ঢাকা সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ভোল পাল্টে ভাব দেখাচ্ছে

বললেন মির্জা ফখরুল
স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ভোল পাল্টে ভাব দেখাচ্ছে

যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করেছে, তাদের বিশ্বাস করার কোনো কারণ থাকতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, যে শক্তি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, আজ সেই শক্তি ভোল পাল্টে এমন ভাব দেখাচ্ছে যে তারাই নতুন বাংলাদেশ করতে পারবে। বাংলাদেশের মানুষ এ কথা বিশ্বাস করতে পারে না।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে গতকাল রোববার রাজধানীর কাকরাইলের ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল। এতে অংশগ্রহণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘যে আমার স্বাধীনতাকে অস্বীকার করেছে, তাকে বিশ্বাস করার কোনো কারণ থাকতে পারে আমি অন্তত মনে করি না।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা লড়াই করে, যুদ্ধ করে একটা স্বাধীন ভূখণ্ড এনেছি। যার ফলে আমরা এখানে বেঁচে আছি, টিকে আছি। এই ভূখণ্ড আজ স্বাধীনতার দিকে থাকবে, নাকি যারা স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করে দিতে চেয়েছিল, তাদের দিকে যাবে, আজকে এই প্রশ্নগুলো আসছে। এই জন্য যে সেই স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, এই শক্তি আজকে আবার মানুষকে বিভ্রান্ত করছে সেই ধর্মের নামে। ১৯৭১ সালেও কিন্তু সে ধর্মের নামে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছিল।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, ১৯৪৭ সালে এই শক্তি সেদিন পাকিস্তান আন্দোলনের বিরোধিতা করেছে। এই শক্তি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে। আজকে সেই শক্তি ভোল পাল্টে, চেহারা পাল্টে তারা কিন্তু এমন ভাব দেখাচ্ছে যে তারাই নতুন বাংলাদেশ করতে পারবে। আমরা কেন, সারা বাংলাদেশের মানুষ এ কথা বিশ্বাস করতে পারে না।’ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের এদেশীয় সহযোগীদের নিয়ে পরিকল্পিতভাবে এ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান-বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাহিত্যিক ও সাংবাদিকদের হত্যা করেছিল। উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে ভবিষ্যতের জন্য মেধাশূন্য করে দেওয়া। কিন্তু সে ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। দুদিন পরই পাকিস্তানি বাহিনীকে আত্মসমর্পণ করতে হয়েছিল।

মির্জা ফখরুল বলেন, ষড়যন্ত্র করে কখনও সফলতা আসে না। সফলতা আসে সত্যের পথে থেকে, সংগ্রাম ও লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে। বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজ দেশ এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। কোনো চক্রান্ত বা ষড়যন্ত্রের কাছে মাথা নত না করে জনগণের ঐক্যের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক, উদার বাংলাদেশ গড়ে তোলার সময় এসেছে। জিয়াউর রহমানের স্বপ্ন, বেগম খালেদা জিয়ার স্বপ্ন ও তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার আলোকে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করতে হবে। আসন্ন নির্বাচনকে দুটি শক্তির মধ্যে নির্বাচন বলে বর্ণনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, একদিকে রয়েছে বাংলাদেশের পক্ষ—স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও উদার গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি। অন্যদিকে রয়েছে সেই পশ্চাৎপদ শক্তি, যারা অতীতে স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে। এখন ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায়। ১৯৭১ সালে যেমন ধর্মের নামে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হয়েছিল, আজও একই কৌশল নেওয়া হচ্ছে। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের সহযোগীরা দার্শনিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, সাংবাদিকসহ অসংখ্য গুণী মানুষকে ধরে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। এ ইতিহাস ভুলে যাওয়ার সুযোগ নেই।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত