ঢাকা সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

‘নিজেদের চাঁদাবাজি ঢাকতে তরুণদের দায় দেওয়া হচ্ছে’

‘নিজেদের চাঁদাবাজি ঢাকতে তরুণদের দায় দেওয়া হচ্ছে’

বিএনপির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি প্রসঙ্গে কঠোর সমালোচনা করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ৫ আগস্টের পর বিএনপির মাধ্যমে চাঁদাবাজি ছড়িয়ে গেছে। এখন নিজেদের দায় এড়াতে তরুণদের উপর দোষ চাপানো হচ্ছে।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে টাঙ্গাইলে এনসিপি আয়োজিত ‘জুলাই পদযাত্রা’র আগে এক সাক্ষাৎকারে এসব মন্তব্য করেন তিনি। এসময় তিনি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিজ দলের চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা নিতে আহ্বান জানান।

নাহিদ ইসলাম বলেন, বিএনপি রাষ্ট্র সংস্কারে একটিও উদ্যোগ নেয়নি। তাদের আয়ের উৎস ও ব্যয়ের হিসাব জনগণের কাছে অস্পষ্ট। যে চাঁদাবাজির অর্থনীতির ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলো চলে, সেই অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙে দিতে হবে। চাঁদাবাজির সংস্কৃতি পরিবর্তনে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

তিনি ‘জুলাই সনদ’ প্রসঙ্গে বলেন, শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিতে হবে। গণপরিষদ, গণভোট বা এলএফও-এর মাধ্যমে তা সম্ভব। পরবর্তী নির্বাচিত সরকারকে এই সনদ বাস্তবায়নে বাধ্য করতে হবে। তিনি আরও বলেন, যদি নির্বাচন কমিশনের জন্য নিয়োগ কমিটি করা হয়, তাহলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনেও (পিএসসি) একই পদ্ধতিতে নিয়োগ হওয়া উচিত। সরকারি চাকরিতে দলীয়করণ নয়, নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা তরুণদের বড় প্রত্যাশা।

উচ্চকক্ষ ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নিয়ে তিনি বলেন, উচ্চকক্ষে পার্লামেন্টারি রিভিউ (পিআর) হলে জবাবদিহিতার সংস্কৃতি গড়ে উঠবে। যুক্তি ও তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে দেশ ও জাতির কল্যাণে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এদিকে টাঙ্গাইলের সন্তোষে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর মাজার জিয়ারত শেষে নাহিদ ইসলাম বলেন, ব্রিটিশ উপনিবেশবাদ, পিন্ডি ও দিল্লির আধিপত্যের বিরুদ্ধে লড়াই করা মওলানা ভাসানীর পথ অনুসরণ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে। তিনি বলেন, মাওলানা ভাসানী ছিলেন বাংলাদেশ রাষ্টের অন্যতম স্থপতি। মওলানা ভাসানীর পথ অনুসরণ করে আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। সেই জায়গা থেকে আমরা তাকে স্মরণ ও শ্রদ্ধা করছি। আমরা মাওলানা ভাসানীকে গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে দেখি।

নাহিদ আরও বলেন, ‘মওলানা ভাসানী ছিলেন কৃষক, শ্রমিক ও মেহনতী মানুষের রাজনীতিবিদ। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে যিনি একই সঙ্গে ব্রিটিশ উপনিবেশের বিরুদ্ধে, পিন্ডির আধিপত্যের বিরুদ্ধে ও দিল্লির আধিপত্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন।

ছাত্রদের উদ্দেশে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র সমাজের যে ভূমিকা ছিল, আমাদের আগামীর বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণেও আপনাদের সেই ভূমিকা থাকবে। আমরা একসঙ্গে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। ইনশাল্লাহ আগামীর বাংলাদেশও সকল অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে আমরা একসঙ্গে লড়াই করবো। তরুণ্যের এ জাগরণ অব্যাহত রাখতে হবে।

জুলাই পদযাত্রা উপলক্ষে গত সোমবার রাতে টাঙ্গাইল আসে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারা মাওলানা ভাসানীর কবর জিয়ারত করতে যান। জিয়ারত শেষে ভাসানী দরবার হলে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন তারা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত