কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় নিহতের ঘটনায় ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে। ভারত এই হামলার নেপথ্যে পাকিস্তান দায়ী করে দেশটির বিরুদ্ধে একগুচ্ছ কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। পাকিস্তানও ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে। সেই সঙ্গে টানা ১০ দিন ধরে কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর দেশ দুইটির বাহিনীর মধ্যে গুলি বিনিময় হয়েছে। এমন আবহে ভারতকে এবার কড়া বার্তা দিলেন রাশিয়ায় নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ খালিদ জামালি। তিনি বলেছেন, ভারত যদি পাকিস্তানে হামলা চালায় বা পাকিস্তানে পানি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় তাহলে ইসলামাবাদ পারমাণবিক অস্ত্রসহ পুরো সামরিক অস্ত্রাগার ব্যবহার করতে পারে।
গত শনিবার রাশিয়ান ব্রডকাস্টার আরটি’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে খালিদ জামালি বলেছেন, ইসলামাবাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য আছে যে, ভারত পাকিস্তান ভূখণ্ডে সামরিক হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে। মস্কোতে নিযুক্ত পাকিস্তানের শীর্ষ এই কূটনীতিবিদ দাবি করেছেন যে ফাঁস হওয়া কিছু নথিতে উল্লেখ আছে পাকিস্তানের কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চলে হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই আমাদের ধারণা এটি (হামলা) ঘটতে যাচ্ছে এবং এটি আসন্ন। কাশ্মীরে হামলার কারণে ভারত যে সিন্ধু নদের পানি বণ্টন চুক্তি করেছে- একে যুদ্ধের সামিল হিসেবে উল্লেখ করেছেন পাকিস্তানের এই কর্মকর্তা।
খালিদ জামালি সতর্ক করে বলেছেন, নিমাঞ্চলের নদীর পানি দখল, প্রবাহ বন্ধ বা ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার যেকোনো প্রচেষ্টা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সামিল হবে। এবং এর জবাব পূর্ণ শক্তি দিয়ে দেওয়া হবে। এর আগে গত শুক্রবার পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জিও নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, চুক্তি লঙ্ঘন করে ভারত সিন্দু নদের ওপর কোনও অবকাঠামো নির্মাণ করলে তাতে হামলা চালাবে পাকিস্তান।
পেহেলগামে হামলার পর ভারত পাকিস্তানের ওপর একের পর এক কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ভারত জানিয়েছে, পাকিস্তান থেকে উৎপন্ন বা সে দেশ হয়ে আসা সব পণ্যের আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে স্থগিত করা হয়েছে পাকিস্তান থেকে আগত ডাক ও পার্সেল বিনিময়। ভারতের পররাষ্ট্র বাণিজ্য অধিদপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, নিষেধাজ্ঞাটি তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হচ্ছে। এতে বলা হয়, ‘জাতীয় নিরাপত্তা এবং জনস্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
ভারতের এসব পদক্ষেপের জবাবে পাকিস্তানও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। দেশটি সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ করা, ভারতীয় উড়োজাহাজের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়া এবং ভারতীয় কূটনীতিকদের বহিষ্কারের মতো পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। পাকিস্তানি পতাকাবাহী জাহাজগুলো ভারতীয় বন্দর ব্যবহার নিষেধাজ্ঞার পর এবার পালটা পদক্ষেপ নিল পাকিস্তান। দেশটি জানিয়েছে, ভারতীয় জাহাজগুলো পাকিস্তানি বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে না। শনিবার পাকিস্তান পালটা এই পদক্ষের কথা ঘোষণা দিয়েছে। সাম্প্রতিক কাশ্মীর হামলার পর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এটি একটি প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ। খবর দ্য ডনের।