
লোকসানের আশঙ্কা নিয়ে সোনালি আঁশ পাটে স্বপ্ন বুনছেন লালমনিরহাটের বিভিন্ন নদী-নালা, খাল-বিলের পাড়ের পাটচাষিরা। নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খোলার প্রত্যাশা নিয়ে চলতি মৌসুমে পাট কাটা, জাগ দেওয়া ও পাটকাঠি থেকে পাট ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
লালমনিরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর লালমনিরহাটে ৩ হাজার ৩০০, ১৫ হেক্টর জমিতে পাট আবাদ হয়েছে। উৎপাদন ভালো হলেও পানি সংকটের কারণে এখন চাষিরা পড়েছেন বিপাকে। তবুও থেকে নেই পাট চাষিরা। জানা যায়, অন্য বছরের তুলনায় এবার পাটের আবাদ ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। তবু দাম নিয়ে রয়েছে সংশয়। সময়মতো পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় লালমনিরহাট জেলার ৫টি (লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম) উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় পাট কেটে জলাশয়ে জাগ দেওয়া, পাট ছিলা নিয়ে ব্যস্ত চাষিরা। আবার কোথাও দেখা গেছে, নারী-পুরুষ মিলে পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর কাজ করছেন। খরচ বাঁচাতে রিবোন রেটিং পদ্ধতিতে আঁশ ছাড়ানোর জন্য কৃষি বিভাগ কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করলেও তাতে আগ্রহ নেই তাদের। কৃষক যদি ৩৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা মণ দরে পাট বিক্রি করেন তাহলে লাভবান হবেন। ন্যায্যমূল্য পেলে কৃষকরা আরও বেশি পাটচাষে আগ্রহী হয়ে উঠবেন। কৃষক আকবর আলী, আমিনুল হোসেন, আলী মিয়া ও কামরুল ইসলাম জমিতে পাট চাষ করেছেন। পাটও ভালো হয়েছে এবং অন্য বছরের তুলনায় ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন তিনি।
পাট চাষি বলেন, এ বছর বন্যায় আমার পাটখেত তলিয়ে গেছে। এখন পাটগাছগুলো মরে যাচ্ছে। এতে আমি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। অন্যান্য পাট চাষিরা বলেন, যদি সরকার পাটের ভালো দাম নির্ধারণ করে, তাহলে আর্থিকভাবে কিছু লাভবান হবেন। এ বিষয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অপূর্ব বলেন, এবার কৃষকের মাঝে বীজ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। আশা করছি, ফলনও ভালো হবে নিয়মিত চাষিদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। তবে দাম ভালো পেলে কৃষকরা আরও উদ্বুদ্ধ হবে পাট চাষে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলা কৃষি অফিসার খন্দকার সোহায়েল আহমেদ বলেন, পানিসংকট মোকাবিলায় কৃষি বিভাগ ‘রিবন রেটিং’ পদ্ধতির ওপর জোর দিচ্ছে। এই পদ্ধতিতে কম পানিতে পাট পচানো সম্ভব। এতে আঁশের গুণগত মান বজায় থাকে, সময় ও শ্রমও বাঁচে।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সাইখুল আরিফিন বলেন, বর্ষা হলেও বৃষ্টির পরিমাণ অনেক কম। তাই খাল-বিল শুকনো। এই পরিস্থিতিতে রিবন রেটিং পদ্ধতি হতে পারে কার্যকরী সমাধান।