
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটরের তথ্য উদ্ধৃত করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে সশস্ত্র বাহিনীর আর কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরিকল্পনা নেই।
গত শনিবার প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা আইসিটির প্রধান প্রসিকিউটরের দপ্তর থেকে জানতে পেরেছি, এই মুহূর্তে সশস্ত্র বাহিনীর আর কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরিকল্পনা নেই।’
শতাধিক সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হতে যাচ্ছে, সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করে শফিকুল আলম বলেন, ‘এই খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মনগড়া গুজব।’
তিনি জনগণকে এসব বিভ্রান্তিকর তথ্য বিশ্বাস না করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এ ধরনের অপপ্রচার সাধারণ মানুষের মধ্যে, বিশেষ করে সশস্ত্র বাহিনীর ভেতরে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে চালানো হচ্ছে।’
প্রেস সচিব জানান, সেনা গোয়েন্দা সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই) বিলুপ্ত করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। তিনি আরও বলেন, ‘সংস্থাটির সীমান্তবর্তী ও বহির্দেশীয় গোয়েন্দা কার্যক্রম আরও জোরদার করতে সরকার সংস্কারমূলক পদক্ষেপ বিবেচনা করছে।’
পরোয়ানা জারি হওয়া সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের ক্ষমতা ট্রাইব্যুনালের রয়েছে : গুমের দুই মামলাসহ মোট তিনটি মামলায় পরোয়ানা জারি হওয়া ১৫ সেনা কর্মকর্তার বিচার করার ক্ষমতা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।
গতকাল রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
তাজুল ইসলাম বলেন, গুমের মামলায় হেফাজতে থাকা সেনা কর্মকর্তাদের বিষয়ে আইনি কোনো মতামত চাইলে তা দেওয়া হবে। তবে আইনের সাধারণ বিধান অনুযায়ী, আসামিকে গ্রেফতারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করতে হয়। এরপর আদালত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। তিনি বলেন, গ্রেফতারি পরোয়ানা সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইন অনুযায়ী, গুম-হত্যায় জড়িত সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের জন্য এই আদালতই উপযুক্ত। আইন চ্যালেঞ্জ করার কোনো সুযোগ নেই। গত শনিবার ঢাকা সেনানিবাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চার্জশিটে নাম আসা সেনা কর্মকর্তাদের বিষয়ে ব্রিফিংয়ে মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান জানান, চার্জশিটে নাম থাকা ১৫ জনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তবে সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের কাছে কোনো গুমের ওয়ারেন্টের কপি আসেনি।
তিনি বলেন, সাবেক ও বর্তমান মিলিয়ে মোট ২৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে এলপিআরের একজন এবং সার্ভিসে থাকা ১৫ জনকে সেনা সদরে সংযুক্ত হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ৯ অক্টোবরের মধ্যে সেনা সদরে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল; মেজর জেনারেল কবীর আহম্মদ ছাড়া বাকি ১৫ জন উপস্থিত হয়েছেন।