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের সামুদ্রিক সার্বভৌমত্ব, অর্থনৈতিক স্বার্থ এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে পাকিস্তান নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো অবিলম্বে কার্যকর করছে, ভারতীয় পতাকাবাহী কোনো জাহাজ পাকিস্তানি বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে না, পাকিস্তানি পতাকাবাহী কোনো জাহাজ ভারতীয় বন্দর সফর করবে না এবং বিশেষ কোনো ছাড় প্রয়োজন হলে তা পৃথকভাবে পর্যালোচনা করা হবে। এর আগে শনিবার প্রকাশিত এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তান থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সব ধরনের আমদানি নিষিদ্ধ করেছে ভারত সরকার। এছাড়া ভারতের বন্দরে পাকিস্তানি কোনো জাহাজ ভিড়তে পারবে না বলেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এদিন ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তান থেকে উৎপন্ন বা রপ্তানিকৃত সমস্ত পণ্যের সরাসরি বা পরোক্ষ আমদানি বা ট্রানজিট, তা মুক্তভাবে আমদানিযোগ্য হোক বা অন্যথায় অনুমোদিত হোক- জাতীয় নিরাপত্তা এবং জননীতির স্বার্থে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করা হলো। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একমাত্র বাণিজ্যপথ ওয়াঘা-আটারি ক্রসিং পহেলগাঁও হামলার পর বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপরও পাকিস্তান থেকে পরোক্ষ আমদানি চালু ছিল।
পাকিস্তান থেকে আমদানি পণ্য মূলত ওষুধ, ফল এবং তৈলবীজ। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর থেকে কয়েক বছর ধরে এসব পণ্যের আমদানিও কমে গেছে। এর আরও একটি কারণ হলো, ভারত পাকিস্তানি পণ্যের ওপর ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। ফলে ২০২৪-২৫ সালে ভারতের মোট আমদানির ০.০০০১% এরও কম ছিল পাকিস্তানি পণ্য। এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলকে (আইএমএফ) পাকিস্তানে বিতরণ করা ঋণের বিষয়টি পর্যালোচনা করার অনুরোধ জানিয়েছে ভারত। শুক্রবার (২ মে) ভারত সরকারের একটি সূত্র রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছে। আর এর মধ্য দিয়ে কাশ্মীরে এক প্রাণঘাতী হামলার পর দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশীদের মধ্যে উত্তেজনায় নতুন মাত্রা পেল।
সূত্র বলছে, গত বছর পাকিস্তান আইএমএফ থেকে ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ পেয়েছে। মার্চ মাসে ১.৩ বিলিয়ন ডলারের নতুন জলবায়ু স্থিতিস্থাপক ঋণ পেয়েছে। এই কর্মসূচিটি ৩৫০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তান বলেছে, এই ঋণ তাদের অনেক অর্থনৈতিক হুমকি এড়াতে সাহায্য করেছে।
এদিকে ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য রাজস্থানের আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে এক পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটক করার দাবি করেছে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। বিএসএফ এই দাবি করার পর নিয়ন্ত্রণরেখায় দুই দেশের সেনাদের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে বলে জানা গেছে। রোববার এক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ তথ্য জানায়। তবে ভারতের পক্ষ থেকে এখনো ওই রেঞ্জারের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। এনডিটিভি বলছে, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ শনিবার রাজস্থানের আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে এক পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটক করেছে।
এ ঘটনা এমন সময় ঘটল, যখন পাকিস্তান গত ২৩ এপ্রিল বিএসএফ কনস্টেবল পূর্ণম কুমার সাহুকে আটক করে। পাঞ্জাবের ফিরোজপুর সেক্টরে কৃষকদের পাহারা দেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন সাহু। আটক হওয়া পাকিস্তানি রেঞ্জারের পরিচয় এখনও প্রকাশ করা হয়নি। তিনি বর্তমানে বিএসএফের রাজস্থান ফ্রন্টিয়ারের হেফাজতে আছেন।
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্তে ভুল করে পার হওয়া সৈন্যদের ফেরত দেওয়ার একটি প্রচলিত প্রক্রিয়া আছে। কিন্তু সম্প্রতি উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় পাকিস্তান সাহুকে ফেরত দিচ্ছে না, ফলে ভারতও পাকিস্তানি রেঞ্জারের ফেরতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়নি। সংবাদমাধ্যমটির দাবি, রেঞ্জারকে আটক করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তানের সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণরেখার (এলওসি) বিভিন্ন সেক্টরে বিনা উসকানিতে গুলি চালাতে শুরু করে। এটি ১০ দিন ধরে চলা সংঘর্ষের ধারাবাহিকতার অংশ।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, কাশ্মীরের কুপওয়ারা, বারামুলা, পুঞ্চ, রাজৌরি, মেন্ধর, নৌশেরা, সুন্দরবানি এবং আখনুর সেক্টরজুড়ে এই হামলা হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনীও উপযুক্ত জবাব দিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
পাল্টাপাল্টি হুমকিতে বর্তমানে দুদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক একেবারে তলানিতে ঠেকেছে। সেই সঙ্গে দুদেশের মধ্যে সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা ক্রমেই তীব্র হয়ে উঠছে। এমন অবস্থায় কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখার (এলওসি) দুই পাশের মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। সীমান্তের দুপাশেই মানুষ আতঙ্ক থেকে বাঙ্কার সংস্কার করছে। পেহেলগামে হামলার পর থেকেই কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে নিয়মিতভাবেই গোলাগুলি চলছে। যে কারণে বিনিদ্র রাত কাটছে এলওসির কাছাকাছি এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের। ভারতশাসিত কাশ্মীরের উরি সেক্টরের তুতমার গলি পোস্ট এবং পাকিস্তানশাসিত লিপা সেক্টরের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বেশ কয়েকবার গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে। তবে এখনও পর্যন্ত ওই ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবুও অজানা আতঙ্ক ঘিরে ধরেছে সীমান্ত পাড়ের মানুষদের। পাকিস্তানশাসিত লিপা উপত্যকার বাসিন্দা এহসান-উল-হক শামি পেশায় একজন আইনজীবী। ওই অঞ্চলের জনসংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বাড়ি তার। শামি বলেন, শুক্রবার মধ্যবর্তী রাত সাড়ে ১২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত দুই সেনাবাহিনীর মধ্যে গুলিবিনিময় চলে। তিনি আরও বলেন, যদিও এখনও সাধারণ মানুষকে নিশানা হতে হয়নি, কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতা থেকে সবার মধ্যেই আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ভারতীয় এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গুলিবিনিময়ে ২০১৯ সালে শামির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারও আগে ২০০২ ও ১৯৯৮ সালেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তাদের বাড়ি।
ভারতশাসিত কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সবচেয়ে স্পর্শকাতর এলাকা উত্তর কাশ্মীরের কুপওয়ারা ও বারামুল্লা জেলায় অবস্থিত। কুপওয়ারায় এখনও পর্যন্ত সীমান্তে গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটেনি। তবে অতিরিক্ত সামরিক তৎপরতা এবং রাতের আকাশে বোমারু বিমানের আওয়াজ নিয়ন্ত্রণরেখার কাছাকাছি বাস করা মানুষের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। গত শুক্রবার কুপওয়ারার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এক নির্দেশ জারি করে জানিয়েছিলেন, কুপওয়ারার নিয়ন্ত্রণরেখা-সংলগ্ন অঞ্চলে যেতে হলে আগাম অনুমতি নিতে হবে। তবুও দুদেশের মধ্যকার এই উত্তেজনা থেকে কুপওয়ারার কারনাহ সেক্টরের বাসিন্দারা ব্যক্তিগত ব্যয়ে ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার তৈরির কাজ শুরু করেছেন বা সেগুলো পুনর্নির্মাণ করছেন। তেমনই একজন পীরজাদা সৈয়দ, যিনি পহেলগামের ঘটনার পর সামরিক উত্তেজনা সৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ির নিচে বাঙ্কার তৈরির কাজ শুরু করেছেন।
তিনি বলেন, ‘সীমান্তে গোলাগুলির পরিণতি আমরা এরইমধ্যে দেখেছি। এর ভয়াবহতা আমরা জানি। সে কারণেই আমরা ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার বানাচ্ছি, যাতে কিছু হলে আমরা সেখানে আশ্রয় নিতে পারি।’ কুপওয়ারার নিয়ন্ত্রণরেখার জিরো লাইনে অবস্থিত টোড গ্রামের এক বাসিন্দা বিবিসিকে বলেন, ‘২০১৭ সালে যখন গোলাবর্ষণ হচ্ছিল, তখন আমাদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে একটা শেল এসে পড়েছিল এবং তখনই তার মৃত্যু হয়। ২০২১ সালে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনী যুদ্ধ বন্ধে সম্মত হলে চার বছর ধরে জীবন শান্তিপূর্ণ ছিল। কিন্তু এখন আশঙ্কা হচ্ছে, আগের মতো পরিস্থিতি হয়তো ফিরে আসতে পারে।’ পীরজাদা সৈয়দ আরও বলেন, ‘কিছুদিন আগে যখন আমাদের বাঙ্কার তৈরি রাখার কথা বলা হয়, তখন সবাই হতবাক হয়েছে। কিন্তু বাঁচতে হবে, তাই সবাই বাঙ্কার পরিষ্কার করতে বা সেগুলো পুনর্নির্মাণ করতে শুরু করে দিয়েছে।’
পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের লিপা উপত্যকার বাসিন্দা শামি বলেন, ‘যখনই পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়, তখন নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে বসবাসকারী সাধারণ মানুষ নিশানায় পরিণত হয়। শুক্রবার গোলাগুলি শুরু হলে প্রথমে আমি আমার বৃদ্ধ মাকে বাংকারে সরিয়ে নিয়ে যাই। তার বয়স হয়েছে এবং তিনি হাঁটাচলা করতে অক্ষম।’ শামি জানিয়েছেন, ওই এলাকায় প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার রয়েছে। তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক উত্তেজনার পর আমি বিশেষ মনোযোগ দিয়ে বাংকারে পরিষ্কার করেছি, যাতে গোলাগুলি চললে এটা ব্যবহারের উপযোগী থাকে।’ এহসান-উল-হক শামি জানিয়েছেন, তাদের বাঙ্কারগুলো এমনিতে মজবুত কিন্তু সব ধরনের বিপদ এড়াতে তা সক্ষম নয়। তিনি বলেন, ‘অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি যে, এটা বুলেট বা গোলা থেকে রক্ষা করতে পারলেও ভারী অস্ত্রের শেল সরাসরি বাংকারে পড়লে সেটা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ কারণে আশঙ্কা থেকে যায়, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হতেই পারি। অবশ্য এমনিতেই গুলি চললে কারও পক্ষে ঘুমানো সম্ভব নয়। শামির মতো ওই অঞ্চলের অন্য বাসিন্দারাও বিনিদ্র রাতই কাটিয়েছেন। তার কথায়, প্রায় পুরো এলাকার মানুষই পুরো রাত জেগে ছিল। তারা একে অন্যের মঙ্গল কামনা করেছে।’ লিপা উপত্যকার আরেক বাসিন্দা বশির আলম জানান, সরকারি প্রকল্পের আওতায় প্রায় প্রতিটি বাড়িতে বা দু-তিনটি বাড়ি মিলিয়ে একটা বাঙ্কার বানানো হয়েছে।
