প্রিন্ট সংস্করণ
০০:০০, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
সংখ্যালঘুর বাড়িঘরের সামনেও দখলের চেষ্টা, মেয়রকে অভিযোগ দিয়েও মুক্তি না মেলাসহ নানা কারণে নাগরিকের অসন্তোষ। লেখকদের তুলে ধরার মতো ভালো কাজগুলো খোঁজে পেতে হবে কিন্তু বিএনপির মাঝে তা খুঁজে না পেয়ে চাঁদাবাজি-দখলবাজির ঘটনাগুলো লিখতে হচ্ছে। সেজন্য, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা চাঁদাবাজি-দখলবাজির অভিযোগে আলোচনায় এসেছে। দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিধি-নিষেধ না মেনে কিছু সংখ্যক পাতিনেতা দলের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজি-দখলবাজি করে গোটা বিএনপির জন্য অমঙ্গল বয়ে এনেছে।
ডুবিয়ে দিয়েছে পুরো দলটিকে, তা ডাকসু-জাকসুর নির্বাচনেই প্রতীয়মান হয়েছে। কারণ বিএনপি নামধারী এসব পাতিনেতা-কর্মীর চাঁদাবাজি-দখলবাজির কারণে বিএনপির নিজ দলের সমর্থিত লোকেরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ফলে জনগণ নির্ভলশীল দল হলেও বিএনপি সমর্থিত জনগণই বিএনপির বদলে অন্য দলকে ক্ষমতায় আনলে নিরাপদে বসবাসের পরিবেশ সৃষ্টি হবে মনে করছে। সেজন্য, দেশের প্রতিটি নাগরিক গণমাধ্যমে-সোশ্যাল মিডিয়ায়, পথেঘাটে-চায়ের দোকানে বসে ও বাড়িঘরে পরিবারের সদস্যদের ভোট দেওয়ার বিষয়ে সচেতন করে তুলছে। ফলে ডাকসু-জাকসুর নির্বাচনে শুধু শিবিরের ভোটে নয়, বিএনপিসহ সব দলের মানুষের পড়ুয়া ছেলে-মেয়েদের ভোটে শিবিরের নিরঙ্কুশ বিজয় হয়েছে। ডাকসুতে ছাত্র শিবিরের ভিপি প্রার্থী সাদিক কায়েম একাই ১৪,০৪২ বিপুল ভোটে বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন। আর ছাত্র দলের আবিদুল ইসলাম খান ৫৭০৮ অর্থাৎ অর্ধেকেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে ধরাশায়ী হয়েছেন। জাকসুর নির্বাচনেও শিবিরের বিশাল বিজয়, তবে শিক্ষার্থীরা ভিপি পদে শিবির প্রার্থীকে না চাইলেও বিএনপির উপর ভরসা করতে পারেনি সেজন্য, স্বতন্ত্র প্রার্থীকে ভোটে জিতিয়ে এনেছেন। জনগণের এ সচেতনতা ও পরিবর্তন এটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিএনপির জন্য অশনি সংক্ষেত মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল।
যেসব কারণে ভরাডুবি: জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকে ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগের ভয়ে পালিয়ে থাকা অযোগ্য লোকগুলো যেন ইন্দুরের গর্ত থেকে বেরিয়ে হঠাৎ উইপোকার পুন্দে পাকা গজালে লাফালাফি করে মরে, তারাও পতন বয়ে আনতে উইপোকার মতোই লাফালাফি শুরু করেছে। যেমন, চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহর রেলস্টেশন এলাকায় বিএনপির কর্মীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে গিয়ে দোকানপাটও ভাঙচুর করেছে, আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করলে জনদুর্ভোগও সৃষ্টি হয়েছে। ওই সময় তারা সন্ত্রাসীদের আস্তানা-আওয়ামী লীগের আস্তানা জ্বালিয়ে দাও পুড়িয়ে দাও স্লোগান দিলেও প্রকৃতপক্ষে তারা দখলকৃত একটি দোকানে টানানো বিএনপির নেতার ছবি-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলতে দেখা গেছে। সেজন্য প্রত্যক্ষদর্শীরা মনে করেন, আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ মাঠে-ময়দানে না থাকায় সুযোগে চাঁদাবাজির উদ্দেশ্যে এলাকা দখলের জন্য বিএনপিকে বিএনপিই কুপিয়েছে।
নগরীর পিলখানা: এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে সন্ত্রাস-নৈরাজ্য, চাঁদাবাজি-দখলবাজির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ কমিটি গঠন করে সভা-সমাবেশ করতে দেখা যায়।
নগরীর মোহাম্মদপুর এলাকা: মানুষের মুরশী একোয়ারকৃত জায়গা জবরদখলের চেষ্টা, এমনকি কবলামূলে মালিকানা জায়গাও বিএনপি নামধারী কিছু পাতিনেতা-কর্মী জবর দখল করতে চাইলে ঝগড়া-বিবাদের সৃষ্টি হয়। এ সময় তারা বিএনপি সমর্থিত লোকগুলোকে আওয়ামী লীগ বলে অপবাদে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন, চসিক ও সিডিএর লোকজনের মাধ্যমে দখল করার ভয়-ভিতিও দিয়েছেন। সে অভিযোগ নিয়ে অসহায় এক মহিলাকে সিটি মেয়রের সাক্ষাতের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা, মেয়রের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগের উপর অভিযোগ দেওয়া, কার্যালয়ে মেয়রের লোকজন ও পিএসকে অসহায় এ বৃদ্ধা মহিলা কান্নাকাটি করে বিএনপির এ কর্মীদের জুলুমণ্ডঅত্যাচারের বিষয়টা জানাতে দেখা গেছে। কিন্তু তারা এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে ও মেয়রের মাধ্যমে প্রতিকারের দৃশ্যমান ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। ওই সময় পুলিশ এলে ১/৬/২৫ সার্ভেয়ার দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করা জায়গাটি (এসআই নয়নকে) সরেজমিন দেখানো হলে ওইদিন রাত ৮টায় থানায় ওই মহিলার দলিলপত্র ও সার্ভেয়ারের দেওয়া কপি দেখে (এসআই ছালে) বলেন, ‘জায়গাটি মহিলার প্রাপ্য।’ পুলিশের ন্যায়নিষ্ঠতার বিষয়টিও মহিলা লিখিভাবে মেয়রের কার্যালয়ে জমা করেছেন, এ চাঁদাবাজ-দখলবাজদের থেকে মুক্তি পাওয়ার লক্ষ্যে।
নগরীর আসকার দিঘি এলাকা: সংখ্যালঘু নাগরিক থানা পুলিশের আশ্রয় নিয়ে কয়েক মাসের জন্য দখল কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে একদিন সিটি মেয়র ওই এলাকায় একটি অনুষ্ঠানে গেলে, সেখান থেকে বিএনপির নেতার অনুরোধে জায়গাটিতে মেয়রের উপস্থিতি। ...এরপর দেখা গেল আরেক পাশে দখল করা শুরু করেছে। সেজন্য, আবারও থানা পুলিশের আশ্রয়ে দখল কাজ বন্ধ করা হয়েছে। এরপর সংখ্যালঘু সুচতুর ওই বাড়িওয়ালা ঝুঁকি নিয়ে ওই দখলকৃত কাঠগুলো ভেঙে ফেলে দিয়েছে ও তার বাড়ির সামনের জায়গাটিতে দ্রুত বাড়ির চলাচলের রাস্তা করে নিয়ে রেহাই পেলেন।
লেখক : কবি ও সাংবাদিক, সহ-দপ্তর সম্পাদক চট্টগ্রাম রিপোর্টার্স ইউনিটি