ঢাকা শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

আফগান শরণার্থী বহিষ্কার বন্ধে পাকিস্তানকে জাতিসংঘের আহ্বান

আফগান শরণার্থী বহিষ্কার বন্ধে পাকিস্তানকে জাতিসংঘের আহ্বান

পূর্ব আফগানিস্তানে বিধ্বংসী ভূমিকম্পে প্রায় দেড় হাজার মানুষের মৃত্যুতে দেশটি যখন বিপর্যস্ত, তখন পাকিস্তানকে আফগান শরণার্থীদের গণনির্বাসন স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। গতকাল বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি গত মঙ্গলবার এক বার্তায় বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় পাকিস্তান সরকারকে অনুরোধ করছি, অবিলম্বে অবৈধ বিদেশি প্রত্যাবাসন পরিকল্পনার বাস্তবায়ন স্থগিত করুন।’

তিনি সতর্ক করেন, যাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে তারা আসলে ‘একটি বিপর্যস্ত অঞ্চলে ফিরে যাচ্ছে’। গত রোববার গভীর রাতে পাকিস্তান সীমান্তবর্তী পার্বত্য অঞ্চলে ৬ দশমিক ০ মাত্রার অগভীর ভূমিকম্পে কাদামাটির ঘর ধসে পড়ে ঘুমন্ত অবস্থায় বহু পরিবার চাপা পড়ে। তালেবান সরকারের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত এক হাজার ৪৬৯ জন নিহত ও তিন হাজার ৭০০ এর বেশি আহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়েছে। এটি দেশটির সাম্প্রতিক দশকগুলোর অন্যতম ভয়াবহ ভূমিকম্প। পাকিস্তান গত চার দশকেরও বেশি সময় ধরে সোভিয়েত আক্রমণ থেকে শুরু করে ২০২১ সালের তালেবান ক্ষমতা দখল পর্যন্ত আফগান শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে আসছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জঙ্গি হামলা ও সীমান্তে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির অভিযোগ তুলে ইসলামাবাদ ২০২৩ সালে শরণার্থীদের বহিষ্কারে অভিযান শুরু করে। জাতিসংঘের তথ্যানুসারে, এরইমধ্যে ১২ লাখেরও বেশি আফগানকে ফেরত পাঠানো হয়েছে, এর মধ্যে চলতি বছরেই চার লাখ ৪৩ হাজারের বেশি। সর্বশেষ অভিযানে জাতিসংঘের শরণার্থী কার্ডধারী প্রায় ১৩ লাখ আফগানকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশ ছাড়ার সময়সীমা শেষ হওয়ায় সীমান্তে ফেরত যাত্রীর সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে গেছে। চমন সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আফগানিস্তানে প্রবেশ করছেন। একইভাবে তোরখাম সীমান্ত দিয়েও ফেরত যাত্রীদের ঢল নেমেছে।

জাতিসংঘ বলছে, গত আগস্টের শেষ সপ্তাহেই ২৫ হাজারের বেশি আফগান পাকিস্তান ছেড়েছেন, যার অর্ধেকই শরণার্থী কার্ডধারী। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই উচ্ছেদ অভিযানের মূল উদ্দেশ কাবুলের তালেবান সরকারকে চাপে রাখা। পাকিস্তানের অভিযোগ, সীমান্তে বেড়ে যাওয়া হামলার পেছনে আফগানিস্তানে আশ্রিত জঙ্গিরাই দায়ী। তবে তালেবান এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেন, ভূমিকম্প-পরবর্তী এই কঠিন সময়ে আফগানিস্তানে দাতাদের সাহায্য অপরিহার্য ও স্বাগতযোগ্য, যার মধ্যে পাকিস্তানের সহায়তাও রয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত