ঢাকা শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ওয়ান-ইলেভেনের পদধ্বনি শুনছেন তথ্য উপদেষ্টা

ওয়ান-ইলেভেনের পদধ্বনি শুনছেন তথ্য উপদেষ্টা

দেড় যুগ আগের আলোচিত ‘১/১১-এর’ পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।

স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটানো জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তির আগের দিন তার এ পোস্ট এরই মধ্যে আলোচনা তৈরি করেছে। ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে মাহফুজ আলম তার পোস্টে লেখেন, ১/১১ এর পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে!” ২৩ মিনিটের মাথায় ওই পোস্টে তিনি সংযুক্ত করেন, তবে, জুলাই জয়ী হবে। জনগণের লড়াই পরাজিত হবে না।

সেখানে তাইফুর রহমান নামে একজন মন্তব্য করেন, ১/১১ এর আগে রাস্তা এবং রাজনীতির যে প্রেক্ষাপট ছিল আজ তা অনুপস্থিত অথবা আমাদের কাছে দৃশ্যমান না। আপনি এক বাক্যে যদি এইরকম কথা বলেন তাহলে কিভাবে হবে বলুন? এর প্রতি-উত্তরে মাহফুজ লেখেন, দৃশ্যমান হচ্ছে, হবে। ২০০৬ সালের শেষ দিকে দেশে রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হলে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি দেশে আবির্ভাব ঘটে ‘১/১১’-এর।

জাতীয় সংসদ নির্বাচন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনাস্থা সৃষ্টি হওয়ার প্রেক্ষাপটে ২০০৭ সালের এ দিনে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। এই সরকারের বিরুদ্ধে দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের নেত্রীকে ‘মাইনাস’ করার ষড়যন্ত্র, রাজনৈতিক দলগুলোকে টার্গেট করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে।

পরে অবশ্য এই সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ক্ষমতায় বসে আওয়ামী লীগ। গুঞ্জন আছে, ১/১১-এর কুশীলবদের দায়মুক্তি দেওয়ার শর্তে ওই নির্বাচনে বিজয়ী করা হয় আওয়ামী লীগকে। এরপর দেশে ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দলটি।

এদিকে সোমবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের উত্তরণ যেন সঠিকমতো না হয় সেজন্য ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত চলছে। তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর সংগ্রাম করেছি, লড়াই করেছি। দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এবং তারপরে প্রায় আট বছর তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা এই আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে এসেছি। আজকে একটা ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত চলছে, দেশে আবার একটা অস্থিরতা সৃষ্টি করতে, দেশে একটা ষড়যন্ত্র তৈরি করতে। যেন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের উত্তরণ সঠিকমতো না হয়। হাসিনা সরকারের অত্যাচার নির্যাতনে আমরা একটা দুঃসময় পার হয়ে এখানে এসেছি উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন ট্রানজিশন পিরিয়ডে আছি। যখন আমাদের গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাওয়ার একটা সুযোগ পেয়েছি, তখন সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতি, ধ্বংসপ্রাপ্ত রাজনৈতিক কাঠামো ঠিক করা। এগুলো করেই আমাদেরকে আবার সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, যখনই দেশ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়, অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যায়, তখনই বিএনপি দায়িত্ব নিয়ে সেটাকে আবার পুনর্গঠন করেছে প্রতিটি সময়। তাই ঘটেছে আজকে। এখন আবার মনে হচ্ছে, বিএনপিকেই হয়তো বা সেই দায়িত্বটা নিতে হবে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আসুন, আমরা পরস্পর কাদা ছোড়াছুড়ি না করি। একটা সুযোগ পেয়েছি বাংলাদেশে আবার গণতন্ত্রকে তৈরি করার। দেশকে আবার অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করার। সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করে বাংলাদেশকে সেই দিকে এগিয়ে নিয়ে যাই। মাথা উচু করে দাঁড়াই, সফল হবো।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত