হাইকোর্টের রায়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা নিয়োগ পুনর্বহালের দাবিতে শাহবাগে মহাসমাবেশ শেষে বাংলাদেশ সচিবালয়মুখী পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করে। আন্দোলনকারীরা সচিবালয় অভিমুখে যাওয়ার চেষ্টা করলে সেখানে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে উত্তেজনা পরিস্থিতি বিরাজ করে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ-জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ। গতকাল রোববার রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে জড়ো হন আন্দোলনকারীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে তারা মহাসমাবেশ শুরু করেছিলেন।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে অবস্থান নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। এর আগেও কয়েকবার আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর পুলিশ বল প্রয়োগ করে। ৯ ফেব্রুয়ারি পুলিশ জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ এবং লাঠিপেটা করে। ১৫ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিতে জলকামান ব্যবহার করা হয়। ১৬ ফেব্রুয়ারি আবারও জলকামান ব্যবহার করে। এরপরও শিক্ষকরা তাদের অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যান। আন্দোলনকারীরা বলছেন, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ ২০২৩ সালের বিজ্ঞপ্তি তিনটি ধাপে দেয়া হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ কার্যক্রম এবং অপেক্ষমাণ তালিকা থেকেও নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ নিয়ে তালবাহানা চলছে। একই সঙ্গে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হলেও প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের প্রার্থীদের নিয়োগ শেষে যোগদান করানো হয়েছে। তৃতীয় ধাপে এসে নতুন নিয়মের দোহাই দিয়ে আমাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। রাজধানীর শাহবাগে সড়কে অবস্থান নেয়ায় সায়েন্স ল্যাব হয়ে মৎস্য ভবনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জনভোগান্তি এড়াতে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তাদের বাধা দেয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, ৬ ফেব্রুয়ারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ বাতিল করেন হাইকোর্ট। মেধার ভিত্তিতে পুনরায় নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। তারও আগে গত বছরের ১৯ নভেম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগের কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। এরপর গত ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক পদে সুপারিশ পাওয়া নিয়োগ প্রত্যাশীরা।