ভারতনিয়ন্ত্রিত উরি সেক্টরেও নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কায় ভুগছেন মানুষ। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে এই সেক্টরের ভাটগ্রান ও চরন্দা এলাকায় ১৬টা বাঙ্কার নির্মাণ করা হলেও স্থানীয়দের অভিযোগ, সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ ও জলের ব্যবস্থা নেই। ভাটগ্রানের বাসিন্দা মহম্মদ কুদ্দুস বলেন, ‘কেউ কেউ নিজের খরচে বাঙ্কার তৈরি করেছেন; কিন্তু দরিদ্র মানুষরা যাবে কোথায়। এখন আমরা বাধ্য হয়েই এই বাঙ্কারগুলো পরিষ্কার করব।’ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্ত ৩ হাজার ৩২৩ কিলোমিটার বিস্তৃত। এর মধ্যে জম্মু ও কাশ্মীরের ৭৪৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ৩৪ কিলোমিটার প্রশস্ত রয়েছে সীমান্ত, যাকে সবচেয়ে বিপজ্জনক বলে মনে করা হয়।
১৯৪৯ সালে জাতিসংঘের তরফে একে যুদ্ধবিরতি রেখা হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু দুদেশই সিমলা চুক্তির অধীনে একে নিয়ন্ত্রণরেখা বা এলওসি বলে। জম্মু, সাম্বা, কাঠুয়াসংলগ্ন সীমান্তকে ভারত ‘ইন্টারন্যাশনাল বর্ডার’ বলে আখ্যা দেয়। আর পাকিস্তান সেটাকে ‘ওয়ার্কিং বাউন্ডারি’ বলে।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠক : ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে শিগগিরই বৈঠক হতে পারে বলে জানিয়েছে গ্রিস। বর্তমানে নিরাপত্তা পরিষদের ঘূর্ণায়মান সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে দেশটি। জাতিসংঘ সদর দপ্তরে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত আসিম ইফতিখার আহমদ বলেন, ‘সমস্ত বিকল্পই বিবেচনায় রয়েছে। এর মধ্যে নিরাপত্তা পরিষদে বিষয়টি তোলা অন্যতম। আমরা উপযুক্ত সময়ে সিদ্ধান্ত নেব।’ গ্রিসের রাষ্ট্রদূত ইভাঞ্জেলোস সেকেরিস সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ভাবছি। আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। শিগগিরই নিরাপত্তা পরিষদে এ বিষয়ে বৈঠক হবে।’ তিনি জানান, এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জমা পড়েনি। তবে এমন একটি আলোচনা মূল্যবান হতে পারে। রাষ্ট্রদূত সেকেরিস বিষয়টির গুরুত্ব স্বীকার করে বলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিয়ে আমরাও গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরাও অন্যদের সঙ্গে একমত যে উত্তেজনা প্রশমন ও সংলাপ জরুরি, যাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে না চলে যায়।’ পেহেলগাম হামলার বিষয়ে সেকেরিস বলেন, ‘এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। আমরা নীতিগতভাবে সন্ত্রাসবাদের যেকোনো কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানাই এবং এটিই আমরা করেছি। নিরীহ বেসামরিকদের ওপর এই জঘন্য হামলা অবশ্যই নিন্দনীয়।’ তিনি বলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই গ্রিসের তুলনায় অনেক বড় রাষ্ট্র। তাই বিষয়টির মাত্রাও ভিন্ন। আমরা সংলাপ ও উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বানে অন্যদের সঙ্গে একমত।’
এদিকে ভারত ফের আগ্রাসনের চেষ্টা করলেও পাকিস্তান বিমান বাহিনী তা সফলভাবে প্রতিহত করেছে বলে জানানো হয়েছে। সূত্র জানায়, ২৯ এপ্রিল রাত থেকে ৩০ এপ্রিল রাতের মধ্যে ভারতের অম্বালা বিমানঘাঁটি থেকে চারটি আধুনিক রাফাল যুদ্ধবিমান উড়াল দেয়। ২০০ কিমি রেঞ্জের স্পাইস-২০০০ ক্ষেপণাস্ত্র সজ্জিত এসব বিমান পাকিস্তানি সীমান্তের খুব কাছাকাছি চলে আসে, যদিও সরাসরি সীমান্ত অতিক্রম করেনি। তবে এই পরিস্থিতিকে শত্রুতামূলক আচরণ হিসেবে দেখেছে পাকিস্তান, কারণ এমন দূরত্ব থেকেও রাফাল বিমান পাকিস্তানে হামলা চালাতে পারত। পাকিস্তান সঙ্গে সঙ্গে তার ঔ-১০ঈ যুদ্ধবিমান পাঠায়, যা ২৩০ কিমি. দূরত্বে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম চখ-১৫ ক্ষেপণাস্ত্রে সজ্জিত। একইসঙ্গে পাকিস্তান তাদের ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার সিস্টেম চালু করে রাফাল বিমানের রাডার, সেন্সর ও যোগাযোগ ব্যবস্থা জ্যাম করে দেয়, যার ফলে ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলো নিজেদের মধ্যে এবং ঘাঁটির সঙ্গে সংযোগ হারিয়ে ফেলে। বাধ্য হয়ে তারা শ্রীনগরে জরুরি অবতরণ করে। পাকিস্তানের ফেডারেল তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে, ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে ভারত পাকিস্তানে হামলা চালাতে পারে। সেই রাতেই পাকিস্তান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করে দেয় এবং আগ্রাসন ব্যর্থ করে।
পরবর্তী সময়ে আরও একটি হামলার পরিকল্পনা করেছিল ভারত, কিন্তু পাকিস্তান আগেই ৪০-৫০টি যুদ্ধবিমান (F-16, JF-17, J-10C) আকাশে উড়ায়, ফলে ভারত পিছু হটে। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণ হলো, ইলেকট্রনিক, সাইবার ও স্পেস ওয়ারফেয়ারে পাকিস্তান এক ধাপ এগিয়ে। রাফাল যুদ্ধবিমানে ভরসা করে ভারত যে আশাবাদী ছিল, তা ২০১৯ সালের মতো এবারও ব্যর্থতায় পর্যবসিত হলো।
ভারত এবং পাকিস্তান একে অপরের বিরুদ্ধে বেসামরিক নানা বিধিনিষেধ ঘোষণার পরও কাশ্মীরের মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিলেন। তারা ভেবেছিলেন, পরিস্থিতি হয়তো এর চেয়ে খারাপ হবে না। কিন্তু গত সপ্তাহে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর গুলি বিনিময়ের কারণে বিনিদ্র রাত কাটিয়েছেন কাছাকাছি বসবাসকারী মানুষেরা। ভারতশাসিত কাশ্মীরের উরি সেক্টরের তুতমার গলি পোস্ট এবং পাকিস্তান শাসিত লিপা সেক্টরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর গত সপ্তাহে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। তবে এখনে পর্যন্ত ওই ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এহসান-উল-হক শামি পাকিস্তান শাসিত লিপা উপত্যকার বাসিন্দা। ওই অঞ্চলের জনসংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার এবং সেখানকার বেশিরভাগ মানুষই আইন মেনে চলেন। নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বাড়ি শামির। ভারতীয় এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গুলি বিনিময়ে ২০১৯ সালে তার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি জানিয়েছেন, একইভাবে ২০০২ ও ১৯৯৮ সালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তার বাড়ি।
পেশায় আইনজীবী এহসান-উল-হক শামি বলেন, পহেলগামের ঘটনার পর গত শুক্রবার ও শনিবার পাকিস্তান ও ভারতের সেনাবাহিনীর মধ্যে গুলি বিনিময় হয়েছে। শুক্রবার ও শনিবারের মধ্যবর্তী রাতে সাড়ে ১২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত দুই সেনাবাহিনীর মধ্যে গুলি বিনিময় চলে। এরপর শনিবার রাতে ফের গুলি বিনিময় শুরু হয়। ওইদিন রাত ১০টায় গুলি বিনিময় শুরু হয়ে ভোর ৫টা পর্যন্ত চললেও সাধারণ মানুষকে কিন্তু নিশানা হতে হয়নি। ভারতশাসিত কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সবচেয়ে স্পর্শকাতর এলাকা উত্তর কাশ্মীরের কুপওয়ারা ও বারামুল্লা জেলায় অবস্থিত। শুক্রবার কুপওয়ারার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট একটা নির্দেশ জারি করে জানিয়েছিলেন, কুপওয়ারার নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন অঞ্চলে যেতে হলে আগাম অনুমতি নিতে হবে।
কুপওয়ারায় এখন পর্যন্ত সীমান্তে গুলি বিনিময়ের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে নিয়ন্ত্রণরেখার খুব কাছাকাছি যারা বাস করেন, তাদের মধ্যে একটা আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। কুপওয়ারার কারনাহ সেক্টরের বাসিন্দারা ব্যক্তিগত ব্যয়ে ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার তৈরির কাজ শুরু করেছেন বা সেগুলো পুনর্র্নিমাণ করছেন। পহেলগামের ঘটনার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা সৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ির নিচে বাঙ্কার তৈরির কাজ যারা শুরু করেছেন, তাদেরই একজন পীরজাদা সৈয়দ। তিনি বলেন, সীমান্তে গোলাগুলির পরিণতি আমরা এরই মধ্যে দেখেছি। জীবনহানি হয়েছে, অতীতে কৃষিকাজের অভাবের কারণে মানুষও অনাহারে মারা গেছে। আল্লাহ করুন যেন কিছু না হয়, কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে যে কোনো সময় কিছু একটা ঘটে যেতে পারে। সে কারণেই আমরা ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার বানাচ্ছি যাতে কিছু হলে আমরা সেখানে আশ্রয় নিতে পারি।
কুপওয়ারার একাধিক বাসিন্দা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত সামরিক তৎপরতা’ এবং রাতের আকাশে জেট বোমারু বিমানের আওয়াজ তাদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। কুপওয়ারার নিয়ন্ত্রণ রেখার জিরো লাইনে অবস্থিত টোড গ্রামের এক বাসিন্দার কথায়, ২০১৭ সালে যখন গোলাবর্ষণ হচ্ছিল, তখন আমাদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে একটা শেল এসে পড়েছিল এবং তার মৃত্যু হয়। ‘কিন্তু ২০২১ সালে যখন ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনী কঠোরভাবে অস্ত্রবিরতি মেনে চলতে রাজি হয়। তারপর গত চার বছর জীবন শান্তিপূর্ণ ছিল। এখানে কৃষিকাজ হয়েছে, বাচ্চারা স্কুলে গিয়েছে, ব্যবসা হয়েছে। কিন্তু এখন আশঙ্কা হচ্ছে, আগের মতো পরিস্থিতি হয়ত ফিরে আসতে পারে।’
পীরজাদা সৈয়দ বলেন, দু’দিন আগে নামবরদার এসে এখানকার বাসিন্দাদের বাঙ্কার পরিষ্কার করতে এবং তার চারপাশের আগাছা বা কাঠের জিনিসপত্র সরিয়ে ফেলতে বলেছিলেন। এই ঘোষণার কারণে সবাই হতবাক হয়েছে। কিন্তু বাঁচতে হবে তাই সকলে বাঙ্কার পরিষ্কার করতে বা সেগুলো পুনর্নির্মাণ করতে শুরু করে দিয়েছে। এহসান-উল-হক শামি জানান, তার এলাকায় প্রায় প্রতিটা বাড়িতেই ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার রয়েছে। বাড়ির কাজে এই বাঙ্কার ব্যবহার করা হয়। বাঙ্কারগুলো এমনিতে মজবুত কিন্তু সব ধরনের বিপদ এড়াতে সক্ষম নয়। তিনি বলেন, বাঙ্কারগুলো বেশ মজবুত। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এটি বুলেট বা গোলা থেকে রক্ষা করতে পারলেও ভারী অস্ত্রের শেল সরাসরি বাঙ্কারে পড়লে সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আমরা যে বাড়িতে থাকি সেটি ২০০২ এবং ১৯৯৯ সালেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। আমরা নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর আছি। এই কারণে আশঙ্কা থেকে যায় যে, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হতেই পারি। অবশ্য এমনিতেই গুলি চললে কারও পক্ষে ঘুমানো সম্ভব নয়।’
শামির মতো ওই অঞ্চলের অন্য বাসিন্দারাও বিনিদ্র রাত কাটিয়েছেন। তার কথায়, প্রায় পুরো এলাকার মানুষই গোটা রাত জেগে ছিল। তারা একে অপরের মঙ্গল কামনা করেছে। তবে আমাদের কাছে তথ্য আছে যে এখন পর্যন্ত এই গোলাগুলিতে বেসামরিক জনগণের কোনো ক্ষতি হয়নি।’
উরি সেক্টরেও নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কায় ভুগছেন মানুষ। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে এই সেক্টরের ভাটগ্রান ও চরন্দা এলাকায় ১৬টি বাঙ্কার নির্মাণ করা হলেও স্থানীয়দের অভিযোগ, সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ ও পানির ব্যবস্থা নেই। ভাটগ্রানের বাসিন্দা মোহাম্মদ কুদ্দুস বলেন, কেউ কেউ নিজের খরচে বাঙ্কার তৈরি করেছেন, কিন্তু দরিদ্র মানুষরা যাবে কোথায়। এখন আমরা এই একই বাঙ্কারগুলোই পরিষ্কার করবো। ‘আল্লাহ দয়া করুন, যাতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সমস্ত কিছু ঠিক থাকে আর গুলিবিনিময় বন্ধ হওয়ার পর জীবনযাত্রা আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়,’ বলেন কুদ্দুস।