ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

এ মাসেই গণভোট দিন, তালবাহানা করবেন না

বললেন এটিএম আজহারুল ইসলাম
এ মাসেই গণভোট দিন, তালবাহানা করবেন না

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, আমরা সরকারকে বলছি এ মাসের মধ্যে গণভোট দিন। গণভোট নিয়ে তালবাহানা চলবে না। যারা জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের জুডিসিয়াল হত্যাকাণ্ড করে ভেবেছিল জামায়াতকে নিশ্চিতভাবে শেষ করে দিয়েছে। কিন্তু আজ জামায়াত আছে, বরং আগের তুলনায় হাজার গুণ বেশি জনপ্রিয় হয়েছে। কিন্তু যারা জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে, নেতাদের হত্যা করে শেষ করে দিতে চেয়েছিল, তারা আজ কোথায়? তিনি বলেন, তারা জানে না জুলুম নির্যাতন চালিয়ে কোনো আদর্শকে শেষ করা যায় না।

গতকাল বুধবার ফেনীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জেলা জামায়াত আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা আমির মুফতি আবদুল হান্নানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও ফেনী-২ আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ?ও ফেনী-৩ আসনে জামায়াতের প্রার্থী ডা. ফখরুদ্দিন মানিক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট এএস?এম কামাল উদ্দিন।

ফেনী জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আবদুর রহিমের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন- জেলা নায়েবে আমির অধ্যাপক আবু ইউসুফ, ফেনী সদর উপজেলা আমির মাওলানা নাদেরুজ্জামান, শ্রমিক নেতা ফারুক আহমেদ আযাদ, ছাত্র শিবিরের শহর সভাপতি ওমর ফারুক ও শহর জামায়াতের আমির ইঞ্জিনিয়ার নজরুল ইসলাম প্রমুখ।

জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেন, সব রাজনৈতিক দলের সম্মতিতে যে জুলাই সনদ স্বাক্ষর হয়েছে দেশের ইতিহাসে তা যুগান্তকারী ঘটনা। এটি বাস্তবায়িত হলে এর মাধ্যমে দেশের মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং হারানো ভোটের অধিকার ফিরে পাবে। ফলে আগের মতো দিনের ভোট রাতে হবে না, ব্যালট বাক্স ছিনতাই করার সুযোগ থাকবে না। এই জন্য জুলাই সনদকে আইনে পরিণত করতে হবে। এর সফল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জনগণের ম্যান্ডেট নিতে হবে। আগামীতে জনগণ যদি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব জামায়াতে ইসলামীকে দেয় তবে শোষণহীন, বৈষম্যহীন একটি মানবিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখা হবে। আমরা সমাজ ও রাষ্ট্রে আল্লাহর নির্দেশিত পথে সততার সঙ্গে জনগণের আমানত সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও ব্যবহার করব। তিনি আগামী নির্বাচনে দেশ ও সমাজে শান্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ইসলামী শক্তির পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে দাঁড়িপাল্লা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, অনেক দল আর নেতা দেখেছেন, এবার জামায়াতে ইসলামীকে নির্বাচিত করে আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিয়ে পরীক্ষা করুন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আপনারা জামায়াত প্রার্থীদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে সরকারি বরাদ্দের আমানত জনগণের কল্যাণের কাজেই শুধু ব্যবহার হবে।

তিনি বলেন, জুলাই সনদের আইনি ব্যক্তি ছাড়া জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন হবে জুলাই আন্দোলনের শহিদ ও জুলাই যোদ্ধাদের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। ফ্যাসিবাদি কাঠামো বহাল রেখে একটি যেনতেন নির্বাচন দেশের সমস্যা সমাধানের পথ নয় বলেও তিনি দাবি করেন। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষিত জাতীয় নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হতে হবে তবে তার আগে সরকারকে অবশ্যই সব দলের জন্য লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।

দেশের প্রচলিত নির্বাচন ব্যবস্থা জনগণের সত্যিকার প্রতিনিধিত্ব ও ক্ষমতার প্রয়োগ হয় না উল্লেখ করে তিনি বলেন আনুপাতিক হারে (পিআর পদ্ধতি) নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। জুলাই সনদে পিআর অন্তর্ভুক্ত করে সংসদের উভয় কক্ষে তা নিশ্চিত করতে হবে। জামায়াত নেতা বলেন, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে সব বৈষম্য দূর করবে ধর্ম বর্ণ দলমত ও নারীর সর্বোচ্চ অধিকারকে সমুন্নত করবে। সাম্য সামাজিক সুবিচার ও মানুষের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করবে। দেশের শিক্ষিত অশিক্ষিত দক্ষ ও অদক্ষ কর্মজীবী মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিবে। জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। তিনি আরও বলেন, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতিকে জাদুঘরে পাঠানো হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যে সিন্ডিকেটের মূলৎপাটন করা হবে। মধ্যস্বত্ব ভোগীদের দৌরাত্ম্য নির্মূল করা হবে।

তিনি বলেন, আমরা আমাদের প্রিয় জন্মভূমি ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এ বাংলাদেশে আল্লাহর আইন এবং সৎ লোকের শাসন কায়েম করার লড়াই করছি। যতদিন আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন কায়েম না হবে ততদিন আমাদের লড়াই চলতেই থাকবে ইনশাআল্লাহ। দুর্নীতি বন্ধ করতে পারলে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। তার জন্য সৎ খোদাভিরু ব্যাক্তিকে নির্বাচিত করতে হবে। এর আগে সকালে তিনি দাগনভূঞায় আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত