
নেপালের আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেবেন বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেওয়া সুদান গুরুং। দেশটিতে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভণ্ডআন্দোলনে মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই সরকারের পতন ঘটে। সুদান গুরুং জানিয়েছেন, তিনি আসন্ন মার্চের সাধারণ নির্বাচনে প্রার্থী হবেন। তিনি বলেন, তার আন্দোলন ‘জনগণের সরকার’ প্রতিষ্ঠার জন্য শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে।
স্টার্ট হিয়ারের সান্দ্রা গাথম্যানকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ৩৬ বছর বয়সি সুদান গুরুং জানান, তার দল দেশজুড়ে সমর্থকদের সংগঠিত করছে। তারা প্রচলিত রাজনৈতিক দলের চেয়ে ভিন্ন কিছু চিন্তা করছেন। তিনি বলেন, তারা আমাদের রাজনীতিতে টেনে এনেছে। যদি তারা রাজনীতি চায়, আমরা রাজনীতি করবো। এখন আর পিছিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।
সুদান গুরুং মূলত নেপালের জেন-জি প্রজন্মের নেতৃত্বাধীন এক গণবিক্ষোভের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিতি পান। সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, এক্স, ইউটিউব বন্ধ করে দেওয়ার পরই মূলত বিক্ষোভের শুরু। যদিও পরবর্তীতে এই আন্দোলন দুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় সহিংসতা ও দায়মুক্তির বিরুদ্ধে এক বৃহত্তর গণআন্দোলনে পরিণত হয়। এই সময়ে ডজনখানেক তরুণ নিহত হয় এবং হাজারো মানুষ আহত হয়।
গুরুং বিশ্বাস করেন তার আন্দোলন এখন দেশের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। স্বেচ্ছাসেবকরা আইন ও যোগাযোগ বিষয়ক কমিটি গঠন করেছে এবং দেশব্যাপী জনগণের দাবি-দাওয়া সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছে। আন্দোলনের সময় যেভাবে ডিসকর্ড ও ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা হয়েছিল, সেগুলোর মাধ্যমেই এখন সমর্থকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তিনি জানান, তার লক্ষ্য প্রত্যেক নেপালি নাগরিকের কণ্ঠস্বর নিশ্চিত করা। তবে সুদান গুরুং একক প্রার্থী হিসেবে নয় বরং দলগতভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পরিকল্পনা করছেন। তার ভাষায়, একাই প্রার্থী হলে তরুণদের শক্তি একত্রিত হবে না, একসাথে আমরা বেশি শক্তিশালী। আন্দোলনের ঘোষিত কর্মসূচি শুধু দুর্নীতিবিরোধী নয়, তারা নেপালের পর্যটন খাত উন্নয়ন, ভারত ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা এবং বিদেশি হস্তক্ষেপ এড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। গুরুং বলেন, আমাদের তাদের সম্মান করতে হবে, তাদেরও আমাদের সম্মান করতে হবে। তিনি চান পুরোনো রাজনৈতিক নেতারা মার্চের নির্বাচনে অংশ না নিক। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কিকে দুর্নীতি ও আন্দোলনকারীদের হত্যার তদন্ত দ্রুত শেষ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
নিজেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান কি না-এমন প্রশ্নে গুরুং বলেন, আমি এখনই বলবো না যে আমি সঠিক ব্যক্তি, তবে জনগণ যদি আমাকে বেছে নেয়, আমি অবশ্যই প্রার্থী হবো। গুরুং আরও জানান, তাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা চলছে, তাকে অনুসরণ করা হচ্ছে ও মনোবল ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, আমি ভীত নই, আমাকে হত্যা করলেই কিছু থেমে যাবে না। এখন বা কখনও নয়, আমাকে আমার দেশকে রক্ষা করতে হবে।