
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, কোনো একটি দেশ (ভারতকে ইঙ্গিত করে) চেয়েছে হাসিনাকে টিকিয়ে রেখে আজীবন বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণে রাখবে। আবার নতুন করে কারও উপনিবেশে পরিণত হবে। এই প্রচেষ্টা তারা এখনও করার চেষ্টা করছে। যারা শেখ হাসিনার পতনকে মেনে নিতে পারেনি, তারাই দুর্গাপূজার সময় দেশকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত করে যাচ্ছে। গতকাল বুধবার নয়া পল্টনে পূজামণ্ডপ পরিদর্শন এসে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, কোনো একটি দেশ চেয়েছে হাসিনাকে টিকিয়ে রেখে আজীবন তারা বাংলাদেশকে তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখবে। দেশের হিন্দু, মুসলমান একসাথে স্বাধীনতা আনতে পারে, তারা আবার নতুন করে কারো উপনিবেশে পরিণত হবে! তবে এই প্রচেষ্টা তারা এখনো করার চেষ্টা করছে। আজকে সীমান্তে পাহাড়ের অশান্তি কেন? কী এমন ঘটনা হয়েছে পূজার সময়? সেখানেও তো অনেক হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ আছে। সেখানে হঠাৎ করে অশান্তি তৈরি করা হলো কেন? সারাদেশকে ওইদিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করা হলো কেন? এই উৎসবের মুহূর্তে এটা পরিকল্পিত। বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার একটা জাতীয়-আন্তর্জাতিক চক্রান্ত, যারা শেখ হাসিনার পতনকে মেনে নিতে পারেনি, তারাই এই চক্রান্ত করে যাচ্ছে এই দুর্গাপূজার সময়। এমন কিছু ঘটনা ঘটাতে হবে, যাতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় বিদেশে। এই কারণেই এই প্রচেষ্টা তারা চালাচ্ছে। বাংলাদেশি সফটওয়্যার
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছেন তার রাজত্ব কায়েম করার জন্য, তার ছেলে-মেয়ে, ভাগ্নে-ভাগ্নি সম্পদ দেবেন, এদের টাকার ব্যবস্থা করে দিবেন, এদের ধনী করবেন। এটা ছিল হাসিনার একটা পারিবারিক শাসন, পারিবারিক রাজত্ব তৈরি করতে চেয়েছেন। কারণ তিনি মনে করতেন যে এই দেশটা তার বাপের এবং তার এটা তাদের ব্যক্তিগত মালিকানা এবং এটা তাদের ব্যক্তিগত জমিদারী। দেশের জনগণ কখনোই তা সহ্য করেনি।
পূজামণ্ডপের চিত্র তুলে ধরে রিজভী বলেন, রাজনীতিতে বিভাজন নেই বলেই আজকে পরস্পরের মধ্যে হৃদয়ে সম্মেলন করছেন, সেই সম্মেলন অসাধারণ ও অতুলনীয়। কিন্তু চেষ্টা আছে, এখনও প্রচেষ্টা আছে- এটাকে ভাঙার।
তিনি বলেন, দুর্গাপূজার উৎসবকে নিরাপদ এবং যাতে নির্বিঘ্নে উৎসব দিয়ে উদযাপিত হয়, তার জন্য আমরা প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। দল নির্বিশেষেই এই আন্তরিকতা রয়েছে। তারপরও পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে বা আমাদের এই সমাজের মধ্যে থেকে নিজেকে লুকিয়ে রেখে নানা অন্তর্ঘাত করার প্রচেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু সরকার এবং প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি এবং তারেক রহমানের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনায় সারা দেশে বিএনপির প্রতিটি মানুষ, অঙ্গ সংগঠনের প্রতিটি ছেলে-মেয়ে, অত্যন্ত সতর্ক দৃষ্টি রেখেছে এই পূজায়। কোনো ধরনের নাশকতা বা কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে না পারে এই পূজাকে কেন্দ্র করে এবং বাংলাদেশের যে মুখচ্ছবি, বাংলাদেশের যে মুখমণ্ডল এটাকে বিকৃত করতে না পারে।
তিনি বলেন, এখন পূজামণ্ডপে অভূতপূর্ব পরিবেশ এসেছে! কিন্তু মাঝখানের সময় এমন অবস্থা তৈরি হলো, এমন সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি করা হয়েছিল, আমাদের এই অটুট বন্ধনকে ধ্বংস করে দিয়ে, আমাদের দেশের জাতির মুখমণ্ডলকে কলঙ্কিত করার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। রিজভী বলেন, একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধ করেছে মুসলিম এবং হিন্দু মিলেমিশে, এখানে তো কোনো সাম্প্রদায়িক বিভাজন হয়নি। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি একসঙ্গে। সেটি হোক নব্বই কিংবা চব্বিশ সালে। জুলাই আন্দোলনে তো হিন্দুদের অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছে। আমরা তো একসঙ্গে লড়াই করেছি গণতন্ত্র ফেরানোর জন্য।