
ভোলার চরফ্যাশনে স্থানীয় জাতের পরিবর্তে উফশী বা উন্নত জাতের ধান চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। উপজেলার গ্রাম-গঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে শোভা পাচ্ছে এখন উন্নত জাতের আমন ধানের শীষ। সবুজ থেকে সোনালি রঙ ছড়ানো বাতাসে ভাসছে সোনালি ধানের মৌ মৌ গন্ধ।
গতকাল রোববার উপজেলার নীলকমলসহ কয়েকটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা সরেজমিন দেখা গেছে, চলতি মৌসুমে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে শোভা পাচ্ছে উন্নত জাতের আমন ধানের সমারোহ, সবুজ-সোনালি শীষ দুলছে বাতাসে। ফসল ভাল হওয়ায় কৃষকের মনের বাতায়নে বইছে আনন্দ।
এ বছর প্রায় ৩৪৬০০ হেক্টর জমিতে উফশী জাতের ব্রিধান ৫২ এবং প্রায় ১০৭০০ হেক্টর জমিতে বিআর ২৩ চাষ হয়েছে। উফশী জাতের ধান ব্রি ধান ৫২, বি আর ২৩ ছাড়াও বি আর ১১, ব্রি ধান ৮৭, ৯৪,৯৫,৭৬ বি আর ২২ ও স্বর্ণা ধানের চাষ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০২৫ -২৬ খরিপ-২ মৌসুমে আমনের টার্গেট ছিল ৭১৯৮০ হেক্টর; আবাদ হয়েছে ৭১৩৩৫ হেক্টর। এবার চলতি মৌসুমে উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ মে.টন। কৃষি বিভাগ আরও জানায়, গত বছরের তুলনায় এবছর প্রায় ১৩০০ হেক্টর বেশি জমিতে উফশী জাতের ধান চাষ হয়েছে এবং এ বছর উফশী জাতের আমন ধানের উৎপাদন ভালো হয়েছে। এ আমন ধান বিক্রি করে কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হবে এবং সেই জমিতে কৃষকরা তরমুজ, তেল-ডাল জাতীয় ফসলসহ অন্যান্য রবিশস্য উৎপাদন করে কৃষকরা আরও ফলন পাবে। সূত্র জানায়, এতে তাদের আয় আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়।
কৃষক বাবুল মাতাব্বর বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে ৪ একর জমিতে উফশী জাতের ধান আবাদ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফসল ভালো হয়েছে। বাজারে ধানের দামও ভাােল। আশা করি, উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে ভালো একটা আর্থিক লাভবান হতে পারব।
উপজেলা কৃষি কর্মকতা কৃষিবিদ নাজমুল হুদা আলোকিত বাংলাদেশকে জানান, এ উপজেলার কৃষকরা উফসি বা উন্নত জাতের ধান চাষে দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তিনি বলেন, আমরাও কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছি। কৃষকরা উফশী জাতের ধান প্রতি বিঘায় ২০ থেকে ২২ মণ করে ফলন পাবেন। উফশী জাতের ধান তোলার পর কৃষকরা আবার এ জমিতে আগাম আলু, শাকসবজি, সরিষা, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষাবাদ করতে পারছেন। ফলে একই জমিতে তিন ফসল আবাদ করা যাচ্ছে। ধানের দাম ও খড়ের দাম ভালো পাওয়ায় দিন দিন উফশী জাতের ধান চাষাবাদের ক্ষেত্রে আগ্রহী হয়ে উঠছেন এই উপজেলার কৃষকরা।