আগাম শিম চাষ করে সফল হয়েছেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার মাধবপুর এলাকার কৃষক দাউদ আলী। এ বছর শিমের ভালো দাম পাওয়ায় বিগত ১০-১২ বছরের তুলনায় বেশি লাভবান হয়েছেন তিনি। কম খরচ করে বেশি লাভ করে বেশ খুশি তিনি।
জানা যায়, ১২ বছর ধরে শিমের আবাদ করেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ফুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের মাধবপুর এলাকার কৃষক কিতাব উদ্দিনের ছেলে দাউদ আলী। তবে এবছর বেশ কয়েকবার শিমের দামের সেঞ্চুরি পেয়ে বেশ লাভবান হয়েছেন তিনি। তার পাশাপাশি এলাকার অনেকেই এখন শিম চাষে আগ্রহী হয়েছেন। কৃষক দাউদ আলী জানান, আমি বিগত ১২ বছর ধরে শিম চাষ করি। প্রতিবছর ১ বিঘা বা দেড় বিঘা করে শিমের চাষ করি। কোনবার লাভ হয় আবার কোনবার লস হয়। কিš‘ এবার যে পরিমাণ লাভ হয়েছে তা আগে কোনদিন হয়নি। আগাম জাতের শিম কয়েক সপ্তাহ ধরে বিক্রি করছি। আমি মৌসুমে শিম চাষ করলেও এবারই প্রথম কৃষি বিভাগের পরামর্শক্রমে আগাম জাতের শিম চাষ শুরু করেছি। বৈরী আবহাওয়া সত্বেও শিমের গাছে ভালো ফুল এসেছে এবং ফলনও ভালো পা”িছ। এই জমিতে শিম চাষের জন্য কৃষি অফিস থেকে প্রদর্শনী দিয়ে সহযোগিতা করেছিল। কৃষি অফিস ১০ শতাংশ জমিতে শিম আবাদের জন্য প্রদর্শনী দিয়েছিল। আমি তার সঙ্গে আরও ২০ শতক বেশি করে চাষ করেছিলাম। এছাড়া পাশের মাঠে আরো ৩৩ শতক জমিতে শিমের আবাদ করেছি। এই জমিটাতে আমার সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৭-৮ হাজার টাকার মতো। এরইমধ্যে আমি ৬০ হাজার টাকার শিম বিক্রি করে ফেলেছি। এখনও সারাবছর শিম বিক্রি করতে পারবো। তিনি আরও জানান, শিমে বিঘাপ্রতি ৮-১০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। শিমে শুধু মাচা দেওয়ার খরটায় একটু হয়। তাছাড়া তেমন খরচ হয় না। আমি শুরুতে ১০০ টাকা কেজি হিসেবে পাইকারি শিম বিক্রি করা শুরু করেছি, এর পর হয়তো ৫০-৬০ টাকা এবং সর্বশেষ ৩০-৪০ টাকা কেজি হিসাবে বিক্রি করবো। এই শিম বিক্রি করেই সারাবছর সংসার চলে এখন আমার। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, শিম একটি লাভজনক ও উ”চমূল্য সবজি। আমরা কৃষকদের শিম চাষে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকি।
মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ‘মিরপুর উপজেলায় আমরা যশোর অঞ্চলে টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের শিম চাষের জন্য প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনী দিয়েছি। যার ফলে কৃষকরা শিম চাষে বেশ আগ্রহী হয়ে উঠেছে। মিরপুরে মাটি শিমের চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী এবং এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা বেশ ভালো শিমের আবাদ করেছে। সেইসঙ্গে সারাবছরই শিমের বাজার দর ভালো থাকায় বেশ লাভবান হয়েছেন তারা।
যশোর অঞ্চলে টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্পের মনিটরিং ও মূল্যায়ন কর্মকর্তা মো. মাসুম আব্দুল্লাহ জানান, শিম পুষ্টিকর ও জনপ্রিয় সবজি। অত্র প্রকল্পের আওতায় আমরা কৃষকদের প্রদর্শনী এবং প্রশিক্ষণ প্রদান করছি। সেইসঙ্গে কৃষকরা যাতে বাজার মূল্য ভালো পায় এজন্য বাজারজাত করণের জন্য বাজার সংযোগ করে দি”িছ। এর ফলে কৃষকরা শিম চাষে আরও আগ্রহী হয়ে উঠছে।
