
বান্দরবানের মারমা বাজারে অস্থায়ী কাঁচাপণ্য বিক্রেতাদের কাছ থেকে অবৈধ টোল-ট্যাক্স আদায় বন্ধের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। এ বিষয়ে গণস্বাক্ষরযুক্ত স্মারকলিপি বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাইয়ের নিকট জমা দেওয়া হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বরাবর এই স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, বান্দরবান পৌরসভার ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত মারমা বাজার এলাকায় পাহাড়ি হতদরিদ্র মানুষ, বিশেষ করে নারীরা, দীর্ঘদিন ধরে জুমচাষে উৎপাদিত পণ্য ও শাকসবজি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
এলাকাবাসীর দাবি, মারমা বাজার নামে পরিচিত হলেও এটি মূলত বান্দরবান বাজার ফান্ডের আওতার বাইরে এবং কোনো তালিকাভুক্ত হাট বা বাজার নয়। ফলে বাজার ফান্ড আইনের অধীনে এখান থেকে কোনো টোল-ট্যাক্স আদায় করার সুযোগ নাই। তবুও দীর্ঘ দেড় দশক ধরে এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী মহল অবৈধভাবে টোল-ট্যাক্স আদায় করছে।
তারা বলেন, ১৯০০ সালের শাসনবিধিতে জুমিয়াদের কৃষিপণ্যের ওপর কর, টোল-ট্যাক্স নিষিদ্ধ রাখা হয়েছে। এমনকি বাংলাদেশের বর্তমান রাজস্ব আদায় বিধিতেও আদিবাসীদের কৃষিপণ্য টোলমুক্ত রাখা হয়েছে। কিন্তু এসব আইনি বিধান উপেক্ষা করে অবৈধভাবে টোল আদায় করা হচ্ছে। আবেদনে ডা. মং উষাথোয়াই, কেএস মংসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ও বহুসংখ্যক স্থানীয় বাসিন্দা স্বাক্ষর করেছেন। তারা অবিলম্বে অবৈধ টোল-ট্যাক্স আদায় বন্ধে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কেএস মং বলেন, আমরা জন্মলগ্ন থেকে দেখে আসছি এই বাজারে জুম চাষিরা, দূর-দূরান্ত থেকে নারীরা জুমের উৎপাদিত পণ্য রাস্তার দুপাশে বসে বিক্রি করে আসছে। অন্যদিকে ১৯০০ সালের শাসনবিধিতে লিখা আছে জুমিয়াদের কৃষিপণ্যের উপর সব প্রকার কর, টোল-ট্যাক্স বন্ধ রাখা এবং বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব কর আদায় বিধিতেও আদিবাসীদের জন্য কর আদায় আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। পরিতাপের বিষয় হলো, বান্দরবান বাজারের টোল-ট্যাক্স আদায়ের ইজারা দেখিয়ে এই মারমা বাজার হতে অবৈধ টোল-ট্যাক্স আদায় করার বিষয়টি বাজার ফান্ড কর্তৃপক্ষ অবহিত থাকলেও রহস্যজনক কারণে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পদক্ষেপ নেয়নি।