
আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন সেলে (টিএফআই সেল) গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আগামী ২১ ডিসেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক-বর্তমান সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আদেশ দেবেন। গতকাল রোববার চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ দেন।
শুনানিতে তিন আসামির পক্ষে আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ এবং সাতজনের হয়ে লড়েন আইনজীবী তাবারক হোসেন। পলাতক আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী এম. হাসান ইমাম। এছাড়া তিনজনের পক্ষে সুজাদ মিয়া ও শেখ হাসিনার হয়ে লড়েন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।
প্রতিটি পক্ষ আলাদা যুক্তি উপস্থাপন করে মক্কেলদের অব্যাহতির আবেদন করেন। অপর দিকে, প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আবেদন করেন।
এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম গুম-নির্যাতনের বীভৎস চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গুম হওয়া ব্যক্তিদের ভাগ্য দুইভাবে নির্ধারিত হতো; ভাগ্য ভালো হলে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হতো, অন্যদিকে সাত-আট বছর গুম রাখার পর অজানা স্থানে ফেলে দেওয়া হতো।
এইদিন সকাল ১০টার পর ঢাকার সেনানিবাসের বিশেষ কারাগার থেকে গ্রেফতার ১০ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তারা হলেন- র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে); র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।
পলাতক আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার প্রতিরক্ষাবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, র্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ এবং র্যাবের সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মো. খায়রুল ইসলাম।