
ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ বন্ধে গত সোমবার এক পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে হোয়াইট হাউস। এতে বলা হয়েছে, পরিকল্পনার ২০ দফা প্রস্তাব মেনে নিলে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হতে পারে। যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৬৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আর উপত্যকাটিও পরিণত হয়েছে পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে।
হোয়াইট হাউস বলছে, যদি উভয় পক্ষ (ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস) প্রস্তাব মেনে নেয়, তবে যুদ্ধ মুহূর্তেই থেমে যাবে। গাজায় আটক সব জীবিত ও মৃত জিম্মিকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ফিরিয়ে দেওয়া হবে, আর ইসরায়েলে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে। নতুন ব্যবস্থায় গাজা শাসনের দায়িত্ব নেবে একটি ফিলিস্তিনি টেকনোক্র্যাট সরকার। সেখানে হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না। ইসরায়েলও গাজা দখল বা একে তার সঙ্গে যুক্ত করবে না।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ পরিকল্পনা মেনে নিয়েছেন। তবে আল–জাজিরাকে হামাসের কর্মকর্তা মাহমুদ মারদাভি বলেছেন, তাঁরা এখনো গাজার জন্য কোনো লিখিত শান্তি পরিকল্পনা পাননি।
২০ দফা পরিকল্পনা
১. গাজাকে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসমুক্ত অঞ্চলে পরিণত করা হবে, যাতে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর প্রতি কোনো হুমকি না থাকে।
২. গাজাকে পুনর্গঠন করা হবে, যাতে বহু কষ্ট সহ্য করা গাজার জনগণ উপকৃত হন।৩. উভয় পক্ষ প্রস্তাবে রাজি হলে যুদ্ধ সঙ্গে সঙ্গেই শেষ হবে। ইসরায়েলি বাহিনী জিম্মি মুক্তির প্রস্তুতির জন্য নির্ধারিত সীমারেখায় সরে যাবে। এ সময় সব সামরিক অভিযান—বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ বন্ধ থাকবে। যুদ্ধক্ষেত্রের সীমারেখা স্থির থাকবে, যতক্ষণ না ধাপে ধাপে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহারের শর্ত পূরণ হয়। অর্থাৎ, দুপক্ষই তাদের জায়গা বদলাবে না। সব শর্ত যেমন, জিম্মি ও বন্দীমুক্তি, নিরাপত্তাব্যবস্থা ঠিক করা ইত্যাদি পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত এ অবস্থান অপরিবর্তিত থাকবে।
৪. ইসরায়েল প্রকাশ্যে এই চুক্তি মেনে নেওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সব জিম্মিকে (জীবিত ও মৃত) ফিরিয়ে দেওয়া হবে।৫. সব জিম্মি ফেরত আসার পর ইসরায়েল যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ২৫০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেবে। এর সঙ্গে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর আটক করা ১ হাজার ৭০০ গাজাবাসীকেও মুক্তি দেবে। এতে ওই সময় আটক সব নারী ও শিশুও থাকবে। প্রত্যেক ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহের বিনিময়ে ইসরায়েল ১৫ জন গাজাবাসীর মরদেহ ফিরিয়ে দেবে।
৬. সব জিম্মি ফেরত আসার পর, হামাসের যেসব সদস্য শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান মেনে অস্ত্র ত্যাগ করতে রাজি হবেন, তাঁদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হবে। হামাসের যেসব সদস্য গাজা ছাড়তে চান, তাঁদের নিরাপদে অন্য দেশে যেতে দেওয়া হবে।
৭. চুক্তি মেনে নেওয়ার পরই গাজায় পুরোপুরি মানবিক সহায়তা প্রবেশ করবে। ন্যূনতম সহায়তা সেই মাত্রায় থাকবে, যা গত ১৯ জানুয়ারির মানবিক সহায়তা চুক্তিতে নির্ধারণ করা হয়েছিল। এতে অবকাঠামো (পানি, বিদ্যুৎ, নর্দমা ব্যবস্থা), হাসপাতাল, বেকারি মেরামত এবং ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে রাস্তা খোলার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আনার বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
৮. জাতিসংঘ ও এর সংস্থাগুলো, রেড ক্রিসেন্ট এবং অন্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো, যারা কোনো পক্ষের সঙ্গে যুক্ত নয়, তারা গাজায় সহায়তা সরবরাহ ও বিতরণ করবে। রাফাহ সীমান্ত দুই দিকে খোলার বিষয়টি ১৯ জানুয়ারির চুক্তির অধীনে একই ব্যবস্থায় চলবে। অর্থাৎ, সীমান্ত খোলা ও বন্ধ হবে পুরোনো চুক্তির নিয়মে, দুপক্ষের সম্মতি ও তত্ত্বাবধানে।
৯. গাজার প্রশাসন সাময়িকভাবে একটি ফিলিস্তিনি টেকনোক্র্যাট কমিটির হাতে থাকবে। রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ এ কমিটি গাজার মানুষের জন্য দৈনন্দিন সেবা পরিচালনা করবে। কমিটিতে যোগ্য ফিলিস্তিনি ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ থাকবেন। তাঁদের তত্ত্বাবধান করবে একটি নতুন আন্তর্জাতিক সংস্থা—‘বোর্ড অব পিস’; যার প্রধান থাকবেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সংস্থার সদস্য হিসেবে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারসহ অন্য রাষ্ট্রপ্রধানদের নাম পরে ঘোষণা করা হবে। এ সংস্থা গাজা পুনর্গঠনের জন্য অর্থ ও কাঠামো ঠিক করবে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) সংস্কারপ্রক্রিয়া শেষ করে আবারও কার্যকরভাবে গাজার নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম না হওয়া পর্যন্ত সংস্থা কাজ চালাবে। সংস্থাটির লক্ষ্য হবে গাজায় আধুনিক, কার্যকর ও বিনিয়োগবান্ধব প্রশাসন গড়ে তোলা।
১০. অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিকল্পনা অনুযায়ী, মধ্যপ্রাচ্যের কিছু সফল আধুনিক শহরের পরিকল্পনায় কাজ করা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গাজা পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার বিনিয়োগ–প্রস্তাব ও উন্নয়ন–পরিকল্পনা বিবেচনা করা হবে; যাতে কর্মসংস্থান, সুযোগ ও ভবিষ্যতের আশা তৈরি হয়।
১১. গাজায় একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে। অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সঙ্গে শুল্ক ও প্রবেশাধিকারের বিষয়ে আলোচনা হবে।
১২. কাউকে গাজা ছাড়তে বাধ্য করা হবে না। যাঁরা যেতে চাইবেন, যেতে পারবেন এবং ইচ্ছা করলে ফিরে আসতেও পারবেন। তবে মানুষকে গাজায় থাকতে উৎসাহ দেওয়া হবে; যাতে তাঁরা নতুন গাজা গড়ে তুলতে পারেন।
১৩. হামাস ও অন্যান্য সংগঠন প্রত্যক্ষ, পরোক্ষ বা অন্য কোনোভাবে গাজার প্রশাসনে অংশ নেবে না। সব সামরিক অবকাঠামো—টানেল, অস্ত্র কারখানা ধ্বংস করা হবে এবং পুনর্র্নিমাণের অনুমতি থাকবে না। নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকদের তত্ত্বাবধানে নিরস্ত্রীকরণ করা হবে। অস্ত্র নিষ্ক্রিয় করে সরিয়ে ফেলা হবে। অস্ত্র জমা দেওয়ার বিনিময়ে আন্তর্জাতিক তহবিল দিয়ে এটির ক্রয় কার্যক্রম চালানো হবে। নতুন গাজা অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।
১৪. আঞ্চলিক অংশীদাররা নিশ্চয়তা দেবে যে, হামাস ও অন্যান্য গোষ্ঠী তাদের প্রতিশ্রুতি মানবে এবং নতুন গাজা প্রতিবেশী দেশ বা নিজের জনগণের জন্য হুমকি হবে না।
১৫. আরব ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে মিলে যুক্তরাষ্ট্র গাজার জন্য একটি অস্থায়ী বাহিনী ‘ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাবিলাইজেশন ফোর্স (আইএসএফ)’ গঠন করবে। এটি দ্রুত গাজায় মোতায়েন হবে। আইএসএফ গাজার জন্য বাছাই করা ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দেবে এবং জর্ডান ও মিসরের সঙ্গে পরামর্শ করবে; যাদের এ বিষয়ে অভিজ্ঞতা রয়েছে। এ বাহিনী দীর্ঘমেয়াদে গাজার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্ব নেবে। আইএসএফ ইসরায়েল ও মিসরের সঙ্গে মিলে সীমান্ত সুরক্ষার কাজও করবে। মূল লক্ষ্য হবে, গাজায় অস্ত্র প্রবেশ ঠেকানো এবং দ্রুত পুনর্গঠনের জন্য পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করা। এ বিষয়ে একটি সমন্বয়প্রক্রিয়ায় উভয়পক্ষ রাজি হবে।
১৬. ইসরায়েল গাজা দখল বা সংযুক্ত করবে না। আইএসএফ স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করলে ইসরায়েলি সেনারা ধাপে ধাপে গাজা ছাড়বে। এ জন্য নিরস্ত্রীকরণের অগ্রগতি ও নির্ধারিত সময়সূচির ভিত্তিতে পরিকল্পনা করা হবে। উদ্দেশ্য হবে এমন এক গাজা গড়ে তোলা, যা ইসরায়েল, মিসর বা তাদের নাগরিকদের জন্য আর হুমকি হবে না। ইসরায়েলি সেনারা ধাপে ধাপে গাজার নিয়ন্ত্রণ আইএসএফের হাতে তুলে দেবে। পুরো সেনা সরানোর পরও শুধু নিরাপত্তা রক্ষায় সামান্য সৈন্য থাকবে; যতক্ষণ না গাজা পুরোপুরি নিরাপদ হয়।
১৭. যদি হামাস এ পরিকল্পনা মানতে দেরি করে বা মেনে না নেয়, তবুও ইসরায়েল যে জায়গা ছাড়বে (যেগুলো ‘সন্ত্রাসমুক্ত’ করা হয়েছে) সেই জায়গাগুলো আইএসএফের হাতে তুলে দেবে এবং ওই নিরাপদ এলাকায় সাহায্য ও পুনর্গঠনের কাজ চালু হবে।১৮. গাজায় সহনশীলতা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ভিত্তিতে একটি আন্তধর্মীয় সংলাপ চালু হবে। এর লক্ষ্য হবে, ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলিদের দৃষ্টিভঙ্গি ও বর্ণনা বদলানো; যাতে তারা শান্তির সুফল বুঝতে পারেন।
১৯. গাজা পুনর্গঠনের কাজ চলাকালে ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সংস্কারপ্রক্রিয়া বাস্তবায়িত হলে, ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও রাষ্ট্র গঠনে একটি বিশ্বাসযোগ্য পথ তৈরি হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, এটাই ফিলিস্তিনি জনগণের আকাঙ্ক্ষা।
২০. যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংলাপ শুরু করবে; যাতে শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ সহাবস্থানের জন্য একটি রাজনৈতিক দিকনির্দেশনায় তারা একমত হতে পারে। গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনকে গণহত্যা ঘোষণা করে প্রস্তাব পাস লেবার পার্টির:
ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনকে গণহত্যা ঘোষণা করে একটি প্রস্তাব করেছে ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টি। গত সোমবার দলের এক সম্মেলনে দলীয় প্রতিনিধিদের ভোটে প্রস্তাবটি পাস হয়। ব্রিটেন সরকারিভাবে এখনও এটাকে গণহত্যা বলেনি। তবে এই প্রস্তাবের ফলে একই অবস্থান নিতে সরকারের ওপর চাপ আরও বাড়লো। গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইউনাইটেড ন্যাশন্স কমিশন অব ইনকয়ারি নামে জাতিসংঘের একটি তদন্ত দল প্রথমবারের মতো এক প্রতিবেদনে জানায়, ইসরাইল গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে। ফিলিস্তিনিদের ধ্বংস করার উদ্দেশ্যেই এই গণহত্যা চালানো হচ্ছে। এই কর্মকাণ্ডে উসকানি দেয়ার জন্য তারা ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের দায়ী করেন তারা।
জাতিসংঘের এই তদন্ত প্রতিবেদনের সমর্থন জানিয়ে লেবার পার্টির পক্ষ থেকে একটি জরুরি প্রস্তাব আনা হয় যা অনুমোদন করেন দলটির প্রতিনিধিরা। ব্রিটিশ ট্রেড ইউনিয়নগুলোও এই প্রস্তাবের প্রতি জোরালো সমর্থন জানিয়েছে। তবে দলের নেতা ও প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এবং তার মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য এখনও গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনকে গণহত্যা বলতে নারাজ।
তাদের যুক্তি হলো, গণহত্যার প্রশ্নটি রাজনীতিকদের চেয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে নির্ধারিত হওয়া উচিত। অবশ্য ইসরাইল এরই মধ্যে হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) একটি মামলার মুখোমুখি যেখানে তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।সম্মেলনে ভোটাভোটির পর ব্রিটিশ উপ-প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেন, ‘এর অর্থ হলো কনভেনশন অনুযায়ী গণহত্যার বিষয়টি নির্ধারণের দায়িত্ব আইসিজে, তাদের বিচারক ও বিচার বিভাগ এবং আইসিসির ওপর বর্তাবে। এটা করা আমার মতো রাজনীতিকদের নয়।’
প্রস্তাবে ইসরাইল অধিকৃত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অঞ্চল থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ ও যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় বাধাহীনভাবে মানবিক ত্রাণ পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করার দাবি ওঠে এসেছে। বিবিসি বলেছে, লিভারপুলে লেবার পার্টির সম্মেলনে দলীয় প্রতিনিধিরা ভোটের মাধ্যমে গাজায় ইসরাইলি গণহত্যার স্বীকৃতি দিয়েছে। তারা সরকারের প্রতি গাজায় গণহত্যা বন্ধে সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
এতে আরও বলা হয়, যদিও ব্রিটিশ সরকার এই দলীয় সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য নয় তবুও প্রস্তাবে ইসরাইলের কাছে সব ধরনের অস্ত্র বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞার দাবি জানানো হয়েছে। এদিকে লেবার দলের এই প্রস্তাবকে ‘স্টারমার সরকারের চরম পরাজয়’ বলে মন্তব্য করেছেন প্যালেস্টাইন সলিডারিটি ক্যাম্পেইনের (পিএসসি) পরিচালক বেন জামাল।
তিনি এক বার্তায় বলেন, ‘এই ঐতিহাসিক দলীয় সিদ্ধান্তকে এখন অবশ্যই ব্রিটিশ সরকারকে নীতি হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। ইসরাইলের ওপর সর্বাত্মক অবরোধ ও অস্ত্র বিক্রিতে পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে।’ বেন জামাল আরও বলেন, ‘সরকার যদি এই দাবি এড়িয়ে যায় তাহলে বুঝতে হবে তারা ঘটনাটিকে অস্বীকার করছে। তারা গণদাবির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তারা ক্রমেই সারাবিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। নিজ দল থেকেও ছিটকে পড়বে।’
তবে লেবার পার্টির এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে ইসরাইল। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় লেবার পার্টির সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে এক এক্স বার্তায় বলেছে, ‘যখন [ইসরাইলি] প্রধানমন্ত্রী [বেনিয়ামিন] নেতানিয়াহু এবং [মার্কিন] প্রেসিডেন্ট [ডোনাল্ড] ট্রাম্প গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ওয়াশিংটনে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন, তখন যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টি হামাসকে আলিঙ্গন করার এবং ভুয়া-গণহত্যার প্রচারণাসহ তাদের মিথ্যাচারগুলোকে সম্পূর্ণরূপে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।