কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট দিন দিন প্রকট হয়ে উঠছে। উপজেলায় প্রায় দুই লাখ মানুষের বসবাস থাকলেও তাদের জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। হাসপাতালটি ৫০ শয্যার হলেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও পর্যাপ্ত সরঞ্জামের অভাবে উন্নত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকাবাসী। তাই হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট দূরীকরণ ও প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিতকরণে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোরালো দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দুইজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম। ভৌগোলিক দিক দিয়ে এ হাসপাতালটি ময়মনসিংহের পাগলা থানার পাঁচভাগ ইউনিয়ন, নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গিরপুর ইউনিয়ন ও জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া এ তিন অঞ্চল ছাড়াও হোসেনপুর উপজেলার প্রাথমিক চিকিৎসার একমাত্র ভরসা। স্বাস্থ্যসেবা প্রত্যাশীদের প্রতি অবজ্ঞা ও অবহেলা শিকার এ অঞ্চলের দরিদ্র রোগীরা। সরেজমিন দেখা যায়, হাপাতালে রোগীর দীর্ঘ সারি। এ সময় একটি কক্ষে ডা. আল নুর আকাশ রোগী দেখছেন। তিনি একাই শিশু নারী-পুরুষ, বয়োবৃদ্ধ সবধরনের রোগী দেখছেন।
এ সময় গোবিন্দপুর ইউনিয়নের গণমানপুরুরা গ্রামের রুপালী আক্তার তার ৬ মাস বয়সি রওজা মনিকে নিয়ে লাইনে অপেক্ষা করছেন। এ রকম আড়াইবাড়িয়া ইউনিয়নের কাওনা গ্রামের সুমা আক্তার তার তিন বছর বয়সি তুহার মতো আব্দুর রহমান আঠারো মাস বয়সি, সত্তর ঊর্ধ্ব আব্দুল হামিদ এর মতো শতাধিক অসহায় রোগী দাঁড়িয়ে লাইনে প্রহর গুণছেন চিকিৎসার জন্য। হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (উইএইচএফপিও) ডা. তানভীর হাসান জিকু জানান, ৫০ শয্যার এ হাসপাতালে ২৮ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও এখন দুইজন মেডিকেল অফিসার রয়েছেন। প্রতিদিন৫০০ থেকে ৬০০ জন রোগীর চিকিৎসাসেবা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। এ সংকট নিরসনে ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক বরাবর একাধিক চিঠি দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, উপজেলায় নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসক থাকতে চায় না। যে জন্য এ সংকট দিন দিন বেড়েই চলেছে।
এ কর্মকর্তা আরও জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেএ আমি নিজে প্রতিদিন রোগী দেখি যাতে কেউ সেবা থেকে বঞ্চিত না হয়। আমাদের এখানে কিছু আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকলেও অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত জনবলের অভাবে সেগুলো ব্যবহার করা যাচ্ছে না। আমরা সরকারের সরবরাহ অনুযায়ী সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি রোগীদের প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করতে।
