ঢাকা শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

পাঁচ বছর জীবিত না ফিরলে ‘গুম’ ঘোষণা

পাঁচ বছর জীবিত না ফিরলে ‘গুম’ ঘোষণা

‘গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। ফলে কোনো ব্যক্তি অন্যূন ৫ বছর গুম থাকলে এবং জীবিত না ফিরলে ট্রাইব্যুনাল তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ডিস-অ্যাপিয়ার্ড’ বা ‘গুম’ ঘোষণা করতে পারবেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অধ্যাদেশ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, সরকার ‘গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার ট্রাইব্যুনাল’র জন্য মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পাবলিক প্রসিকিউটর নিয়োগ দিতে পারবেন। ভুক্তভোগী বা অভিযোগকারীও ব্যক্তিগত উদ্যোগে ট্রাইব্যুনালে আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবেন এবং গুম হওয়া ব্যক্তির স্ত্রী বা তার ওপর নির্ভরশীল পরিবারের কোনো সদস্য কমিশনের পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে গুম হওয়া ব্যক্তির সম্পত্তি ব্যবহার করতে পারবেন।

সুইজারল্যান্ডের বার্নে হচ্ছে বাংলাদেশের নতুন দূতাবাস : সুইজারল্যান্ডের রাজধানী বার্নে বাংলাদেশের নতুন একটি দূতাবাস স্থাপনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকেই সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন রয়েছে। তবে বার্নে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের দূতাবাস থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের দূতাবাস ছিল না। এ অবস্থায় বার্নে দূতাবাস স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এদিন বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বৈঠকের বরাত দিয়ে জানান, প্রাথমিকভাবে একজন রাষ্ট্রদূত, ফার্স্ট সেক্রেটারি, কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে দূতাবাসের কার্যক্রম শুরু হবে। এখন পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের ৮২টি মিশন অফিস রয়েছে। জেনেভার স্থায়ী মিশনেই এতদিন জাতিসংঘ ও দূতাবাসের কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছিল। সুইজারল্যান্ড বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী ও কৌশলগত অংশীদার। এসব বিবেচনায় নিয়ে বার্নে বাংলাদেশ দূতাবাস স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

হাওর এলাকার অপরাধ কমাতে অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন : হাওর ও জলাভূমি এলাকায় নিষিদ্ধ কার্যক্রমের বিবরণ প্রদান, নিষিদ্ধ কার্যক্রম সংঘটিত হলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা এবং উক্ত অপরাধের জন্য আরোপ করা যেতে পারে এমন দণ্ডের বিধান করা হয়েছে বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি সংরক্ষণ অধ্যাদেশ ২০২৫-এর খসড়ায়। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই অধ্যাদেশের খসড়ায় নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। উপদেষ্টা পরিষদে জানানো হয়, বাংলাদেশের হাওর অঞ্চলের ইকোসিস্টেম বিশ্বে বিরল ও অনন্য। কিন্তু নদী ও নদীপথের বাধা সৃষ্টি করে অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ, বিষ ও কীটনাশকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার এবং পর্যটনের বিরূপ প্রভাবের কারণে এই ইকোসিস্টেম ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে পড়ছে। অন্যদিকে জলাশয় রক্ষায় আইনি কাঠামোরও অপ্রতুলতা রয়েছে। এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাংলাদেশে হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদফতরের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব, কর্তৃত্ব ও অধিক্ষেত্র সুস্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা হবে। হাওর ও জলাভূমি এলাকার জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ, প্রতিবেশ ও বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণের লক্ষে সুরক্ষা অধ্যাদেশ জারির বিধান রাখা হয়েছে। পাশাপাশি হাওর ও জলাভূমি এলাকার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংরক্ষিত হাওর ও জলাভূমি এলাকা ঘোষণা করার বিধানও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়া হাওর ও জলাভূমি এলাকায় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নির্ধারিত ব্যতিক্রম সাপেক্ষে অধিদফতরের মতামত গ্রহণের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে অন্যান্য কর্তৃপক্ষ, দফতর, সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়, স্থানীয় অংশীজনদের সম্পৃক্ততা এবং সংরক্ষণ কার্যক্রমে তাদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার লক্ষে বিধি, প্রবিধান ও নির্দেশিকা প্রণয়নের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত