ঢাকা শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ব্রিজ নির্মাণ না করেই নিরুদ্দেশ ঠিকাদার, খালে নৌ চলাচল বন্ধ

ব্রিজ নির্মাণ না করেই নিরুদ্দেশ ঠিকাদার, খালে নৌ চলাচল বন্ধ

কাউখালীর জয়কুল খালের ব্রিজ নির্মাণের নামে বছর ধরে খালে নৌ চলাচল বন্ধ করে ব্রিজ নির্মাণ কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরে কাজ ফেলে রেখে পালিয়েছে ঠিকাদার। যার ফলে জয়কুল খাল দিয়ে নৌপথে সাধারণ মানুষের চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।

কাউখালী চিড়াপাড়া নদীর শাখা জয়কুল খাল। এই খালের দক্ষিণ পারে অবস্থিত দুস্থদের দেওয়া সরকারি আবাসন এবং জাপানি ব্রাক নামে পরিচিত আবাসন। যেখানে প্রায় দেড় শতাধিক ভূমিহীন পরিবার বসবাস করে। এই আবাসনের সামনের জয়কুল খাল পার হয়ে এখানকার ছোট ছোট শিশু ছাত্র-ছাত্রীরা ও সাধারণ মানুষকে জয়কুল প্রাথমিক বিদ্যালয়, কারিগরি বিদ্যালয়, কাউখালী কলেজ, কাউখালী মহিলা কলেজ, হাসপাতাল, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, ভূমি অফিস এবং বিভিন্ন হাট-বাজারে যেতে হয়। যে কারণে এই জন গুরুত্বপূর্ণ খালে ত্রাণ মন্ত্রণালয় পাকা ব্রিজ নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করে। জনগুরুত্ব বিবেচনা করে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গুরুত্বপূর্ণ দুটি ব্রিজ নির্মাণ করার লক্ষ্যে প্রায় আড়াই কোটি টাকা প্রকল্প মূল্য ধরে দরপত্র বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মঠবাড়িয়া উপজেলার আলো এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী জসিম উদ্দিনকে কার্যাদেশ প্রদান করেন। একই প্যাকেজে অন্য ব্রিজটি শিয়ালকাঠি ইউনিয়নের জোলাগাতির সাউদের খালের ওপর নির্মাণ কাজ চলমান। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিজে কাজ না করে নেছারাবাদ উপজেলার এক আওয়ামী লীগ নেতার মাধ্যমে ২০২৪ সালে পাকা গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ওই নেতা কাজ করতে এসে প্রথমে খাল বন্ধ করে দেন এবং সামান্য কাজ করে ব্রিজের কাজ শেষ না করেই পালিয়ে যান।

যে কারণে সারা বছর ওই খালের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ ও পারাপারের জন্য ব্রিজ না থাকায় চরম ভোগান্তিতে এলাকাবাসী। যে কারণে কৃষকরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে। আমন ফসলি জমিতে ধানের বীজ পরিবহনে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের।

নৌ পথে চিকিৎসার জন্য যাতায়েত, কৃষকের উৎপাদিত কৃষি ফসল, ফলমূল, শাক, পাতা অন্যান্য মালামাল নৌ পথে অল্প খরচে হাটে বাজারে কিংবা শহর বন্দরে পরিবহন করতে পারেন না। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ওই এলাকার কৃষক ও সাধারণ মানুষ।

অন্যদিকে ব্রিজ নির্মাণের স্থান থেকে খালের এপার ওপার পারাপারের জন্য স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী, শিশু-বৃদ্ধ, কৃষক-শ্রমিক সবাই ব্রিজের অভাবে সড়ক পথে চলাচলে চরম ভোগান্তির কারণে অনেকেই আবাসন ছেড়ে চলে যাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা আবুল বাশার বলেন খাল বন্ধ করে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় পাশ থেকে বিকল্প খালের তৈরি হয়েছে যা এলাকাবাসীর জন্য চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি করছে। আবাসনের বাসিন্দা জয়কুল স্কুল ছাত্র মেহেদী হাসান ও কাঠালিয়া স্কুল ছাত্রী লুবনা জানান ব্রিজ না থাকার কারণে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না। যে কারণে অনেকেই আবাসন ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মফিজুর রহমান বলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত কাজ সমাপ্ত করার জন্য ৫ দফায় চিঠি প্রদান করা হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বজল মোল্লা বলেন দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। জনদুর্ভোগ কমাতে আমরা সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করব।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত