
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ঘোষিত জুলাই ঘোষণাপত্রে নিয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল গতকাল বুধবার আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়। জুলাই ঘোষণাপত্রকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে, এই ঘোষণাপত্রে রাজনৈতিক দলগুলো যে অঙ্গীকার করেছে, তা পালনের মধ্য দিয়ে এক নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ রূপান্তরের কাজ শুরু হবে। সুযোগ সৃষ্টি হবে একটি সাম্য, মানবিক মূল্যবোধ ও ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে সত্যিকারের প্রগতিশীল সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণের প্রক্রিয়া। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোকে নতুন করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কারের কাজ শুরু করে বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল।
অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ঘোষিত জুলাই ঘোষণাপত্রে জন আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন হয়নি বলে মনে করছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। গতকাল রাজধানীর মগবাজারের আল ফালাহ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, প্রধান উপদেষ্টা গতকাল যে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন, এই ঘোষণাপত্র একটি অপূর্ণাঙ্গ বিবৃতি। এতে গণমানুষের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেনি। ঘোষণাপত্রে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের কথা বলা হলেও ১৯৪৭-এর আজাদীকে উপেক্ষা করা হয়েছে। এতে পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা হত্যাকাণ্ড, ২৮ অক্টোবরের হত্যাকাণ্ডের উল্লেখ নেই। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আলেমণ্ডওলামা, মাদ্রাসাশিক্ষক ও ছাত্র, প্রবাসী ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের ভূমিকার উল্লেখ নেই, যা ইতিহাসের প্রতি অবিচার ও অবহেলা ছাড়া আর কিছুই নয়। জুলাই অভ্যুত্থানের টার্নিং পয়েন্ট ছিল ৯ দফা, যা এক দফায় রূপান্তরিত হয়েছিল। সে বিষয়টিও ঘোষণাপত্রে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।
সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রধান আকাঙ্ক্ষা ছিল রাষ্ট্র সংস্কার। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে ১৯টি বিষয়ে ঐকমত্যের মাধ্যমে জুলাই সনদ প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে। অথচ প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক পঠিত জুলাই ঘোষণাপত্রে তার উল্লেখ নেই। ঘোষণায় কখন কীভাবে তা কার্যকর করা হবে, তা উল্লেখ না করে ঘোষণাকে গুরুত্বহীন করা হয়েছে। পরবর্তী সরকারের হাতে বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়ায় হাজার হাজার মানুষের আত্মত্যাগ, রক্তের বিনিময়ে অর্জিত জুলাই চেতনা ও আশা-আকাঙ্ক্ষা ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ জুলাই জাতীয় ঘোষণাপত্রকে কেন্দ্র করে যে প্রত্যাশা নিয়ে অপেক্ষা করছিল, তা পূরণ না হওয়ায় জনগণের মধ্যে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারসহ জুলাই যোদ্ধাদের মধ্যে নতুনভাবে উৎকণ্ঠা পরিলক্ষিত হচ্ছে। ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে জুলাই জাতীয় সনদ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের রূপরেখা কী হবে, তা জাতির কাছে অস্পষ্ট। এমন অবস্থায় তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, অনতিবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্রে জনআকাঙ্ক্ষার অপরিহার্য বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হোক।
এদিকে গতকাল রাজধানীর বাংলা মটরে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জুলাই ঘোষণাপত্র ও প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের প্রতিক্রিয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ঘোষিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্রে’ জনআকাঙ্ক্ষার কিছু বিষয় ‘অনুপস্থিত’ থাকলেও, তা স্বাগত জানিয়েছে তরুণদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘ সময় ধরে সরকারের কাছে কিছু বিষয় দাবি জানিয়ে এসেছিলাম। তার কিছু বিষয় এখানে অনুপস্থিত থেকে গেছে।’
উপনিবেশবিরোধী লড়াইয়ের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ১৯৪৭ সালের দেশভাগের ঘটনাকে এখানে উল্লেখ করা হয়নি। পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা গণহত্যা, জুডিশিয়াল কিলিং, ২০১৮ সালের কোটা বিরোধী আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর আগ্রাসন বিরোধী আন্দোলন, মোদি বিরোধী আন্দোলনের কথা এই ঘোষণাপত্রে উল্লেখ থাকলে এটি পরিপূর্ণ হত।’ অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে মঙ্গলবার ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ঘোষণা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তাতে চব্বিশের ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতির অঙ্গীকার রাখা হয়েছে। ২৮ দফা এ ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশের জনগণ এই অভিপ্রায় ব্যক্ত করছে যে, ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান ২০২৪-এর উপযুক্ত রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা হবে এবং পরবর্তী নির্বাচনে নির্বাচিত সরকারের সংস্কারকৃত সংবিধানের তফসিলে এ ঘোষণাপত্র সন্নিবেশিত থাকবে। ৫ অগাস্ট ২০২৪ সালে গণঅভ্যুত্থানে বিজয়ী বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হিসেবে এই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করা হল।
জুলাই ঘোষণাপত্রে সরকারের পতন ঘটানো জুলাই আন্দোলনে শহিদ সঠিক সংখ্যা ‘আসেনি’ বলে মন্তব্য করেছেন আখতার তিনি বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্রে শহিদের সংখ্যা প্রায় এক হাজার বলা হয়েছে। অথচ জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী ১৪০০ মানুষ শহিদ হওয়ার কথা আমাদের জানা। সরকার বিগত এক বছরে শহিদের প্রকৃত সংখ্যা নিরূপন করতে ব্যর্থ হয়েছে।’
জুলাই ঘোষণাপত্রকে সংবিধানের তফসিলে অন্তর্ভুক্ত না করে নতুন সংবিধানের প্রস্তাবনায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি রয়েছে এনসিপির। আখতার বলেন, ‘বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক জনগোষ্ঠীর যে আবির্ভাব হয়েছে তার জন্য নতুন সংবিধান প্রয়োজন। নতুন সংবিধানের প্রস্তাবনার মধ্যেই জুলাইয়ের ঘোষণাপত্রকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানাই। ঘোষণাপত্রের ২৫ ও ২৭ নম্বর পয়েন্টে সংস্কারকৃত সংবিধানের তফসিলে ঘোষণাপত্র অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। আমরা গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন সংবিধানের দাবি জানিয়ে এসেছি। জুলাই সনদে যে সংস্কারগুলোর বিষয়ে দলগুলো একমত হয়েছে সেগুলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় থেকে বাস্তবায়ন করতে হবে লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার বা এলএফও করে বাস্তবায়ন করতে হবে।’
গতকাল বুধবার পুরানা পল্টনের আলরাজি কমপ্লেক্সে গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত জুলাই ঘোষণাপত্রের প্রতিক্রিয়া জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রে সরকার সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে পারেনি। ঢাকঢোল পিটিয়ে একটা ঘোষণাপত্র দেওয়ার বিষয় জাতির সামনে হাজির করলেন, সেটাতেও শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে।
নুর বলেন, গতকাল বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন ছিল। সেই দিনে আরেকটি নতুন ইতিহাসের সৃষ্টি হয়েছে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রদানের মাধ্যমে। এজন্য অবশ্যই সরকার এবং সরকারের প্রধানকে ধন্যবাদ জানাতে হয়। কিন্তু আমরা পুরোপুরি সন্তুষ্ট নই, এমন একটা অবস্থায় অর্ধেক সন্তুষ্টি আর অর্ধেক অসন্তুষ্টি নিয়ে সরকারকে আমাদের ধন্যবাদ জানাতে হচ্ছে। কারণ যেহেতু আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি এই গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের সবার সরকার, এই সরকারের ব্যর্থতা মানে আমাদের সবার ব্যর্থতা। তিনি বলেন, এই সরকারের ব্যর্থতা মানে দেশ আরেকটা নতুন সংকটে পতিত হওয়া। সেই জায়গা থেকে আমরা সরকারকে ওন করেছি, ধারণ করেছি। কিন্তু প্রকৃত অর্থে আমরা সরকারকে যতটা ধারণ করেছি সরকার আমাদের ততটা ধারণ করেনি। সরকার শুধু ধারণ করেছে এনসিপিকে।
‘যে কারণে সব কর্মকাণ্ডে দেখবেন এনসিপির একটা প্রাধান্য। সদ্য নতুন দল গঠিত দল। এমনকি এই যে ঐতিহাসিক জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়া হলো। ইতিহাস টেনে গালগপ্প অনেক করা যায়। কিন্তু যে কোনো একটা বিষয়ে আপনাকে টু দ্য পয়েন্টে আসতে হয়। সামারিতে আসতে হয়। প্রত্যেকটা জিনিসের একটা জিস্ট থাকে। এই গণঅভ্যুত্থানের জিস্ট ও গণঅভ্যুত্থানের মূল প্রেক্ষাপট ছিল ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন। যেই আন্দোলনকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছিল আমাদের ছোট ভাই-বন্ধুদের, কিশোর বন্ধুদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলন।’
নুর বলেন, এই কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আমরা তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে এই প্রথাগত রাজনীতির বাইরে সংগ্রাম চালিয়ে গেছি। সেই সংগ্রাম থেকেই জন্ম নিয়েছে ছাত্র-যুব-শ্রমিক অধিকার পরিষদ, গণঅধিকার পরিষদ। ২০২৪ সালে যেই আন্দোলন শুরু হয়েছে আমাদের সাধারণ সম্পাদক যেটি বলেছেন, এই ধরনের একটি মিথ্যাচার এই ধরনের একটি বিকৃত ইতিহাস জুলাই ঘোষণাপত্রে থাকবে এটা আমরা প্রত্যাশা করিনি।
ঘোষিত জুলাই ঘোষণাপত্রকে অপূর্ণাঙ্গ বলে সংশোধনের দাবি জানিয়েছে খেলাফত মজলিস। গতকাল এক বিবৃতিতে খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, গত ৫ আগস্ট ২০২৫ প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক ঘোষিত জুলাই সনদের ১ম দফায় প্রায় হাজার বছর ধরে বঙ্গ অঞ্চলের মানুষের ইসলামী মূল্যবোধ চর্চা ও রাজনৈতিক সফরকে কৌশলে অস্বীকার করা হয়েছে। ১৯৪৭ সালে প্রাপ্ত মানচিত্রের ভিত্তিতে ১৯৭১ সালে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটেছিল। জুলাই ঘোঘণাপত্রে ২৩ বছরের নিপীড়ক পাকিস্তানের নাম উল্লেখ করলেও ১৯০ বছরের নিপীড়ক ব্রিটেনের নাম উল্লেখ করা হয়নি। মূলত এই ভূখণ্ডে মুসলিম জাতীয়তার ভিত্তিতে ১৯৪৭ সালের দেশভাগের ইতিহাসকে এড়িয়ে চলা ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও আওয়ামী ফ্যাসিবাদের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অপকৌশলের অংশ। যা জুলাই স্পিরিটের সাথে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক।
জুলাই ঘোষণাপত্রের ১৩তম দফায় এক-এগারো সরকার ও ২০০৮ সালের পাতানো নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। ১৭তম দফায় অভ্যুত্থানের শহিদের সংখ্যা প্রায় ১ হাজার উল্লেখ করা হয়েছে, যা জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখিত সংখ্যা থেকে অনেক কম। এছাড়া ১ বছর অতিক্রান্ত হলেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শহিদদের সুনির্দিষ্ট তালিকা তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে। এখনও ৬ জন শহিদের লাশ শনাক্ত না হওয়াতে মর্গে পড়ে আছে।
ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ শাসনামলে ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে পিলখানায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা হত্যা করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দুর্বল করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল। ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে অসংখ্য নিরীহ আলেমণ্ডউলামা ও ছাত্র-জনতাকে রাতের আঁধারে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। ২০১৮ সালে ছাত্রদের কোটাবিরোধী আন্দোলনে ব্যাপক দমন-নিপীড়ন চালানো হয়েছিল। ২০২১ সালের মার্চ মাসে নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের প্রাক্কালে সংঘটিত বিক্ষোভে ভারতীয় তাবেদার সরকার গুলি চালিয়ে ২১জন মানুষকে হত্যা করেছিল। এই ধরনের সংগ্রাম তরুণ প্রজন্মের মননে ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানের বীজ বপন করেছিল। অথচ এসব গুরুত্বপূর্ণ ত্যাগ-তিতিক্ষার কথা জুলাই ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়নি। উপরোক্ত সংশোধনীগুলো জুলাই ঘোষণাপত্রে না থাকলে তা হবে অপূর্ণাঙ্গ, অভ্যুত্থানের চেতনা পরিপন্থি ও জাতির জন্য হতাশাজনক। আমরা অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র সংশোধনের দাবি জানাই।
জাতির উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা পুনর্ব্যক্ত করায় আমরা তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তবে নির্বাচনের পূর্বেই দৃশ্যমান সংস্কার সম্পন্ন করা জরুরি। গণহত্যার বিচারের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি প্রয়োজন। পেশীশক্তি, কালো টাকার প্রভাবমুক্ত একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রস্তুত ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।