
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় আবারও বিমান হামলা ও গুলিবর্ষণ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছেন। যুদ্ধবিরতির মধ্যে ইসরায়েলের এই আগ্রাসন নিয়ে নতুন করে শঙ্কা সৃষ্টি করেছে। গতকাল মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, গাজা সিটির পূর্বাঞ্চলের আল-শাআফ এলাকায় দুটি আলাদা হামলার ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন। নিহত ওই ব্যক্তিরা নিজেদের বাড়িঘর দেখতে ফিরে আসায় দখলদার বাহিনী তাদের ওপর গুলি চালায়। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা কিছু যোদ্ধার দিকে গুলি চালিয়েছে যারা ‘হলুদ সীমারেখা’ অতিক্রম করে শুজাইয়ার দিকে এগিয়ে আসছিল এবং তাদের জন্য ‘হুমকি তৈরি করেছিল’।
মূলত এই ‘হলুদ রেখা’ হচ্ছে একটি সীমানা, যা গত ৪ অক্টোবর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রকাশিত মানচিত্রে নির্ধারিত হয়। যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে ওই রেখার পেছনে ইসরায়েলি সেনারা অবস্থান করছে। তবে গাজা সিটির স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রেখাটির সঠিক অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। তুফাহ এলাকার বাসিন্দা ৫০ বছর বয়সী সামির বলেন, ‘পুরো এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা মানচিত্র দেখেছি, কিন্তু বুঝতে পারছি না সীমারেখাটি আসলে কোথায়।’ যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত ১০ অক্টোবর কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর থেকে একাধিকবার গাজায় হামলা ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। গাজা কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, এ পর্যন্ত অন্তত ৯৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অবশ্য দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভাঙার অভিযোগ তুলেছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, গত রোববার ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৪২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। ইসরায়েলের দাবি, হামাস যোদ্ধারা রাফা এলাকায় গুলি চালিয়ে তাদের দুই সেনাকে হত্যা করেছিল। সেই ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবেই এই হামলা চালানো হয়। তবে হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, রাফার ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রিত অংশে তাদের কোনো ইউনিট সক্রিয় নেই এবং সেখানে ঘটে যাওয়া ঘটনার জন্য তারা ‘দায়ী নয়’। হামাস জানায়, তারা এখন পর্যন্ত ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে এবং বাকিদের মৃতদেহ হস্তান্তরের চেষ্টা করছে। তবে তারা বলেছে, গাজা উপত্যকার ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের কারণে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বড় বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।