ঢাকা সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

নেপালে থাকা বাংলাদেশিদের ঘরের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দূতাবাসের

* অবরুদ্ধ বিমানবন্দর, নেপাল থেকে ফিরতে পারলেন না জামালরা
নেপালে থাকা বাংলাদেশিদের ঘরের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দূতাবাসের

টানা দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানী কাঠমান্ডুসহ নেপালের গুরুত্বপূর্ণ শহরে আন্দোলন চালাচ্ছে বিক্ষুদ্ধ তরুণ প্রজন্ম। সরকার পতনের দাবিতে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা রাজপথে নেমেছে। চলছে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। কারফিউ দিয়েও দমানো যাচ্ছে না জেন-জি প্রজন্মকে। এমতাবস্থায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেশটিতে থাকা বাংলাদেশি নাগরিকদেরকে বাসার বাইরে বের না হয়ে নিজ নিজ অবস্থানে থাকার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ দূতাবাস।

কাঠমান্ডুতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস তাদের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে জানিয়েছে, ‘বিদ্যমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে আপাতত নেপালে ভ্রমণ না করার জন্য সব বাংলাদেশি নাগরিককে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’ বর্তমানে নেপালে প্রায় ৩০০ বাংলাদেশি অবস্থান করছেন। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই পর্যটক। এ ছাড়া কিছু ব্যবসায়ী ও আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার কর্মীও রয়েছেন। এরই মধ্যে কাঠমান্ডুতে বিক্ষোভের কারণে বাংলাদেশ ও স্বাগতিক নেপালের মধ্যকার দুই ম্যাচের ফিফা প্রীতি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি বাতিল করা হয়েছে। ম্যাচটি আজ রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। বাংলাদেশ দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আজই (মঙ্গলবার) ফুটবল দলটির ঢাকায় ফেরার কথা ছিল। কিন্তু রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ফ্লাইটের সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, দূতাবাস ফুটবল দলের সার্বিক বিষয় দেখাশোনা করছে।

দেশে ফিরতে পারছে না বাংলাদেশের ফুটবলাররা : নেপালে সরকার পতনে আন্দোলনে নেমেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। তাদের দমাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নেপাল পুলিশকে। এ ঘটনায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে জাতীয় ফুটবল দলের দেশে ফেরা। গতকাল মঙ্গলবার বেলা তিনটায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স যোগে দেশে ফেরার কথা। তবে নেপাল পুলিশের পক্ষ থেকে যথেষ্ট নিরাপত্তার ব্যবস্থা না হওয়ায় হোটেল থেকে টিম বাস ছাড়েনি।

খেলোয়াড়রা দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষায় আছেন হোটেল লবিতে।

নিরাপত্তা বাহিনীর সবুজ সংকেত পেলেই দল নিয়ে ত্রিভুবন বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে ক্রাউন ইম্পেরিয়াল হোটলে ছাড়বে টিম বাস। অনিশ্চয়তার মধ্যে কাটানো বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার আমের খান জানিয়েছেন, ‘বুঝতে পারছি না কী হবে। কোন কিছুই আমাদের আয়ত্বে নেই। বেলা তিনটার ফ্লাইট। অথচ এখনো আমরা হোটেল লবিতে অপেক্ষায় আছি। অল নেপাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এখনো আমাদের জন্য নিরাপদে বিমানবন্দরে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে পারেনি। শতভাগ নিশ্চিত না হয়ে আমরা কোন ঝুকি নিতে চাই না।’ তিনি যোগ করেন, ‘নিরাপত্তা বলয়ে আমরা বিমান বন্দরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছিলাম। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের জন্য যেতে পারিনি।’

উল্লেখ্য, দুর্নীতি, অর্থ পাচার, অনিয়ম এবং সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধের অভিযোগে সরকার পতনের দাবীতে সোমবার থেকে কাঠমান্ডুসহ নেপালের সব বড় শহরে জেন-জি প্রজন্ম বিক্ষোভ প্রকাশ করে আসছে।

সোমবার তারা নেপাল পার্লামেন্ট হাউজে প্রবেশ করে। তাদের বাধা দিতে গিয়ে পুলিশ গুলিবর্ষণ করে এবং দুই পক্ষের মধ্যে ব্যপক সংঘর্ষ বেধে যায়। পুলিশের গুলির আঘাতে প্রথম দিনে ১৯জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়। বিক্ষোভ দমাতে সোমবার রাতে পদত্যাগ করেন নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী। গতকাল সকালে পদ ছাড়েন দেশটির কৃষিমন্ত্রী। তাতেও লাভ হয়নি। বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-সমাজের একটাই দাবী প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলিসহ পুরো মন্ত্রী পরিষদকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে। সেই দাবি মেনে কিছুক্ষণ আগে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত