
সর্বসম্মতভাবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটের সাবেক খেলোয়াড় ও প্রশাসক মিথুন মনহাস। ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী জাতীয় সংস্থার দায়িত্ব পেলেন ৪৫ বছর বয়সি এই ক্রিকেট সংগঠক। তিনি এক সময় বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব ১৯ দলের কোচ ছিলেন। গতকাল রোববার মুম্বাইয়ে বিসিসিআইর বার্ষিক সাধারণ সভা শেষে মনহাসের নাম ঘোষণা করা হয়। তিনি ছিলেন একমাত্র প্রার্থী। বিসিসিআই জানিয়েছে, রাজীব শুক্লা নির্বাচিত হয়েছেন ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে, আর দেবজিত সাইকিয়া থাকছেন বোর্ডের সচিব পদে।
ভারতের সাবেক বিশ্বকাপজয়ী রজার বিনি আগস্টে বাধ্যতামূলক ৭০ বছর বয়সসীমায় পৌঁছানোয় দায়িত্ব ছাড়েন। তার স্থলাভিষিক্ত হলেন মনহাস, যিনি কখনও জাতীয় দলে খেলতে পারেননি কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেট শেষে দ্রুতই প্রশাসনে যুক্ত হন। ভারতে ক্রিকেটের বিপুল জনপ্রিয়তার কারণে বিসিসিআই আজ বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ক্রিকেট বোর্ডে পরিণত হয়েছে। বিপুল স্পন্সরশিপ ও টিভি সম্প্রচারের আয়ে এ অবস্থানে এসেছে তারা। ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, মনহাসের উত্থানের পেছনে শাসক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সমর্থন ছিল। গত সপ্তাহে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকেই তাকে মনোনীত করা হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির শীর্ষ নেতারা। ওই বৈঠক হয়েছিল ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বাসভবনে, যিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের চেয়ারম্যান জয় শাহের পিতা। জম্মু ও কাশ্মীর ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন মনহাস। ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি ছিলেন একজন নির্ভরযোগ্য মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। ১৫৭টি প্রথমণ্ডশ্রেণির ম্যাচে করেছেন ৯,৭১৪ রান, গড়ে ৪৫.৮২। তবে জাতীয় দলে সুযোগ পাননি দুর্ভাগ্যবশত, কারণ তিনি খেলেছেন সেই সময়ে যখন দলে ছিলেন শচীন টেন্ডুলকার, রাহুল দ্রাবিড়, সৌরভ গাঙ্গুলি ও ভিভিএস লক্ষ্মণের মতো কিংবদন্তি। দিল্লি দলে খেলার সময়ও তাকে আড়াল করে রেখেছিল বিরেন্দর সেবাগ ও গৌতম গম্ভীরের উপস্থিতি। যদিও তারা জাতীয় দলে ব্যস্ত থাকলে মনহাসই নেতৃত্ব দিয়েছেন দিল্লিকে। মনহাস খেলেছেন আইপিএলে ৫০টিরও বেশি ম্যাচ। তবে খেলোয়াড়ের চেয়ে তিনি বেশি উজ্জ্বল হয়েছেন প্রশাসক হিসেবে।