ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফের ভূমিকম্প

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফের ভূমিকম্প

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফের ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা ১৫ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডে এ কম্পন অনুভূত হয়। আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৬, উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর ঘোড়াশালে। এটি মৃদু মাত্রার কম্পন। দুই দিনে চার দফা ভূমিকম্প নিয়ে আতঙ্ক না কাটতেই ফের ভূপৃষ্ঠের ঝাঁকুনিতে কাপল দেশ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা রুবাঈয়্যাৎ কবীর বলেন, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদীর ঘোড়াশালে। এটি ছিল মৃদু মাত্রার ভূমিকম্প; রিখটার স্কেলে এটি ছিল ৩ দশমিক ৬ মাত্রার। এদিনই রাত সাড়ে ৩টার দিকে বাংলাদেশে দুটি ভূমিকম্প হওয়ার তথ্য দিয়েছে ইউরোপিয়ান মেডিটেরিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার (ইএমসিএস)।

সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, রাত ৩টা ২৯ মিনিট ৫৫ সেকেন্ডে হওয়া ৪ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল কক্সবাজার থেকে দেড়শ কিলোমিটার দূরের বঙ্গোপসাগর। এক মিনিটের ব্যবধানে ৩টা ৩০ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডে আরেকটি ভূমিকম্প হয়, যার উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেট থেকে ২৪ কিলোমিটার উত্তরে। রিখটার স্কেলে এটি ছিল ৩ দশমিক ৪ মাত্রার। গত শুক্রবার সকালে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্প আঘাত হানে বাংলাদেশে। ওই ভূমিকম্পে তিন জেলায় অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয় এবং ছয় শতাধিক মানুষ আহত হন। রিখটার স্কেলে ৫.৭ মাত্রার এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে নরসিংদীর মাধবদীতে এবং এর কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে। পরদিন শনিবার সকালে নরসিংদীর পলাশে ৩.৩ মাত্রার ভূমকম্পি হয়। তার রেশ না কাটতেই সন্ধ্যায় সেকেন্ডের ব্যবধানে দুটি ভূমিকম্প হয়, যার একটি উৎপত্তিস্থল ঢাকার বাড্ডা, আরেকটি সেই নরসিংদীতেই। বারবার ভূমিকম্পের পর এখনই করণীয় ঠিক করতে তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদি আহমেদ আনসারী সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে গত শুক্রবার বলেন, ‘আজকের ভূমিকম্পটা বলা যেতে পারে ‘ফোরশক’। বড় ভূমিকম্পের আগে ছোট ছোট যে ভূমিকম্প, এটা সেগুলোর একটি।’ ভূতত্ত্ববিদ অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার মনে করেন, বড় ধরনের একটি ভূমিকম্পের বিপদ বাংলাদেশের সামনে অপেক্ষা করছে। ওই ঝুঁকি বিপদজনক মাত্রায় পৌঁছেছে জনগণের সচেতনতা, সরকারের পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতির অভাবে। তার ভাষ্য, ভূমিকম্প ঠেকানো যাবে না, প্রতিরোধ করা সম্ভব না, আগাম সংকেতও দেওয়া যাবে না; কিন্তু এর ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব- যদি সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। সব কথার শেষ কথা যেটা হচ্ছে, আমাদের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে এবং ভূমিকম্প প্রতিরোধ বা ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে স্বল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়াদি, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা।

ভূমিকম্প নিয়ে জনমনে আতঙ্কের মধ্যে গত সোমবার বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। ওই বৈঠক একটি টাস্কফোর্স গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত