
আইসিসির টেস্ট খেলুড়ে দেশের তালিকায় সর্বকনিষ্ঠ দল আয়ারল্যান্ড। আইরিশদের বিপক্ষে প্রথমবার টেস্ট খেলতে নেমেই বাজিমাত করেছে বাংলাদেশ দল। ম্যাচের শুরু থেকেই নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। ব্যাট-বলে দাপট দেখিয়ে একদিন হাতে রেখেই সফরকারিদের ইনিংস ও ৪৭ রানে হারিয়েছে টাইগাররা। এই জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা। সেই সঙ্গে ব্যক্তিগত কিছু প্রাপ্তিও যোগ হয়েছে। ওপেনার মাহমুদুল হাসান ১৭১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছেন, নাজমুল হোসেন শান্ত পেয়েছেন অধিনায়ক হিসেবে তার চতুর্থ সেঞ্চুরি, প্রথমবারের মতো ৮০ পেরোনো রান পেয়েছেন বাংলাদেশের প্রথম চার ব্যাটসম্যানই। অভিষেকে আলো ছড়িয়েছেন হাসান মুরাদও। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা জয়ের মঞ্চ তৈরি করে রেখেছিল তৃতীয় দিনেই। ৮৫ রানে আয়ারল্যান্ডের প্রথম সারির পাঁচ ব্যাটারকে ফিরিয়ে দিয়েছিল তারা। তখন মনে হয়েছিল সহজ জয়ের পথেই এগিয়ে যাচ্ছে টাইগাররা। তবে চতুর্থ দিনে লড়াই করে আয়ারল্যান্ড। তবে হার এড়াতে পারেনি সফরকারী দলটি।
গতকাল শুক্রবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টেস্টের চতুর্থ দিনে জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে তারা গুটিয়ে গিয়েছে ২৫৪ রানে। প্রথম ইনিংসে করে ছিল ২৮৬ রান। বাংলাদেশ তাদের প্রথম ইনিংসে ৮ উইকেটে ৫৮৭ রান করে ইনিংস ঘোষণা দেয়। এদিন বাংলাদেশের অস্বস্তি বাড়াচ্ছিলেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন। দারুণ ব্যাটিংয়ে প্রথম সেশনে ফিফটি তুলে দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছিলেন। তবে লাঞ্চের পরপরই তাকে ছাঁটাই করেন পেসার নাহিদ রানা। তার খাট লেন্থের বলেপুল করতে গেলে টাইমিং ঠিক করতে পারেননি ম্যাকব্রাইন। শর্ট মিডউইকেটে ক?্যাচ তুলে দেন হাসান মুরাদের হাতে। ৫টি চারের সাহায্যে ৫২ রান করেন এই ব্যাটার।
এরপর অবশ্য আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে পাল্টা আক্রমণ করেন জর্ডান নিল ও ব?্যারি ম?্যাককার্থি। প্রায় বলে ব্যাটে রান করে গড়েন ৫৪ রানের জুটি। ৫৬ বলের এই জুটিটি ভাঙেন হাসান মুরাদ। ছক্কার চেষ্টায় লং অফে সাদমান ইসলামের হাতে ক্যাচ দেন নিল। যদিও ক?্যাচ ধরতে গিয়ে প্রথমে হাত থেকে ফসকে গিয়েছিল সাদমানের। তবে দ্বিতীয় দফায় ধরতে কোনো সমস্যা হয়নি তার। ৩৬ রান করেন নিল। শেষ সাফল্যটি আসে রিভিউ নিয়ে। তাইজুলের বলে ম্যাককার্থি খেলতে গেলে ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় কিপার লিটন দাসের হাতে। আম্পায়ার আউট দেন নি। আলট্রা এজে দেখা যায়, বল ব্যাটের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় স্পষ্ট একটি স্পাইক। ম্যাককার্থির ব্যাট থেকে আসে ২৫ রান। সকালে আগের দিনের ৫ উইকেটে ৮৬ রানে ব্যাটিং শুরু করে আয়ারল্যান্ড। ম্যাথিউ হামফ্রিজকে সঙ্গে নিয়ে ম্যাকব্রাইন যোগ করেন ৩১ রান। যদিও ৮ রানে থাকতেই তিনি ফিরতে পারতেন, ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে লিটনের পায়ে স্পর্শ করে বল উঠে এলেও গলার কাছে যাওয়া ক্যাচটি নিতে পারেননি শান্ত।
অবশেষে সেই ভুলের মাশুল দিতে দেরি হয়নি। তাইজুলের বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগে হামফ্রিজ সহজ ক্যাচ দেন; ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে তা নেন সাদমান। এরপর শুরু হয় রিভিউর নাটক।