
দূর থেকে প্রথম দেখায় এটি কোনো বড় ডোবা মনে হলেও, এটি আসলে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার একমাত্র খেলার মাঠ দুর্গরাম পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ। প্রতি বছর বর্ষা এলেই মাঠটি জলাবদ্ধতায় তলিয়ে যায়। সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটু পর্যন্ত পানি জমে থাকে, যা খেলার মাঠকে দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার অনুপযোগী করে রেখেছে। এর ফলে খেলাধুলার সুযোগ হারাচ্ছে হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও স্থানীয় ক্রীড়ামোদী।
সরেজমিনে দেখা যায়, মাঠটির পশ্চিমাংশে দক্ষিণ পাশে হাই স্কুল উত্তর অংশে পুরনো সিনেমা হল ছাত্রাবাস এবং মাঠটির উত্তরাংশে মডেল প্রাইমারি স্কুল দক্ষিণ দক্ষিণাংশে বেড়িবাঁধ পূর্ব পাশে সড়ক ও জনপদ বিভাগের রাস্তা থাকলেও পানি নিষ্কাশনের কোনো উপযুক্ত ব্যবস্থা নেই। অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে বৃষ্টির পানি ঠিকমতো বের হতে পারে না এবং পুরো মাঠ অচল হয়ে পড়ে। এটি শুধু খেলার সুযোগ কমাচ্ছে না, বরং জনস্বাস্থ্যের জন্যও বড় ঝুঁকি তৈরি করছে।
মাঠের পাশের দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত সিনেমা হল ও ছাত্রাবাসে সারা বছর ময়লা-আবর্জনা জমে থাকে। বর্ষায় সেই নোংরা পানি মাঠে মিশে দুর্গন্ধ ছড়ায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই জমে থাকা নোংরা পানি এখন এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্রে পরিণত হচ্ছে, যা এলাকায় ডেঙ্গু সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। এক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রতিবছর একই অবস্থা। শিশুরা খেলাধুলা করতে না পারায় তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ময়নাল হোসেন সরকার জানান, ‘কয়েক বছর আগে মাঠের পূর্বপাশে কিছু মাটি ফেলা হয়েছিল, তবে অন্য অংশে পানি জমে। আমি বিস্তারিত জেনে সমাধানের চেষ্টা করব।’
মুরাদনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী তুফরিজ এটন জানান, শিশু-কিশোরদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা অপরিহার্য। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে মাঠের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা করব।
মুরাদনগর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আব্দুর রহমান বলেন, মাঠটির সমস্যা আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। যেহেতু মাঠের পাশে উঁচু সড়ক রয়েছে, যা সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতায়, তাই আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। দ্রুত ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত করার মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা আশা করছে, কর্তৃপক্ষের দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপে মুরাদনগরের এই গুরুত্বপূর্ণ খেলার মাঠটি আবারও প্রাণ ফিরে পাবে এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি কমে আসবে।