ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কেন থামছে না

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কেন থামছে না

অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরের বেশি সময় কেটে গেছে। তবু দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ হয়নি। মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ জানিয়েছে, গত ১৪ মাসে ৪০ জন মানুষ বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন। তাদের কেউ গুলিতে, কেউ নির্যাতনে মারা গেছেন। অনেককে পিটিয়ে মারা হয়েছে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে বিস্তারিত প্রতিবেন প্রকাশিত হয়েছে।

নাগরিকদের জীবন রক্ষা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কিন্তু যদি রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতেই মানুষ মারা যায়, তাহলে নাগরিকরা নিরাপত্তা পাবে কোথায়? অন্তর্বর্তী সরকারের অনেক উপদেষ্টা আগের সরকারের সময় বিচারবহির্ভূত হত্যার বিরুদ্ধে সরব ছিলেন। এখন তারা নিজেরাই ক্ষমতায়। কিন্তু বিচারবহির্ভূত হত্যার চিত্র বদলায়নি। র‌্যাব, পুলিশ বা যৌথ বাহিনীর নামে এখনও বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা ঘটছে। বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনায় বিচার হয় না, সত্য জানা যায় না।

আরেকটি ভয়ংকর দিক হচ্ছে- অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধারের ঘটনা। গত অক্টোবর মাসেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৬৬টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নদী, রাস্তা বা ঝোপঝাড় থেকে মিলেছে এসব লাশ । অনেকক্ষেত্রে তাদের পরিচয় জানা যায় না। কীভাবে তাদের মৃত্যু হল, এগুলো কি হত্যাকাণ্ড, হত্যাকাণ্ড হলে হত্যাকারী কে বা কারা কিছুই জানা যায় না। এমন পরিস্থিতি নাগরিকদের মনে ভয় ও অবিশ্বাস বাড়াচ্ছে। একই সময়ে কারাগারে মৃত্যুর ঘটনাও বেড়েছে। অনেকে অসুস্থ হয়ে মারা যাচ্ছেন বলে জানানো হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলো অভিযোগ করছে যে, এসব মৃত্যুর পেছনে নির্যাতন বা অবহেলা আছে।

রাজনৈতিক সহিংসতা, গণপিটুনি- সব মিলিয়ে নাগরিক জীবনে ভয় ছড়িয়ে পড়েছে। মানুষ এখন নিজের ঘরেও নিশ্চিন্তে থাকতে পারছে না। সরকার বদলালেও যদি অন্যায় বন্ধ না হয়, তাহলে মানুষ কাকে ভরসা করবে? রাষ্ট্র যদি সত্যিই মানবাধিকার রক্ষা করতে চায়, তাহলে প্রথমেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। গুম, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার প্রতিটি ঘটনার স্বচ্ছ তদন্ত হতে হবে। এসব ঘটনার ন্যায়বিচার করতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত