ঢাকা সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

গোপালগঞ্জ রণক্ষেত্র কারফিউ জারি

গোপালগঞ্জ রণক্ষেত্র কারফিউ জারি

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শান্তিপূর্ণ সমাবেশে দফায় দফায় হামলা করেছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হামলা করা হয়েছে পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়িতে। হামলা থেকে রেহাই পায়নি সাংবাদিকরা। এসব ঘটনায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গোপালগঞ্জ। এতে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষের পর প্রথমে শহরে ১৪৪ ধারা এবং পরে রাত ৮টার দিকে কারফিউ জারি করা হয়।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, গোপালগঞ্জে এনসিপি সমাবেশস্থলে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, বোমাবাজি হয়েছে।

বুধবার বেলা দেড়টার দিকে আওয়ামী লীগের কর্মীরা মিছিল করে এসে জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে গোপালগঞ্জ শহরের পৌরপার্ক এলাকায় সমাবেশ মঞ্চে হামলা চালায়। এ সময় সেখানে কয়েকটি ককটেল ফাটানো হয় এবং সাউন্ডবক্স, মাইক, চেয়ার ভাঙচুর করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলা যখন হয়, তখন বৃষ্টি চলছিল। সমাবেশমঞ্চে ছিলেন এনসিপির স্থানীয় নেতারা। কেন্দ্রীয় নেতারা পৌঁছালেই পুরোদমে সমাবেশের কার্যক্রম শুরুর জন্য তারা অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় খাল পার হয়ে এসে লাঠিসোঁটা নিয়ে পৌরপার্কে সমাবেশস্থলে ঢুকে পড়েন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ২০০ থেকে ৩০০ জন নেতাকর্মী। তারা বোমাবাজি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন এবং সমাবেশ মঞ্চের ব্যানার ছিঁড়ে চেয়ার ও মাইক ভাঙচুর শুরু করেন। চার প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য মোতায়েন করা হয়। সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ মিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানে করে ‘আটকাপড়া’ এনসিপি নেতারা গোপালগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয় ছাড়েন। জানা গেছে, গোপালগঞ্জের সদর উপজেলায় সমাবেশ শেষ করে মাদারীপুর যাওয়ার পথে সড়ক অবরোধ করে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়েছে। জেলা শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ বাধা দিতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুড়ে।

জুলাইয়ের প্রথম দিন থেকে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এর মধ্যে দেশের কয়েকটি জেলায় এই কর্মসূচি পালন করেছে দলটি। মাসব্যাপী এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল গোপালগঞ্জে পদযাত্রা করে। এই পদযাত্রাকে ঘিরে সদর উপজেলার উলপুর-দুর্গাপুর সড়কের খাটিয়াগড় চরপাড়ায় পুলিশের গাড়িতে হামলা ও আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। খবর পেয়ে ওই এলাকা পরিদর্শনে যান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম রাকিবুল হাসান। সেখান থেকে ফেরার পথে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার কংশুরে ইউএনওর গাড়িতে হামলা করা হয়। এ ঘটনায় তার গাড়ির চালক আহত হন। ইউএনও এম রাকিবুল হাসান বলেন, ‘এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে পুলিশের গাড়িতে হামলার অপ্রীতিকর ঘটনা জানার পর ওই এলাকায় পরিদর্শনে যাই। সেখান থেকে ফেরার পথে কংশুরে পৌঁছালে, একদল লোক আমাদের গাড়িতে হামলা করে। গাড়ির চালক মোহাম্মদ হামিম আহত হয়েছেন।’

সেনাবাহিনী ও পুলিশের সঙ্গে যোগ দেয় বিজিবি: গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গোপালগঞ্জে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে জেলায়। এ ছাড়া চার প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ মিলে পরিস্থিতি সামাল নেওয়ার চেষ্টা করে। বিজিবি সদরদপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম চার প্লাটুন সদস্য মোতায়েনের তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গোপালগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সঙ্গে যোগ দেয় চার প্লাটুন বিজিবি।

পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আশ্রয় নেন এনসিপির নেতারা : সমাবেশ পরবর্তী হামলার ঘটনায় গোপালগঞ্জ শহর থেকে বের হতে না পেরে এনসিপি নেতাদের গাড়ি বহর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের বিল্ডিংয়ের ভেতর প্রবেশ করতে দেখা গেছে। পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রবেশ করে এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিন বলেন, আমরা জানতাম না এটা পুলিশ সুপারের কার্যালয়। আসার পর আমরা দেখলাম যে এটা পুলিশ সুপারের কার্যালয়।

পুলিশের গাড়িতে ‘ছাত্রলীগের’ আগুন : গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় পুলিশের গাড়িতে আগুন ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ছাত্রলীগকে দায়ী করেছে পুলিশ। গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মির মো. সাজেদুর রহমান জানিয়েছেন, জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্কে পদযাত্রায় জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় নেতাদের আগমনের কথা রয়েছে। এই পদযাত্রা বানচালের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের জেলা সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালের সমর্থকরা সদর উপজেলার উলপুর এলাকায় পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে ও ভাঙচুর করেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

সাঁজোয়া যানে গোপালগঞ্জ ছাড়লেন এনসিপি নেতারা: আটকাপড়া এনসিপি নেতারা সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানে করে গোপালগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয় ছাড়েন। সাঁজোয়া যানে উঠার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এক মিনিট পাঁচ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, প্রথমে একটি সাঁজোয়া যানের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসেন এনসিপি নেতা সারজিস আলম, তিনি বেরিয়ে এসে হাসনাত আব্দুল্লাহকে নিয়ে আবার সাঁজোয়া যানে প্রবেশ করেন। সেখানে থাকা সেনাসদস্যরা তাদের সাঁজোয়া যানের ভেতরে ঢুকতে সাহায্য করেন। সারজিস ও হাসনাত আব্দুল্লাহ গাড়ির ভেতরে ঢোকার পর সেখানে প্রবেশ করেন। তারপর সেখানে এনসিপি নেতা আখতার হোসেন আসেন। কিন্তু তাকে সেই গাড়িতে না তুলে পাশের একটি গাড়িতে তোলা হয়। অতিরিক্ত আইজি (ক্রাইম) খন্দকার রফিকুল ইসলাম জানান, ‘এনসিপির নেতাকর্মীরা গোপালগঞ্জ এসপি অফিসে আটকা ছিলেন। পরে সোয়া ৫টার দিকে ‘ক্লিয়ার’ হলে তারা চলে যান।’

গোপালগঞ্জ থেকে খুলনায় গেলেন এনসিপি নেতারা : সেনাবাহিনী ও পুলিশের সহযোগিতায় এনসিপি নেতাদের গাড়িবহর গোপালগঞ্জ থেকে বুধবার বিকেল ৫টার দিকে খুলনা সমাবেশ করতে যায়। এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব মুশফিক উস সালেহিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা গোপালগঞ্জ শহর ত্যাগ করেছি। এখান থেকে আমরা খুলনার কাটাখালির দিকে যাচ্ছি। ’তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পদযাত্রা চলবে। পরবর্তী কর্মসূচি আমাদের মাদারীপুর। কাটাখালি গিয়ে আমরা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে জানাব।’ এনসিপি নেতারা সবাই সুস্থ ও নিরাপদ আছেন বলেও জানান মুশফিক।

হামলা-সংঘর্ষে নিহত দুই: এনসিপি সমাবেশ ঘিরে হামলা-সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। হাসপাতাল ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে। নিহত দুজন হলেন- গোপালগঞ্জ শহরের উদয়ন রোডের বাসিন্দা সন্তোষ সাহার ছেলে দীপ্ত সাহা (২৫) ও কোটালীপাড়ার রমজান কাজী (১৮)। গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জীবিতেষ বিশ্বাস বলেন, বিকেলে তিনজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তারা গুলিবিদ্ধ ছিলেন। স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে নিহত দুজনের পরিচয় নিশ্চিত করতে পেরেছে। অপরজনের মৃত্যুর বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। হাসপাতালের কর্মকর্তা জীবিতেষ বিশ্বাস বলেন, আরও ৯ জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। মৃত্যুর তথ্য জানতে গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমানের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি ধরেননি। তথ্য জানতে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মুহম্মদ কামরুজ্জামান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. গোলাম কবিরকে কল দিলে তারা কথা বলতে রাজি হননি। নিহত দীপ্ত সাহার চাচা হাসপাতালে বলেন, দীপ্ত দুপুরের খাবার খেয়ে তার দোকানে যাচ্ছিলেন। শহরের চৌরঙ্গীতে তার পেটে গুলি লাগে। নিহত রমজান কাজীর বাবা কামরুল কাজী বলেন, ‘আমার ছেলেটাকে মেরে ফেলছে। আমার ছেলে তো কোনো দোষ করেনি। আমি আমার সন্তানকে কোথায় পাব?’

গোপালগঞ্জে হামলায় জড়িত সবাইকে শাস্তি পেতে হবে: গোপালগঞ্জে এনসিপি কর্মসূচিতে হামলার ঘটনাকে মানবাধিকারের ‘লজ্জাজনক লঙ্ঘন’ হিসেবে অভিহিত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। বুধবার অন্তর্বর্তী সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এ জঘন্য হামলায় জড়িত কেউই শাস্তির বাইরে থাকবে না, যা কিনা নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।’ অন্তর্বর্তী সরকার বলছে, ‘আজ গোপালগঞ্জে যে সহিংসতা হয়েছে, তা একেবারের অগ্রহণযোগ্য। বিপ্লবী জুলাই আন্দোলনের বছরপূর্তিতে তরুণ নাগরিকদের ডাকা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলার ঘটনাটি মানবাধিকারের লজ্জাজনক লঙ্ঘন।’ অন্তর্বর্তী সরকার বলছে, ‘জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মী, পুলিশ ও গণমাধ্যমকর্মীদের লক্ষ্য করে নৃশংস হামলা চালানো হয়। তাদের গাড়ি ভাঙচুর করার পাশাপাশি অনেকের ওপর সহিংস আক্রমণ হয়।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। দেশের যেকোনো নাগরিকের বিরুদ্ধে এ ধরনের সহিংসতার কোনো স্থান নেই। সেনাবাহিনী ও পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা সেনাবাহিনী ও পুলিশের হস্তক্ষেপের প্রশংসা করি। এছাড়া হামলা সত্ত্বেও আমরা সেই সব শিক্ষার্থী ও মানুষের সাহস আর দৃঢ়তার প্রশংসা করি, যারা এমন নৃশংস হামলার পরও সমাবেশ অব্যাহত রেখেছেন। “এই নৃশংস হামলায় জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। এটা স্পষ্ট করে বলতেই হয়- এ দেশে সহিংসতার কোনো স্থান নেই; ন্যায়বিচারের জয় হবেই হবে।’

হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি মির্জা ফখরুলের: গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। হামলাকারী দুষ্কৃতকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আহ্বান জানান তিনি। বুধবার বিকেলে এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল এই উদ্বেগ জানান। এতে বলা হয়, গোপালগঞ্জে এনসিপির পূর্বঘোষিত ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচিতে পতিত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের সন্ত্রাসীদের ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মির্জা ফখরুল। বিএনপির মহাসচিব বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠীর পতনের পর দুষ্কৃতকারীরা আবারও দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিসহ নৈরাজ্যের মাধ্যমে ফায়দা হাসিলের অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে। গোপালগঞ্জে এনসিপির পূর্বঘোষিত কর্মসূচির ওপর বর্বরোচিত হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ, ইউএনওসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, পুলিশের সদস্যদের আহত করার বর্বর ঘটনা সেই অপতৎপরতারই বহিঃপ্রকাশ। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির কারণে আওয়ামী দোসরেরা মরণকামড় দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলে ফায়দা লুটতে দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য এখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, এসব দুষ্কৃতকারীকে কঠোর হস্তে দমন ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই।

দ্রুত সরকারকে পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানাল জামায়াতে ইসলামী : গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচিতে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনা নিয়ে ‘গোপালগঞ্জে কী হচ্ছে’ শিরোনামে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। পোস্টে জামাতের আমির লিখেছেন, ‘গোপালগঞ্জ তো বাংলাদেশেরই অংশ। যতদূর জানতে পেরেছি, এনসিপির নেতৃবৃন্দ স্বাভাবিক নিয়মে সর্বপর্যায়ের প্রশাসনের সঙ্গে পূর্ব থেকেই আলাপ-আলোচনা করে তাদের কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা চেয়েছেন। এটি তাদের রাজনৈতিক অধিকার। কিন্তু এখন যে অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে, কার্যত মাঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো উপস্থিতিই লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। অতিদ্রুত সরকারকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় ইতিহাসের পূর্ণ দায় সরকারের ওপরেই বর্তাবে।’ ফেসবুক পোস্টে জামায়াতের আমির আরও লেখেন, ‘আমরা সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণকে সকল ধরনের উচ্ছৃঙ্খলতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই এবং শান্তিপ্রিয়, ফ্যাসিবাদবিরোধী জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আন্তরিক আহ্বান জানাচ্ছি। মহান আল্লাহ সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে, তার সাহায্য প্রেরণ করুন- আমিন।’

জীবন-মৃত্যুর পরিস্থিতি না হলে সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হবেন না: গোপালগঞ্জবাসীর উদ্দেশে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে লিখেছেন, ‘গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি করা হয়েছে। জীবন-মৃত্যুর মতো পরিস্থিতি না হলে সাধারণ জনগণ কেউ ঘর থেকে বের হবেন না।’ তিরি আরও লিখেছেন, ‘সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। নিষিদ্ধ সংগঠনের সন্ত্রাসীদের ভেঙে দেওয়া হবে। পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে সবকিছু মনিটরিং এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানরা।’

উল্লেখ্য, এনসিপির সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত