
দেশবাসীর প্রতি ধৈর্য, সংযম ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই আন্দোলনের সম্মুখসারির যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদি গত বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহাদাত বরণ করায় সারা দেশে শোক, ক্ষোভ ও প্রতিবাদের আবহ তৈরি হয়েছে, এই প্রেক্ষাপটে গতকাল শুক্রবার দেওয়া এক বিবৃতিতে জামায়াত আমির বলেন, ‘সর্বস্তরের দেশপ্রেমিক জনগণ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে শহিদ শরিফ ওসমান হাদির রূহের মাগফিরাত কামনা করছে। একইসঙ্গে তার জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থতার বিষয়ে গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করছে।’ শহিদ ওসমান হাদির শাহাদাতের পর দেশের ছাত্র-জনতার মধ্যে যে আবেগ ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে, তা ন্যায্য ও বোধগম্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তবে এই ক্ষোভকে পুঁজি করে কোনো পক্ষ যদি নিজেদের স্বার্থ হাসিলের অপচেষ্টা চালায়, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা আশঙ্কা করছি-এ ধরনের কর্মকাণ্ড পরিকল্পিতভাবে চলমান আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা হতে পারে।’
বিবৃতিতে গণমাধ্যমের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ এবং জনগণের কণ্ঠস্বর প্রকাশের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। গণমাধ্যমের ওপর হামলা মানে গণতান্ত্রিক চর্চা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের ওপর সরাসরি আঘাত।
জামায়াত আমির আরও বলেন, যে কোনো ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন অবশ্যই শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত হওয়া প্রয়োজন। অন্যথায় আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তিনি শহিদ ওসমান হাদির হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জোর দাবি জানান।
বিবৃতিতে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দেশের এই সংকটময় সময়ে সংযম, দায়িত্বশীলতা ও জাতীয় ঐক্যই সামনে এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র পথ। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বিশ্বাস করে- গণতান্ত্রিক, শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই শহিদদের আত্মত্যাগের যথাযথ মর্যাদা রক্ষা করা সম্ভব।
তিনি সকল দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতা ও নাগরিককে কোনো উস্কানিতে পা না দিয়ে ধৈর্য, সচেতনতা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার আহ্বান জানান।