ঢাকা সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ভোজ্যতেল নিয়ে তুঘলকি

ভোজ্যতেল নিয়ে তুঘলকি

অজুহাত দেখিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে সীমাহীন টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ইতিহাস অনেক পুরোনো এ দেশে। মাঝেমধ্যেই অসাধু ব্যবসায়ীরা এই কারসাজি করে থাকে। এবার ভোজ্যতেল নিয়ে চলছে তুঘলকিকাণ্ড। সরকারকে কোনোরকম তোয়াক্কা না করে অনুমতি ছাড়াই উৎপাদন কোম্পানিগুলো ডিলার পর্যায়ে বেশি দামে সয়াবিন তেল সরবরাহ করছে। বাজার থেকে তেল তুলে নিয়ে কৃত্রিম সংকটও তৈরি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার খুচরা বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল লিটারে ৯ টাকা বাড়িয়ে ১৯৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাণিজ্য উপদেষ্টার কোনো হুঁশিয়ারিই কাজে আসেনি। এদিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসেছিলেন ব্যবসায়ীরা। বৈঠকে ৯ টাকার পরিবর্তে ৫ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। তবে দিনভর ৯ টাকা বাড়িয়ে বিক্রয় কার্য চলে। বৃহস্পতিবার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্যবসায়ীদের সাবধান করেছেন; কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

শুধু সয়াবিন তেল নয়, বাজারে পেঁয়াজের দামও অত্যন্ত চড়া। এখানেও চলছে কারসাজি। অর্থাৎ আমরা দেখছি, পেঁয়াজের ক্ষেত্রেও সিন্ডিকেটগুলো সক্রিয় হয়েছে। এমন একটা পরিস্থিতিতে কীভাবে স্বল্প ও সীমিত আয়ের পরিবারগুলো তাদের সংসার চালাবে, এটা একটি বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। তেল ও পেঁয়াজ আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের রন্ধন প্রক্রিয়ার অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। ফলে ব্যবসায়ীরা এই দুটি পণ্যকে আশ্রয় করে প্রচুর টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন একদিকে, অন্যদিকে তাদের কারসাজির প্রভাব পড়ছে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলোর ওপর। তারা প্রাত্যহিক জীবন চালাতে গলদঘর্ম হচ্ছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা যেহেতু একটি পুরোনো সমস্যা, এতদিনেও এর সমাধানে কার্যকর পন্থা উদ্ভাবন করা যায়নি, তাই এ বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে হবে। মনে হচ্ছে শুধু হুঁশিয়ারি, বাজার মনিটরিং ইত্যাদি দিয়ে কাজ হবে না। এমন কোনো উপায় বের করতে হবে, যাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা ইচ্ছা করলেও কারসাজি করে পণ্যের মূল্য বাড়াতে না পারে। সয়াবিন তেল ও পেঁয়াজ নিয়ে যে অনিয়ম চলছে, দ্রুতই তা দূর করতে হবে অবশ্যই।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত