
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই যোদ্ধা শহীদ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের পুঙ্খানুপুঙ্খ ও বিস্তারিত তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে ভারত। গতকাল বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বার্তাসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহকে তলব করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ সময় তাকে শহীদ হাদি হত্যার তদন্তের আহ্বান জানান।
বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে পিটিআই জানিয়েছে, হাদিকে হত্যার সঙ্গে ভারতের সংশ্লিষ্টতা আছে এমন অভিযোগ ওঠায় বাংলাদেশকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত তদন্ত করতে আহ্বান জানিয়েছে নয়াদিল্লি। দুর্বৃত্তের গুলিতে হাদি আহত হওয়ার পর ভারতের দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছিল। তার মৃত্যুর পর বাংলাদেশে ভারতবিরোধী মনোভাব দেখা যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেছে পিটিআই।
এদিকে মঙ্গলবার ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করে ঢাকা। ভারতীয় দূতকে তলব করে পররাষ্ট্রসচিব নয়াদিল্লি ও শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক স্থাপনায় হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে দেশটিতে থাকা বাংলাদেশের কূটনীতিকদের নিরাপত্তা বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। এরআগে ১৪ ডিসেম্বর প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছিল। সেদিন ভারতে অবস্থানরত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অব্যাহত উসকানিমূলক বক্তব্যে সরকারের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের ভারতে পালিয়ে যাওয়া প্রতিরোধে দেশটির সহযোগিতা কামনা করা হয়।
অন্যদিকে গত ১৭ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পালটা তলব করা হয়। আবারও সপ্তাহ না যেতেই বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে গত মঙ্গলবার আবারও পালটা তলব করে ভারত।
ওসমান হাদি হত্যায় মোটরসাইকেল চালকের সহযোগী গ্রেপ্তার : ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডে জড়িত মোটরসাইকেল চালক আলমগীরের সহযোগী ও আদাবর থানা যুবলীগ কর্মী হিমনকে বিদেশি পিস্তল, গুলি ও বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরকসহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার বিকেলে তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. জুয়েল রানা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে আদাবর এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে হিমন অবস্থান করছে। ওই তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে প্রথমে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আরও অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি এবং বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, হাদি হত্যাকাণ্ডে জড়িত ফয়সাল ও আলমগীরের সঙ্গে হিমনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। প্রায় দুই মাস আগে তিনি দুবাই থেকে বাংলাদেশে ফেরেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে প্রথমে আদাবরের রাজ্জাক হোটেল থেকে তাকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আদাবরের ১৭/বি এলাকার মেহেদীর বাসা থেকে পিস্তল, গুলি ও বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হিমন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাকে আরও অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।