমার ছেলেকে স্কুলে পাঠিয়ে আমাকে সবসময় দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়, কখন যে পানিতে পড়ে যায় কে জানে। আমার মতো অনেকেই এই চিন্তায় থাকে। আমরা অভিভাবকরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দ্রুত মাঠ ভরাট করার দাবি জানাচ্ছি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত মো. আবুবকর সিদ্দিক জানান, পানির কারণে শিক্ষার্থী নিয়মিত স্কুলে আসছে না। স্কুলে প্রবেশ পথে ঢুকলে এবং বের হলেই পানিতে নামতে হয়। অনেক বাচ্চারা পা পিছলে বই-খাতা নিয়ে পানিতে পড়ে গিয়েছে। যার কারণে স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিত কমে গেছে। জলাবদ্ধতা নিরশনের বিষয়ে পূর্বের শিক্ষা অফিসার মহোদয়কে জানিয়েছি। তিনি ব্যবস্থা নিবেন বলে আশ্বস্ত করেছিলেন। ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ আহমেদ জানান, স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিষয়টি আমাকে অবগত করেন নাই। আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। দ্রুতই পরিদর্শনে যাব। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত