ঢাকা শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

কমলনগরে অনুপযোগী সড়কে ভোগান্তি

কমলনগরে অনুপযোগী সড়কে ভোগান্তি

সংস্কার না হওয়ায় লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরফলকন ইউনিয়নের নাজির সড়কটি বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। দীর্ঘদিন আগে সলিং করা এই সড়কটি প্রকৃতিক দুর্যোগ ও মেঘনার জোয়ারের পানির চাপে নানা জায়গায় ভেঙে এখন চলাচলের অযোগ্য হয়ে গেছে। জোয়ারে ইটের সলিং নষ্ট হওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় খানাখন্দের। এতে কয়েক হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পড়ছেন। বিশেষভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী, গর্ভবতী নারী ও অসুস্থ রোগীরা। তাই অবিলম্বে সড়কটি পুনর্নির্মাণ ও সংযোগ পুনঃস্থাপনের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

সরেজমিন জানা যায়, চরফলকন ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নাজির সড়কটি দিয়ে মাওলানাপাড়া, পলোয়ানপাড়া ও হাজি ইসমাইল পাড়াসহ আশপাশের অনেক সমাজের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করেন। বিশেষ করে এই সড়কে অবস্থিত তাবলিগ জামাতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মারকাজ মসজিদে দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য মুসল্লি আসা-যাওয়া করেন। কিন্তু বর্তমানে সড়কটির এ বেহাল দশায় যানবাহনসহ মানুষের চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা জানান, চরফলকন মারকাজ মসজিদসংলগ্ন হাজিরহাট থেকে মাতাব্বর হাট পাকা রাস্তার মাথা হয়ে দক্ষিণ দিকে লুধুয়া রাস্তার মাথা পর্যন্ত নাজির সড়কের অবস্থান। ২০১৯-২০ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় প্রায় ১০০০ মিটারের এ সড়কটিতে সলিংয়ের কাজ করা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের পর এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। তবে কিছুদিন না যেতেই মেঘনার প্রবল জোয়ারে সড়কের বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। বর্তমানে ১০-১২টি স্থান ভেঙে সড়কটি প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাই, হাজার হাজার মানুষ সড়কটিতে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। জরুরি প্রয়োজনে গাড়ি, অসুস্থ রোগীর জন্য অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসও সচল রাখা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এমনকি রিকশাও চলতে চায় না সড়কে।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মতিন বলেন, এটা আমাদের এলাকার একমাত্র চলাচলের রাস্তা। স্কুল-কলেজ, বাজার, হাসপাতাল সব জায়গায় যাওয়া-আসা এই সড়কের ওপরে নির্ভর। কিন্তু এখন চলাফেরা করাটা খুব কষ্টকর। শিক্ষার্থী রাবেয়া সুলতানা বলেন, প্রতিদিন স্কুলে যেতে ভীষণ কষ্ট হয়। কাদা ও ভাঙাচোরা সড়কে হেঁটে স্কুলে পৌঁছাতে অনেক সময় লাগে। স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দা আবুল খায়ের ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ২০১৯ সালে সড়কটি সলিং করার পর আমরা ভেবেছিলাম দুর্ভোগ শেষ। কিন্তু এখন আগের চেয়েও খারাপ অবস্থা। জনপ্রতিনিধিদের বারবার বলেও কোনো লাভ হয়নি। তিনি বলেন, চিকিৎসাসহ জরুরি অবস্থায় এ সড়কে রিকশাও আসে না। হেঁটে কাদা ও পানি মাড়িয়ে যেতে হয় হাসপাতালে।

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান মান্না বলেন, এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক বছরের পর বছর ধরে এভাবে অবহেলিত থাকবে, এটা খুবই দুঃখজনক। এ অবস্থার কারণে এলাকার মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বিশেষ করে শিক্ষার্থী, রোগী ও গর্ভবতী নারীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে আছে। তাই সড়কটি দ্রুত সংস্কার বা পুনর্নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

জানতেচাইলে চরফলকন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বাঘা বলেন, সড়কের বেহাল দশার কারণে এলাকাবাসীর দুর্ভোগের বিষয়টি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যে এ সমস্যাটির সমাধান হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাহাত উজ জামান বলেন, সড়কটির বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হবে। সড়কটি গ্রামীণ সড়কের আওতাভুক্ত হলে চলতি অর্থবছরেই সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে। আর যদি এলজিইডির আইডিভুক্ত হয়, তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের বলা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত