
আগামী নির্বাচনে কোনো ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, কেউ যদি নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চিন্তা করে তাহলে তার হাত অবশ করে দেওয়া হবে। গতকাল শনিবার দুপুরে ঝালকাঠির এনএস কামিল মাদ্রাসা ময়দানে হিযবুল্লাহ জামিয়াতুল মুছলিহীন আয়োজিত জাতীয় প্রতিনিধি সম্মলনে তিনি এ কথা বলেন।
সম্মেলনে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের লড়াই সব ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের নতুন ইতিহাস রচিত হবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, বিগত দিনের মতো যদি কেউ কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করে, তবে তার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।
জামায়াতের আমির বলেন, সব জুলুম, ফ্যাসিবাদ ও জাতিকে বিভক্ত করার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে তাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে। কারো রক্তচক্ষু তোয়াক্কা না করেই ইসলামের পক্ষে সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
গতকাল চট্টগ্রাম কলেজের (প্যারেড ময়দান) মাঠে আরেক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, পিআর নিয়ে আমাদের দাবি অব্যাহত রয়েছে। এটি জনগণের স্বার্থে বাস্তবায়ন করতে হবে। এমনকি আমরা ক্ষমতায় গেলেও কথা দিচ্ছি যে পিআর আমরা বাস্তবায়ন করব, ইনশাল্লাহ। তিনি বলেন, দেখেন, আমাদের এত পজিটিভ এজেন্ডা- আমরা জাতির জন্য কী করব, এগুলো ভাবতে আর বলতে বলতে সময় চলে যায়। কাউকে খোঁচানোর জন্য কিংবা কারো খোঁচার জবাব দেওয়ার সময় আমাদের নেই।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই, কিন্তু এই ফিল্ড তৈরি করতে হবে আমাদের—সবাইকে মিলে। আপনারা তৈরি থাকুন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে হবে। না হলে এ দেশে সংকট দেখা দেবে। আমরা কোনো সংকট তৈরি হতে দেব না, ইনশাল্লাহ!
ঝালকাঠির এনএস কামিল মাদ্রাসা ময়দানে হিযবুল্লাহ জামিয়াতুল মুছলিহীন আয়োজিত জাতীয় প্রতিনিধি সম্মলনে চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ইসলামী দলগুলো এক হতে পারলে এবং আগামী নির্বাচনে সম্মিলিতভাবে ভোটের বাক্স পাততে পারলে দেশে নতুন ইতিহাস রচিত হবে। চাঁদাবাজদের স্থান বাংলাদেশে হবে না বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দেন।
সম্মেলনে এ ছাড়া বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আব্দুল বাছিদ আজাদ, জাতীয় নাগরিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক আখতার হোসেন, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামালসহ আরো অনেকে। বক্তারা বলেন, ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করা সম্ভব। একই সঙ্গে তারা দাবি করেন, দেশ কোন পথে এগোবে, সেটি নির্ধারণ করবে জনগণ এবং ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী শক্তিগুলো। হিযবুল্লাহ জামিয়াতুল মুছলিহীনের আমীর মাওলানা খলিলুর রহমান নেছারাবাদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে হিযবুল্লাহ জামিয়াতুল মুছলিহীনের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে ভোটারদের কাছে তিনটি আরয এবং সরকারের কাছে সাতটি প্রস্তাব পেশ করা হয়। নেছারাবাদ দরবার শরীফের বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলের দ্বিতীয় দিনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় এই প্রতিনিধি সম্মেলন।