ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

প্রান্তিক গবেষকের ব্যতিক্রমী সাফল্য

প্রান্তিক গবেষকের ব্যতিক্রমী সাফল্য

দেশের প্রান্তিক কৃষক ও তরুণ উদ্ভাবকরা বারবার প্রমাণ করছেন- প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা কর্ম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব এবং তারা এসব গবেষণার মাধ্যমে সাফল্যও পেয়েছেন। গতকাল প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেল- ঢ্যাঁড়শ গাছ থেকে পাটের মতো আঁশ উৎপাদন করেছেন কৃষক আবদুল মোতালিব। তিনি ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর শহরের সতিষা গ্রামের মৃত আবদুল মান্নানের (মুন্নাছ) ছেলে। মোতালিব একজন বর্গাচাষি। তার আবিষ্কার করা ঢ্যাঁড়শ গাছের আঁশ পাটের চেয়েও শক্ত-সুন্দর। এ আঁশ দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে উৎসুক মানুষ ভিড় করছেন তার বাড়িতে। এ আঁশের ব্যবহারে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার বিষয়ে আশাবাদী মোতালিব এবং তার প্রতিবেশীরা। কৃষিবিদরাও এ বিষয়ে আশাবাদী। এ আবিষ্কার প্রমাণ করে, গবেষণার সুযোগ ও পরামর্শ পেলে সাধারণ কৃষকও বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনে সক্ষম। প্রান্তিক গবেষক আবদুল মোতালিবকে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করা হলে, তিনি দেশকে আরও বড় কিছু উপহার দিতে সক্ষম বলে আমাদের বিশ্বাস।

কয়েক মাস আগে মানিকগঞ্জের এক তরুণ ইলেকট্রিশিয়ান জুলহাস মোল্লা নিজের মেধা, অধ্যবসায় ও সীমিত সম্পদে একটি উড়োজাহাজ তৈরি ও সফলভাবে উড্ডয়ন ঘটিয়ে দেখিয়েছেন। এসএসসি পাস করার পর অর্থাভাবে জুলহাস আর পড়তে পারেননি। পেশায় ইলেকট্রিশিয়ান জুলহাস বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন। অবসরে তিনি উড়োজাহাজ তৈরি করেছেন। জুলহাস মোল্লাও প্রমাণ করেছেন, ইচ্ছাশক্তি থাকলে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বড় সাফল্য অর্জন করা সম্ভব। জুলহাস মোল্লার মতো এমন ব্যতিক্রমী ও বড় সাফল্যের আরও অনেক দৃষ্টান্ত রয়েছে আমাদের দেশে। দুঃখজনক হলো- এমন সাফল্য অর্জনকারীদের জন্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কী ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায় না। রাষ্ট্রের দায়িত্ব, এমন গবেষকদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের অব্যাহত পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করা। দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের অনেক তরুণ প্রমাণ করেছেন- বড় কিছু করতে প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি অপরিহার্য নয়; দরকার অদম্য ইচ্ছাশক্তি, অধ্যবসায় ও সৃজনশীল চিন্তা। বর্তমান তরুণ প্রজন্ম যদি নিজেদের মধ্যে এ আত্মবিশ্বাস জাগাতে পারে, বাংলাদেশ হবে উদ্ভাবনের দেশ; তাহলে আমাদের দেশ অতি দ্রুত উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হতে পারবে। এখন দরকার রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সব মেধাবী গবেষককে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত