ঢাকা শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ফেনীতে বেড়েছে মণ্ডপের সংখ্যা প্রতিটিতে থাকছে সিসিটিভি ক্যামেরা

ফেনীতে বেড়েছে মণ্ডপের সংখ্যা প্রতিটিতে থাকছে সিসিটিভি ক্যামেরা

আর মাত্র কয়েকদিন পরই শুরু হচ্ছে দুর্গাপূজা। হিন্দুধর্মালম্বীদের সর্ববৃহৎ এই ধর্মীয় উৎসব ঘিরে ফেনীতে চলছে নানা প্রস্তুতি। ব্যস্ত সময় পার করছে প্রতিমার কারিগররা।

মণ্ডপে মণ্ডপে যথাসময়ে প্রতিমা পৌঁছে দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা। ছোট বড় প্রায় সব মণ্ডপেই চলছে সাজ সজ্জাসহ নানা মেরামতের কাজ। ফেনীতে এবার নতুনভাবে ৪টিসহ মোট ১৫০টি মন্দিরে পূজার প্রস্তুতি চলছে। পূজা ঘিরে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও রয়েছে নানা প্রস্তুতি। এরইমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে হিন্দু কমিউনিটির কর্তাব্যক্তি, রাজনৈতিক নেতাসহ বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময় করে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।

ফেনী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, গত বছর ফেনীতে ১৪৭টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এবার মণ্ডপ বেড়ে ১৫০ এ উন্নিত হয়েছে। ফেনী পৌরসভার সুলতানপুরে ও ফেনী সদর উপজেলার কালীদহ ইউনিয়নের পশ্চিম ছিলোনীয়া, চেওরিয়া ও ছনুয়া বাইল্লা বাড়িতে নতুনভাবে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। তবে ফেনী সদর উপজেলার কাজীরবাগ শীল বাড়িতে এবং দাগনভূঞা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের লতিফপুরে একটি মন্দিরে এবার পূজার আয়োজন করা হচ্ছে না। অন্যদিকে ফুলগাজী উপজেলার দরবারপুরে নতুনভাবে একটি মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এবার জেলায় ৫টি মণ্ডপে নতুন ভাবে পূজার আয়োজন এবং ২টি মণ্ডপে পূজার সংখ্যা কমেছে।

জানা যায়, এবার ফেনী সদর উপজেলায় ৬৩টি মণ্ডপে পূজার আয়োজন চলছে। একইভাবে সোনাগাজীতে ২৩টি, দাগনভূঞায় ১৮টি, ছাগলনাইয়ায় ৫টি, ফুলগাজীতে ৩৪টি ও পরশুরামে ৭টি মণ্ডপে পূজার আয়োজন রয়েছে।

প্রতিমার কারিগর উজ্জ্বল দাস জানায়, প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ত শিল্পীরা। কঁদা মাটি দিয়ে প্রতিমার গহনার নকশায় চলছে ফিনিশিংয়ের কাজ। এরপর শুরু হবে রং করার পালা। পাশাপাশি প্রতিটি মন্দিরে সাজসজ্জার কাজও চলছে। ফেনী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাস্টার হিরালাল চক্রবর্তী বলেন, আমরা ফেনীতে পূজা উদযাপনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা শঙ্কা দেখছি না।

প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। রাজনৈতিক নেতারাও আমাদের এ উৎসবকে সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে আন্তরিক রয়েছেন। হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের পরিচালক ঐক্যফ্রন্টের নেতা অ্যাডভোকেট পার্থ পাল চৌধুরী বলেন, এটি আমাদের বড় ধর্মীয় উৎসব। এ উৎসবটি সুন্দরভাবে আয়োজন করতে রাষ্ট্র থেকে শুরু করে সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

এরইমধ্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে ও বিএনপিসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে অনুদান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আমরা আশাকরি কোনো ঝামেলা ছাড়াই এবারও নির্ভিঘেœ আমরা ধর্মীয় উৎসবটি পালন করতে পারব। ফেনীর পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, অপরাধীদের গতিবিধি পর্যবেক্ষনের জন্য প্রতিটি মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা বসানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও মণ্ডপে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখা হবে। পুলিশি টহল জোরদারের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সক্রিয় থাকবে। এরইমধ্যে মন্দিরের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময় করে সেই আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, ফেনীতে দুর্গাপূজাকে উৎসবমুখর ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে জেলার রাজনৈতিক নেতাসহ হিন্দু সম্প্রদারের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে।

প্রতিটি ইউনিয়নের পূজামণ্ডপ পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করা হচ্ছে। এছাড়াও মণ্ডপে যাতায়াতের সুবিধার জন্য আশপাশের রাস্তাঘাট জরুরি মেরামত করা হচ্ছে। মণ্ডপের শৃঙ্খলা রক্ষায় ৬-১০ জন পর্যন্ত আনসার সদস্য মোতায়েন করা হবে। জেলার ভারত সীমান্তবর্তী মণ্ডপগুলোতে বিজিবির টহল জোরদার থাকবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত