
আজ ১৬ ডিসেম্বর। চিরগৌরবে সমুজ্জ্বল মহান বিজয় দিবস আজ। দেশের বিজয়ের ৫৪ বছর পূর্তির দিন। এই দিনে অগণিত মানুষের কণ্ঠে সুর উঠে ‘আমার সোনার বাংলা/ আমি তোমায় ভালোবাসি...।’ তাই তো বিজয়ের এই দিন বাংলার মানুষের কাছে চিরগৌরব ও আনন্দের। বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের নাম সংযোজিত করেছিল এক বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতি এক বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের নাম সংযোজিত করেছিল। এর মাধ্যমেই মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনার স্বীকৃতি মেলে। প্রতি বছর দেশের মানুষ এই দিনটিকে আনন্দ উচ্ছ্বাসের মাধ্যমে পালন করে। দীর্ঘ ৯ মাস পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অসম যুদ্ধ করেছিলেন দেশের সব ধর্ম, বর্ণ, ভাষার বীর সন্তানরা। জাতিকে মুক্ত করেছিলেন পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে। গত ১৬ বছর ধরে পক্ষ-বিপক্ষ সৃষ্টি করে ঔপনিবেশিক ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ নীতির মাধ্যমে দেশকে বিভাজিত করে বাংলাদেশকে লুটেপুটে খেয়েছে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ। এই বিভাজনকে সহ্য করতে পারেনি দেশের মানুষ। ফলে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ফের শুরু হয় লড়াই-সংগ্রাম। অবশেষে ৭১-এর রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে এক নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়।
স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে- রাষ্ট্রপতি : রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, স্বাধীনতার প্রকৃত সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হলে গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে। ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পরমতসহিষ্ণতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এবং ঐক্যের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। ‘মহান বিজয় দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। এ দিনটি আমাদের জাতীয় গৌরবের প্রতীক, স্বাধীনতার চূড়ান্ত সাফল্যের স্মারক।’ বিজয়ের আনন্দঘন এ দিনে তিনি দেশে ও প্রবাসে বসবাসরত সকল বাংলাদেশিকে বিজয়ের শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানান। স্বাধীনতা আমাদের শ্রেষ্ঠ অর্জন, যার পেছনে রয়েছে দীর্ঘ শোষণ, বঞ্চনা ও সংগ্রামের ইতিহাস উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের এই দিনে আমরা অর্জন করি কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব। বিজয়ের এই দিনে আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সকল বীর শহিদ, যুদ্ধাহতসহ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা, সম্ভ্রমহারা মা-বোন, শহিদ পরিবারের সদস্য ও আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনে অবদান রাখা সকল সংগ্রামী যোদ্ধাদের, যাদের ত্যাগ ও আত্মদানের মধ্য দিয়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ।’
বিজয় দিবস হোক নতুনভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার দিন- প্রধান উপদেষ্টা : প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এবারের বিজয় দিবস হোক জাতীয় জীবনে নতুনভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার দিন। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে জনগণের প্রকৃত ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে যে নবযাত্রা সূচিত হয়েছে, তা যেকোনো মূল্যে রক্ষার শপথ নেওয়ার দিন। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে এই কথা বলেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আজ ১৬ ডিসেম্বর, আমাদের মহান বিজয় দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন। ১৯৭১ সালে ৯ মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে এই দিনে আমরা পাই কাঙ্ক্ষিত বিজয়ের স্বাদ। অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা আর লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে পাই একটি স্বাধীন জাতিসত্তা আর এই লাল-সবুজের পতাকা। এই দিনে আমি দেশে ও বিশ্বজুড়ে বসবাসরত সব বাংলাদেশিকে জানাই বিজয়ের উষ্ণ শুভেচ্ছা।’
১৬ ডিসেম্বর জাতির এক মহাকাব্যিক দিন- তারেক রহমান : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ১৬ ডিসেম্বরকে জাতির অহংকার, আনন্দ আর বেদনার এক মহাকাব্যিক দিন অভিহিত করে বলেছেন, ‘১৯৭১-এ আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি শত্রুমুক্ত হলেও চক্রান্তকারীদের নীলনকশা এখনো চলমান। আগ্রাসী শক্তি আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অবজ্ঞা করার ঔদ্ধত্য দেখায়। ওই অপশক্তির এদেশীয় এজেন্টরা আমাদের অর্জিত স্বাধীনতা বিপন্ন করার জাল বুনে চলেছে।’
তারেক রহমান তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক পোস্টে এ কথা বলেন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ডাকে স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হয় এবং ওই বছর পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করার মাধ্যমে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হয় উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জীবনবাজি রেখে এ বিজয় ছিনিয়ে আনা দেশের অদম্য বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সশ্রদ্ধ অভিবাদন জানান।
বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে যারা শহিদ হয়েছেন সেই সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদদের জানাই গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘৯ মাস মুক্তিযুদ্ধের পরে জাতি ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করে। এই দিনে ৯ মাসব্যাপী স্বাধীনতাযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে এবং বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়।’ স্বাধীনতাযুদ্ধের বীর শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে তিনি বলেন, ‘বিদেশি শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে যেসব মা-বোন সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন- আমি জানাই তাদের সশ্রদ্ধ সালাম।’
তারেক রহমান বলেন, ‘শোষণমুক্ত ও সামাজিক ন্যায়বিচার ভিত্তিক গণতান্ত্রিক নীতিমালার ওপর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ছিল নতুন রাষ্ট্রের মর্মমূলে। কিন্তু অমানবিক ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী বারবার সেই প্রত্যয়কে মাটিচাপা দিয়ে সর্বনাশা দুঃশাসন জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়। থামিয়ে দেয় বহুদলীয় গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা।’
শহিদদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বিজয় ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়- ডা. শফিকুর রহমান : জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, একাত্তরের স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত বিজয় দিবস জাতির ইতিহাসে আত্মত্যাগের মহিমায় এক গৌরবের দিন। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও অসংখ্য শহিদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই বিজয় ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়।
চব্বিশের ছাত্র-জনতার বিপ্লব মুক্তিযুদ্ধকে পরিপূর্ণতা দানে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই প্রেক্ষাপটে জাতির আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। তাই বিজয়ের এই দিনে সকলের প্রতি আহ্বান থাকবে আসুন, আমরা সকল বিভেদ ভুলে দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে একটি শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ ও কল্যাণকর রাষ্ট্র গড়ে তুলতে সম্মিলিতভাবে কাজ করি।
বিজয় দিবসে মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী সকল শহিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংগ্রামী জনতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জামায়াত আমির বলেন, মুক্তির লড়াইয়ে যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন, মহান আল্লাহর দরবারে তাদের সকলের রুহের মাগফিরাত কামনা করি। তাদের ত্যাগের বিনিময়েই আমরা স্বাধীন, সার্বভৌম ও মর্যাদাপূর্ণ একটি রাষ্ট্র পেয়েছি। তিনি বলেন, বিজয়ের দিনে আল্লাহর কাছে দোয়া করি তিনি যেন বাংলাদেশকে শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ, সমৃদ্ধ, সাম্য ও সামাজিক ন্যায়বিচার ভিত্তিক মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার তৌফিক দান করেন।
২০২৪-কে ১৯৭১-এর মুখোমুখি দাঁড় করানোর প্রচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করি- মাহফুজ আলম : অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, ২০২৪-এর জুলাই বিপ্লব বাংলাদেশের মানুষের উপনিবেশবিরোধী লড়াই থেকে শুরু করে পাকিস্তান আন্দোলন হয়ে ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ৯০-এর গণঅভ্যুত্থান সবগুলোর ধারাবাহিকতা। বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘসময় ধরে নিজেদের মর্যাদা ও পরিচয় প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে এসেছে। ফলে ২০২৪-কে ১৯৭১-এর মুখোমুখি দাঁড় করানোর যে প্রচেষ্টা সেটি আমরা প্রত্যাখ্যান করি।
