ঢাকা শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

অবৈধ মাছ ধরা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ড্রোন কিনছে সরকার

অবৈধ মাছ ধরা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ড্রোন কিনছে সরকার

উপকূলীয় জেলায় দুর্গম চ্যানেলে ও দ্বীপ অঞ্চলে বিদেশি ট্রলার ও অনিয়ন্ত্রিত মাছ ধরায় দেশের অর্থনীতি ও সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে। মৎস্য ও জলজ সম্পদ ক্ষতির মুখ থেকে রক্ষা করতে উন্নতমানের ড্রোন ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

‘অ্যাকুয়াগার্ড : উপকূলীয় এলাকায় ড্রোনের মাধ্যমে ‘মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও নজরদারি প্রকল্প’ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। পরিকল্পনা বিভাগ এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে বলে জানা গেছে।

মন্ত্রণালয়ের নথিতে বলা হয়েছে, প্রকল্পের আওতায় উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ড্রোন ব্যবহার করে সমুদ্র সংলগ্ন খুলনা-বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা দুর্গম চ্যানেলে উপকূলীয় নদী ও সমুদ্রে রিয়েল-টাইম নজরদারি চালানো হবে। এসব এলাকায় বিষ প্রয়োগের, চায়না দুয়ারি জাল, কারেন্ট জাল, ও চরগেরা জাল ব্যবহার করে অবৈধ মাছ ধরা হয়। যার ফলে মৎস্য প্রজনন ও পরিবেশের ওপর গুরুতর প্রভাব পড়ে।

কক্সবাজার, নোয়াখালী চট্টগ্রাম, ভোলা ও বরগুনা উপকূলীয় চর ও দ্বীপে একই ধরনের অবৈধ জালের ব্যবহারের মাধ্যমে গভীর রাতে বা গোপনে মাছ আহরণ অব্যাহত রয়েছে। ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি করলে এসব অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ করা সম্ভব হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। মৎস্য অধিদপ্তর অ্যাকোয়াগার্ড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এর আগে ড্রোন বিষয়ে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সঙ্গে একটা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজিএস) অর্জনে বিশেষভাবে সহায়ক হবে।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সম্পৃক্ততা : জাতিসংঘ এসডিজি লক্ষ্য-১৪ এর (সমুদ্রের সম্পদ সংরক্ষণ) ছাড়াও লক্ষ্য-১ (দারিদ্র্য বিমোচন) ও লক্ষ্য-২ (ক্ষুধামুক্তি) অর্জনে অবদান রাখবে। কারণ মাছ উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে দেশের আমিষের চাহিদা পূরণ হবে। একইসঙ্গে জেলেদের কর্মসংস্থানও বাড়বে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রকল্পটি বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও অবৈধ মাছ ধরা প্রতিরোধে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে সাশ্রয়ী, দ্রুত ও কার্যকর নজরদারি সম্ভব হলে উপকূলীয় জেলেদের জীবিকা যেমন সুরক্ষিত হবে। তেমনি দেশের সামুদ্রিক সম্পদও রক্ষা পাবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মৎস্য খাতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এক নবদিগন্ত উন্মোচন করবে।

দেশের সমুদ্র সংলগ্ন কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, খুলনাসহ ১৯টি উপকূলীয় জেলায় (৭০টি উপজেলা) বছরে লাখ লাখ জেলে মাছ ধরায় নিয়োজিত রয়েছে। কিন্তু নজরদারির অবৈধ জাল ব্যবহার, নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ধরা ও গভীর সমুদ্রে দেশী ও বিদেশি ট্রলারের সীমা লঙ্ঘন অব্যাহত রয়েছে। অবৈধ মাছ ধরা বন্ধে ড্রোন কিনছে সরকার।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত