
গাজীপুরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনের লাশের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেয়েছে পুলিশ। গত রোববার রাতে ওই প্রতিবেদন জমা দিয়েছে গাজীপুর শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহত ব্যক্তির গলা, ঘাড়, বুক, পিঠ ও হাতে ধারালো অস্ত্রের কোপে গুরুতর ৯টি গভীর আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান। নিহত আসাদুজ্জামান তুহিন (৩৮) দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের গাজীপুর প্রতিনিধি ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের ভিডিও করার সময় চন্দনা চৌরাস্তা এলাকায় তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় সিসিটিভির ফুটেজ থেকে শনাক্ত করে এ পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার গাজীপুর শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে তার লাশের ময়নাতদন্ত হয়। এ বিষয়ে হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এএনএম আল মামুন বলেন, নিহত তুহিনের গলা, ঘাড়, বুক, পিঠ ও হাতে ধারালো অস্ত্রের কোপে সৃষ্ট গুরুতর ৯টি গভীর আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আঘাতগুলো আকারে ছোট-বড় হলেও প্রতিটিই সমান, গুরুতর ও গভীর ছিল।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান বলেন, ‘এরই মধ্যে আমরা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেয়ে গেছি। আসামিদের রিমান্ড শেষে আদালতে গতকাল সোমবার তোলা হবে। তাদের সবার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার সম্ভাবনা আছে।’ এর আগে ওই হত্যাকাণ্ডে ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে আসার পর আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।
হত্যা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন: সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যাকাণ্ডসহ সারা দেশে সাংবাদিক হত্যা, গুম, খুন ও নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং সাংবাদিকদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি বন্ধের দাবিতে টঙ্গী পূর্ব থানার সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার দুপুরে সাংবাদিক অধিকার বাস্তবায়ন সোসাইটি ও গাজীপুর জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির যৌথ উদ্যোগে এই কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক অধিকার বাস্তবায়ন সোসাইটির চেয়ারম্যান সুমন চৌধুরী, গাজীপুর জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি এম কাজল খান, সাংবাদিক রাজু আহম্মেদ, আবু সালেহ, পলাশ সরকার প্রমুখ। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সাংবাদিক তুহিন হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুততম সময়ে গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে ফয়েজুর রহমানসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও হয়রানির ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।