মাহফুজ আলম বলেন, কেউ কেউ ১৯৭১-কে ১৯৪৭-এর ‘অ্যান্টিথিসিস হিসেবে দেখেন, কিন্তু আমরা এটিকে ঐতিহাসিকভাবে ভুল বলে মনে করি। বরং প্রতিটি পর্বেই বাংলাদেশের মানুষ নিজেদের আত্মমর্যাদা, গণতন্ত্র, ভাষা ও সংস্কৃতিসহ নিজেদের পরিচয় রক্ষা এবং একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যকে সামনে রেখেছে। ১৯৪৭ সাল থেকে শুরু করে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ এবং ১৯৯০-এর গণঅভ্যুত্থান- প্রতিটি প্রজন্মই এই দীর্ঘ লড়াইয়ের অংশ হিসেবে নিজেদের ভূমিকা রেখেছে। তিনি বলেন, তাই ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবকে আগের সংগ্রামগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। সব আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল এই ভূখণ্ডের মানুষের স্বাধীনতা, মুক্তি ও মর্যাদা নিশ্চিত করা। বাংলাদেশ যতবারই অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক উপনিবেশিকতার শিকার হয়েছে, ততবারই বাংলাদেশের মানুষ তার বিরুদ্ধে লড়াই করেছে।
বিজয় কোনো স্থির অর্জন নয়, এটি নিরন্তর সংগ্রাম- আ স ম আবদুর রব : স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক, ডাকসুর সাবেক ভিপি, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, বিজয় দিবসের তাৎপর্যকে শুধু অতীতে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। এটি একটি নৈতিক, রাজনৈতিক এবং প্রগতিশীল অঙ্গীকারের দিন। সুদীর্ঘ লড়াইয়ের পর ১৯৭১ সালের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম আমাদের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র উপহার দিয়েছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থান চরম সত্যটি উন্মোচিত করেছে- যে রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল, তার অভ্যন্তরে এখনও সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারভিত্তিক প্রজাতন্ত্র অনুপস্থিত।
তিনি বলেন, নতুন বাস্তবতায় বিজয় দিবসের নতুন পাঠ। এই নতুন এবং কঠিন রাজনৈতিক বাস্তবতায়, বিজয় দিবসে ‘৭১ ও ২৪-এর গণআকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের অন্যতম প্রধান কর্তব্যটি যুক্ত হয়ে যায়। সেই কর্তব্যটি হলো- ঔপনিবেশিক নিপীড়নমূলক, স্বৈরাচারী বা ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা উচ্ছেদ করে সকল জনগণের অংশগ্রহণ ভিত্তিক নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত, অংশীদারিত্বের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। কারণ, মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র ছিল শোষণমুক্ত সমাজ, জনগণের সার্বভৌমত্ব ও মর্যাদাপূর্ণ নাগরিক জীবন নিশ্চিত করা।
একাত্তর গোটা রাষ্ট্রের গড়ে ওঠার একাত্ম ভিত্তি- সাইফুল হক : বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, এবারকার বিজয় দিবস নতুন প্রত্যাশার দ্বার উন্মোচন করেছে। বিশেষ করে দীর্ঘ ১৬ বছর পর আমরা একটা অসাধারণ গণজাগরণ ও গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন বিজয় পেয়েছি। তাই এবারের বিজয় দিবস বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। আমি প্রত্যাশা করি, এবারের বিজয় দিবস উদ্?যাপনের মধ্য দিয়ে আমরা নতুন করে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী অসম্পূর্ণ রাজনৈতিক কর্তব্য সম্পন্ন করার শপথ নেব।
গণঅভ্যুত্থানের বিজয় নস্যাৎ হতে দেওয়া যাবে না : অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেছেন, বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের এরশাদবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে জনতার বিজয় রাজনৈতিক বাস্তবতায় বেহাত হয়ে গেলেও চব্বিশে ফ্যাসিবাদবিরোধী গণঅভ্যুত্থানের বিজয় নস্যাৎ হতে দেওয়া যাবে না। যারা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে তাদের হত্যার চেষ্টা চলছে। যারা গণতন্ত্রকে রক্ষা করার লড়াই করছে, তাদের হত্যার দুঃসাহস যারা দেখাচ্ছে, তাদের প্রতিহত করতে না পারলে সাথীদের রক্ত বৃথা হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের অর্জন আমরা ধরে রাখতে পারিনি। তবে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের পরে আমাদের মধ্যে এক ধরনের আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের জনআকাঙ্ক্ষাকে একীভূত করে নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সকলের আত্মনিয়োগের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করা। দলমত নির্বিশেষে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ এবং ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান দুটোকে পাশাপাশি রেখে জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।