
এক রাতেই পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের উদয়নগর বিজিবির একটি বিওপির দুই-তৃতীয়াংশ (বর্ডার আউট পোস্ট)। অবশিষ্ট অংশও কয়েক দিনের মধ্যে ভেঙে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিজিবি কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় জনগণ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চিলমারী ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার আতারপাড়া এলাকার উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে গত বুধবার রাতের ভয়াবহ ভাঙনে উদয়নগর বিজিবি ক্যাম্পসহ ঘরবাড়ি ও কিছু বিস্তীর্ণ আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বাড়ি ও জমি হারিয়ে অনেকেই নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। গত কয়েক দিনে শত শত বিঘা জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। হুমকির মুখে পড়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ আতারপাড়া, বাংলাবাজারসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম।
কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব মুর্শেদ রহমান বলেন, ভাঙনের আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল। কয়েক দিন আগে সেখান থেকে বিজিবির সব সদস্য ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাশের চর চিলমারী বিওপিতে সরিয়ে নেওয়া হয়। তাই বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি। চর চিলমারী বিওপি থেকেই উদয়নগর এলাকায় টহল কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা বলছেন, তিন মাস আগের পর্যবেক্ষণে পদ্মা-গড়াই নদীর ১৭টি স্থানে ভাঙনের ঝুঁকি আছে বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল। এ বছর পানি বাড়ার সঙ্গে সেসব এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। বর্তমানে পানি কমছে আর এতে ভাঙন আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে।
ভাঙনকবলিত এলাকার মধ্যে দৌলতপুরের উদয়নগর বিওপি ছিল অন্যতম। সেখানে জিওব্যাগ ফেলে রক্ষার চেষ্টা করা হয়। তবে ভাঙনের তীব্রতায় তা কাজে আসেনি। পাউবোর কুষ্টিয়া কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, সকালে উদয়নগর বিওপিসহ ভাঙন এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি দেখা হয়েছে। পানি কমায় ভাঙন তীব্র হচ্ছে। তিনি বলেন, ভাঙনের আশঙ্কায় শুকনা মৌসুমে সেখানে জিওব্যাগ ফেলে বিওপিটি রক্ষার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন বলেন, নদীভাঙন রোধ করতে সব ধরনের চেষ্টা করা হবে। স্থায়ী ও অস্থায়ী দুই ধরনের পদক্ষেপ নিতে প্রস্তাবনা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।