
দেশের সব আদালতে বিচারকের বাসস্থান ও যাতায়াতের সময় নিরাপত্তা বাহিনী নিযুক্ত করাসহ দুই দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। দাবি পূরণে গতকাল ৪৮ ঘণ্টা সময় দিয়েছেন বিচারকেরা। তা না হলে আগামী রোববার থেকে তারা একযোগে কলমবিরতি পালন করবেন।
গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম ও মহাসচিব মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়েছে। বিচারকদের দ্বিতীয় দাবি হলো, রাজশাহীর ঘটনায় বিচারকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অবহেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং গ্রেপ্তার করা আসামিকে আইনবহির্ভূতভাবে মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করে অপেশাদারত্ব প্রদর্শনে জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। শুক্রবার ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়। এই সময়ের মধ্যে বিচারকদের কর্মের পরিবেশ ও সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি পূরণ না হলে রোববার থেকে সারা দেশে একযোগে কলমবিরতি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন বিচারকেরা।
রাজশাহীতে গত বৃহস্পতিবার জেলা জজ মোহাম্মদ আবদুর রহমানের বাসভবনে ছুরিকাঘাতে তার ১৭ বছরের ছেলে তাওসিফ রহমানকে হত্যা করা হয়। আহত হন স্ত্রী তাসমিন নাহার। এ ঘটনায় বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন গভীর শোক ও ক্ষোভ জানায়।
বিবৃতিতে বিচারকেরা বলেছেন, দেশের প্রত্যেক আদালত বা ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণ, এজলাস, বিচারকদের বাসভবন ও গাড়িতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে সুপ্রিম কোর্ট থেকে বারবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরকার কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি।
বিচার বিভাগের সদস্যরা রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ দায়িত্ব পালন করলেও তারা ও তাদের পরিবার নিরাপত্তাহীন বলে ওই বিবৃতিতে জানানো হয়। জেলা পর্যায়ের সব বিচারকের জন্য সরকারি আবাসন ও পরিবহনব্যবস্থা নেই বলেও জানানো হয় বিবৃতিতে। চৌকি আদালতে বিচারকদের বাধ্য হয়ে অরক্ষিত বাসায় ভাড়া থাকতে হয়, রিকশা-ভ্যানে করে, এমনকি হেঁটেও যাতায়াত করতে হয়।
রোববার দেশের সব বিচারক নিজ নিজ কর্মস্থলে কালো ব্যাজ পরবেন বলেও ওই বিবৃতিতে জানানো হয়। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহী নগরের ডাবতলা এলাকায় ভাড়া বাসায় খুন হয় নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাওসিফ। হামলাকারী লিমন মিয়া (৩৫) তাদের পূর্বপরিচিত। তার হামলায় জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন তাওসিফের মা তাসমিন নাহার (৪৪)। এ ছাড়া ধস্তাধস্তিতে হামলাকারী লিমন আহত হয়ে হাসপাতালে পুলিশের হেফাজতে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় শুক্রবার বেলা ১১টা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি।