
চাঁদপুর জেলার একমাত্র সুইমিং পুলটি বিগত ৭ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে করে নদী বেষ্টিত এ জেলার শত শত শিশু-কিশোরা সাঁতার শেখা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ সুইমিং পুলটি বন্ধ থাকায় খোলা আকাশের নীচে এখানে বৃষ্টির পানি জমে দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে আছে। এ সুইমিং পুলের জমে থাকা পানি বিষাক্ত আকারের পানির রূপ বহন করছে। বিশ্ব সাতারু ‘অরুন নন্দীর নামে নির্মিত সাতারু ‘অরুন নন্দী সুইমিং পুল’ নামে এই প্রতিষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০০৭ সালে। সংস্কারের জন্য গত ৭ বছর এটি বন্ধ রয়েছে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন খুব শিগগিরই সংস্কার কাজ শেষ করে চালু করা হবে সুইমিং পুলটি। সরেজমিন দেখা গেছে, শহরের আউটার স্টেডিয়ামে অবস্থিত জেলার একমাত্র সুইমিং পুলটির করুণ চিত্র। সন্ধ্যার পর এই স্থানে এখন মাদকসেবীদের আনাগোনা দেখা যায়। স্থানীয়রা জানালেন বর্তমানে অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে ওই এলাকা।
স্থানীয়রা জানান, একসময় শিশু-কিশোরদের সাঁতার প্রশিক্ষণ ও প্রতিযোগিতায় মুখর থাকলেও এখন সেখানে জমেছে ধুলো-বালু আর জরাজীর্ণতার ছাপ। দীর্ঘদিন পানির মেশিন বিকল থাকায় পুলে নেই স্বচ্ছ পানি। বৃষ্টির পানি জমে তৈরি হয়েছে নোংরা পরিবেশ। এছাড়া ভেঙে গেছে টাইলস এবং তৈরি হয়েছে ভুতুড়ে অবস্থা। পানি শুকিয়ে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে গেছে সুইমিং পুল। ক্ষুব্ধ ক্রীড়া সংগঠক ও খেলোয়াড়রা বলছেন, জাতীয় মানের সাঁতারু তৈরির যে স্বপ্ন নিয়ে এ প্রকল্পের যাত্রা শুরু হয়, তা বাস্তবায়ন হয়নি। বরং ব্যয়বহুল স্থাপনাটি আজ পরিত্যক্ত। এদিকে দুই বছর ধরে সংস্কারের কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং নতুন গ্যালারি নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের দিকে। তবে পুল, টাইলস ও অবকাঠামো এখনও অপরিষ্কার ও অচল। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের উদ্যোগে প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এই সুইমিং পুল নির্মিত হয়। সাড়ে চার লাখ গ্যালন পানি ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন এই স্থাপনাটি চালু করতে এখন নতুন পানির পাম্প, সরঞ্জাম এবং বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন।
স্টেডিয়াম এলাকার বাসিন্দা চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আরিয়ান বলেন, আউটার স্টেডিয়ামে প্রতিদিন খেলতে আসি কিন্তু কখনও সুইমিংপুল খোলা দেখিনি। এখানে চারপাশ অপরিচ্ছন্ন। নিজেও সাঁতার জানিনা, তবে সুইমিং পুলটি যদি চালু হয় আমিও এখানে এসে সাঁতার শিখতে পারবো। আমাদের বন্ধুদের দাবি যাতে দ্রুত সুইমিং পুলটি চালু করে দেওয়া হয়। নবম শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী মানসুর আহমেদ বলেন, শহরেই আমার জন্ম। সুযোগ না পেয়ে আমি সাঁতার শেখা থেকে বঞ্চিত। এরকম আমার মতো অনেক শিশু-কিশোর সাঁতার জানে না। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এটি সংস্কার কাজ শেষ করলে আমাদের জন্য ভালো হবে। বৃষ্টির পানি জমে আছে সুইমিং পুলেস্থানীয় বাসিন্দা বিল্লাল জানান, সুইমিং পুলটি এখানে থেকেও না থাকার মতোই আছে।