ঢাকা শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

লালমনিরহাটে শিমের থোকায় দুলছে কৃষকের স্বপ্ন

লালমনিরহাটে শিমের থোকায় দুলছে কৃষকের স্বপ্ন

লালমনিরহাটে হালকা মৃদু বাতাসে যেন দুলছে চাষিদের স্বপ্ন শিমের গাছে গাছে। ছোট্ট ছোট্ট ফুল আর থোকায় থোকায় শিমে ভরে উঠেছে দেশের উত্তরের সীমান্তবর্তী লালমনিরহাট জেলার সবজি চাষিদের শিম বাগান। বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর বাম্পার ফলন হয়েছে শিমের। সবজি হিসেবে শিমের কদর বেশি। হাট-বাজারে আগাম শিমের চাহিদা প্রচুর হওয়ায় মুনাফাও বেশি পাচ্ছে চাষিরা। বছরজুড়েই লালমনিরহাটের অধিকাংশ কৃষিজমিতে রকমারি সবজি চাষ হয়। এ জেলার উঁচু জমিতে চাষিরা বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এরই মধ্যে বিক্রিও শুরু হয়েছে সবজির।

১২ মাসই তারা চাষ করেন নানা রকমারি সবজি। আর বর্তমানে তারই ধারাবাহিকতায় ভোক্তাদের চাহিদা পূরণে আগাম জাতের সবজি চাষ করেছেন অনেকে। বিভিন্ন জাতের সবজিতে ভরে উঠেছে হাট-বাজারগুলো। লালমনিরহাট জেলার সবজি স্থানীয় হাট-বাজারের চাহিদা পূরণ করে প্রতিদিন ওই সব গ্রাম থেকে হাজার হাজার মনসবজি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন বড় বড় পাইকারি বাজারে চলে যায় লালমনিরহাটের উৎপাদিত সবজি। এসব গ্রামের চাষিরা সবজি চাষে রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়েছেন। তন্মধ্যে সবজির অন্যতম হচ্ছে শিম। আর স্বল্প খরচে বেশি মুনাফা পেতে শিম চাষে ঝুঁকে পড়েছেন এজেলার চাষিরা। আগাম শিমের কদর বেড়েছে হাট-বাজারে। ফলে দাম বেশি থাকায় ভালো মুনাফা গুনছেন চাষিরা। বর্তমানে চাষিদের ক্ষেতেই প্রতি কেজি শিম ১২০-১৩০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। পাইকাররা চাষিদের খেত থেকে নগদ অর্থে শিম কিনে লালমনিরহাট জেলার হাট-বাজারসহ সারা দেশের পাইকারি বাজারে পাঠাচ্ছেন। এ মৌসুমে সবজি উৎপাদনকে ঘিরে নানামুখী ব্যবসা চালু হয় এ জেলায়। সেই বেড়ে গেছে দিন মজুরের মজুরি, অটো-ভ্যানসহ ছোট যানবাহনগুলো চাহিদাও বেড়ে যায়। সব মিলে সবজিকে ঘিরে এ জেলার অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে ওঠেছে।

লালমনিরহাটের সবজি খ্যাত গ্রাম এর মধ্যে রয়েছে- শিয়ালখাওয়া, চাঁপারহাট, ভোটমারী, দৈখাওয়া, সিঙ্গিমারী, কুমড়িরহাট, চন্দনপাট, বড়কমলাবাড়ী, হাজীগঞ্জ, চণ্ডীমারি, কর্ণপুর, দুড়াকুটি, ফুলগাছ, কোদালখাতা, ভাটিবাড়ী, কাকেয়া টেপা, বনগ্রাম, শিবেরকুটি অন্যতম। এসব সবজি রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ফেনী, রাজশাহী, বগুড়া, রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছে। জেলার আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ী ইউনিয়নের কুমড়িরহাট ও সদর উপজেলার বড়বাড়ীহাটের মাঠে ও গোশালা বাজারে প্রতিদিন সকালে বিশাল পাইকারি বাজার বসে। শিম চাষি বলেন, অল্প জমি, স্বল্পপুঁজি ও একটু পরিচর্যা করলে উঁচু জমিতে শিমচাষ করে বেশ মুনাফা অর্জন করা সম্ভব। আষাঢ় মাসের শেষ দিকে সারিবদ্ধভাবে গর্ত খুঁড়ে কিছু গোবর-সার প্রয়োগ করে শিমের বীজ বপন করতে হয়। এরপর কিছু পরিচর্যা সার সেচ ও কীটনাশক প্রয়োগ করে চারা গাছ বড় হলে একটু মাচাং বানিয়ে দিলে মাত্র আড়াই-তিন মাসে শিম বাজারে পাঠানো সম্বব বলে দাবি চাষিদের। লালমনিরহাটের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অপূর্ব বলেন, শিম প্রোটিন সমৃদ্ধ সবজি। এর বিচিও সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। তাই দেশে এর চাহিদা ব্যাপক। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত