
ভোলায় ইঞ্জিনিয়ার পেশা থেকে মাটির টানে কৃষক কাজে আগ্রহী হয়ে ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদনে স্বাবলম্বী উদ্যোক্তা ওসমান গণী। সদর উপজেলার ছোট আলগি গ্রামের বাসিন্দা তিনি। একসময় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভালো বেতনের চাকরি করতেন ওসমান। বিএসসি পাস করা এ ইঞ্জিনিয়ার আধুনিক জীবন ছেড়ে টান অনুভব করেন মাটির প্রতি, কৃষির কাজের প্রতি। আর সে টান থেকেই মাত্র ৪ বছর আগে চাকরি ছেড়ে ফিরে আসেন নিজ গ্রামে-শুরু করেন ভিন্নধর্মী এক যাত্রা।
উদ্যোক্তা ওসমান গণী বলেন, তিনি প্রথমে মাত্র ২টি গরু নিয়ে গরুর খামার শুরু করেন। ধীরে ধীরে খামারের পরিসর বাড়িয়ে নেন, গরুর সংখ্যা দাঁড়ায় ১২-তে। দুধ, মাংস এবং ঘি উৎপাদন করে বাজারজাত শুরু করেন। তারই ধারাবাহিকতায় খামারের গবাদি পশুর গোবর ব্যবহার করে শুরু করেন কেঁচো সার বা ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন।
প্রথমে মাত্র ২০টি রিং দিয়ে ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন শুরু করলেও বর্তমানে সেটির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬০টিতে। এখন প্রতি মাসে তার খামারে উৎপাদিত হয় ১০ থেকে ১২ টন ভার্মি কম্পোস্ট। বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা থাকায় খুচরা বাজারে প্রতি কেজি সার ২০ টাকা ও পাইকারি দরে ১৫ টাকা করে বিক্রি করেন তিনি। এর ফলে মাসে আয় হচ্ছে প্রায় ১ থেকে দেড় লাখ টাকা। চাহিদা এত বেশি , উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে শিগগিরই আরও রিং সংযোজনের পরিকল্পনা করছেন তিনি। শুধু নিজেই আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হননি, বরং তার খামারে কর্মসংস্থান হয়েছে কয়েকজন স্থানীয় যুবকের। বেকার তরুণদের তিনি উৎসাহিত করছেন এই খাতে আসার জন্য। তার খামার পরিদর্শনে প্রতিদিনই ভিড় করছেন আশপাশের এলাকার অনেক উৎসাহী মানুষ। তার এই সফল উদ্যোক্তা-জীবনে খুশি প্রাণিসম্পদ বিভাগও। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, এ ধরনের উদ্যোগ দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে বড় ভূমিকা রাখবে। ইঞ্জিনিয়ার ওসমান গণীর এসাহসী ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ অনুপ্রেরণা হতে পারে দেশের অসংখ্য বেকার তরুণের জন্য। নিজ উদ্যোগে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে তিনি প্রমাণ করেছেন- প্রচেষ্টা আর পরিকল্পনা থাকলে কৃষিও হতে পারে সমৃদ্ধির পথ।