ঢাকা সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

জামায়াতের সঙ্গে জোটকে সমর্থন জানিয়ে নাহিদকে ১৭০ এনসিপি নেতার চিঠি

জামায়াতের সঙ্গে জোটকে সমর্থন জানিয়ে নাহিদকে ১৭০ এনসিপি নেতার চিঠি

জামায়াতে ইসলামীসহ যেকোনো দলের সঙ্গে জোট গঠনে সমর্থন জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের কাছে চিঠি দিয়েছেন দলটির অন্তত ১৭০ কেন্দ্রীয় নেতা। এছাড়া, গতকাল রোববার বিকেল পর্যন্ত ১২২ জনের বেশি এনসিপি নেতা দলের আহ্বায়কের কাছে এ বিষয়ে পৃথক চিঠি পাঠিয়েছেন। এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মো. আরিফুর রহমান তুহিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘জামায়াত-এনসিপি জোটের সমর্থনে আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যরা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে চিঠি ফরোয়ার্ড করেছেন। এখন পর্যন্ত ১৭০ জন সমর্থন জানিয়েছেন এবং তাদের মধ্যে ১২২ জন পৃথক চিঠি পাঠিয়েছেন। অন্যরাও চিঠি দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।’ এনসিপি সূত্র জানায়, জামায়াতের সঙ্গে জোট গঠনের বিরোধিতা করে গত শনিবার ৩০ নেতার চিঠি দেওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর জোটের সমর্থনে প্রচারণা শুরু হয়।

জামায়াতের সঙ্গে জোটের সমর্থনে এনসিপি নেতাদের চিঠিতে বলা হয়, ‘দলীয় স্বার্থ, জাতীয় স্বার্থ ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরের বৃহত্তর লক্ষ্যকে সামনে রেখে এনসিপি যদি কোনো রাজনৈতিক দল বা জোটের সঙ্গে নির্বাচনি সমঝোতা কিংবা জোট গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, সে বিষয়ে আমাদের পূর্ণ সমর্থন ও সম্মতি রয়েছে। নির্বাহী কাউন্সিলের সুপারিশের আলোকে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব কর্তৃক গৃহীত যেকোনো জোট বা নির্বাচনি সমঝোতা সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের প্রতি আমাদের সুস্পষ্ট সমর্থন ও আস্থা রয়েছে।’

‘আমরা বিশ্বাস করি, আপনার দূরদর্শী নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞার মাধ্যমে এনসিপি একটি সময়োপযোগী, গ্রহণযোগ্য ও ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্তে উপনীত হবে যা দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করবে এবং জনগণের আস্থা আরও সুদৃঢ় করবে,’ যোগ করা হয় চিঠিতে।

এদিকে জামায়াতের সঙ্গে আসন সমঝোতার আলোচনা নিয়ে এনসিপিতে তীব্র মতভেদ দেখা দিয়েছে। দলটির বিভিন্ন সূত্র বলছে, এর জেরে দলটির সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা পদত্যাগ করেছেন এবং আসন্ন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এই নাটকীয় পরিস্থিতির মধ্যেই গতকাল রোববার দুই মামলায় জামিন পাওয়ার পর দলের বর্তমান অবস্থা নিয়ে মুখ খুলেছেন এনসিপি নেতা আখতার হোসেন।

তাসনিম জারার পদত্যাগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণার বিষয়ে আখতার বলেন, অনেকে আমাদের রাজনৈতিক দলে নতুন করে যোগদান করেছেন, আবার অনেকে চলেও গেছেন। এটি একটি রাজনৈতিক দলের বিকাশের জন্য একটি চলমান প্রক্রিয়া। তবে আমরা যারা আছি, সবাই দলের প্রতি অটল থেকে ঐক্যবদ্ধ আছি। তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমরা চাই আমাদের দলে গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমেই নেতৃত্বের জায়গায় উঠে আসুক।’

গতকাল রোববার দুপুরে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে বিগত সরকারের আমলে শাহবাগ থানায় করা দুই মামলায় জামিন পান আখতার হোসেন। পরে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মোদিবিরোধী আন্দোলন এবং আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে করা এই রাজনৈতিক মামলাগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের দেড় বছর পার হয়ে গেলেও নিষ্পত্তি হয়নি, যা দুঃখজনক। তার আইনজীবী আবদুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ছয়টি মামলার মধ্যে কয়েকটিতে তিনি খালাস পেয়েছেন এবং দুই মামলায় জামিন হলো। বিগত সরকারের আমলে রাজনৈতিক বিভিন্ন কর্মসূচি কেন্দ্র করে শাহবাগ থানায় এসব মামলা দায়ের করা হয়েছিল।

আদালত প্রাঙ্গণে জামিন লাভের পর গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আখতার হোসেন। তিনি বলেন, ‘এই মামলাগুলো বিগত সরকারের সময়ে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল। একটি মামলা ছিল মোদিবিরোধী আন্দোলন এবং অন্যটি আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদ কর্মসূচির দায়ে। অন্তর্বর্তী সরকারের দেড় বছর সময় পার হয়ে গেলেও এই মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলাগুলো কেন নিষ্পত্তি করা হয়নি, তা নিয়ে আমি ক্ষুব্ধ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত