
সিলেটে টিকিট কালোবাজারি ঠেকাতে ট্রেন চলাচলে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সঙ্গে রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেসের যাত্রীদের টিকিট যাচাইয়ের মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম দিনে দুই-তিনজন যাত্রীকে টিকিট ছাড়াও পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে অভিযানে অংশ নেওয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলি রানী দেব। এদিকে সিলেট স্টেশনের পেছনের অংশের তিনটি গেট খোলা রেখে মূল ফটক দিয়ে প্রবেশকারী যাত্রীদের টিকিট যাচাই করা হয়েছে। ফলে পেছনের তিন গেট দিয়ে কালোবাজারী থেকে কেনা যাত্রীরা অনায়াসে ট্রেনে উঠতে পেরেছেন বলে জানা গেছে। এমনকি ট্রেনের পেছনের বগিগুলোতে রেলের কর্মচারী ও রেলওয়ে পুলিশের যোগসাজেশে বিনা টিকিটে অনেক যাত্রী চড়েন বলে জানা গেছে। পাহাড়িকা এক্সপ্রেসে মিজানুর নামে রেলওয়ের এক কর্মচারী ৬০০ টাকায় এক সাংবাদিককে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়ার জন্য ট্রেনের পেছনের বগিতে তোলেন। পরে সাংবাদিক পরিচয় জানার তিনি অস্বীকার করে গা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাকে গা ঢাকা দিতে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসেন কাদির নামে রেলওয়ে পুলিশের এক সদস্য। তাকেও বিনা টিকিটে যাত্রীদের ট্রেনে তুলতে দেখা গেছে। পরে তিনিও বিষয়টি অস্বীকার করেন।
স্টেশন সূত্র জানায়, ট্রেনের টিকিট কালোবাজারিতে রেলের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী, রেল পুলিশ এবং রেলওয়ে নিরাপত্তবাহিনীর সদস্যদের একটি বড় সিন্ডিকেট রয়েছে। এ সিন্ডিকেট আজ মূল গেটের পরিবর্তে তাদের যাত্রীদের পেছনের গেট ব্যবহার করতে বলেছেন। এর আগে টিকিট কালোবাজারি ঠেকাতে গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে অবস্থান করেন জৈন্তাপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) পলি রানী দেব ও দক্ষিণসুরমা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিহাব সারার অভি। এ সময় সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার মুহাম্মদ নুরুল ইসলামসহ রেল কর্মকর্তা, র্যাব, রেলওয়ে পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। অভিযান শেষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলি রানী দেব বলেন, ‘প্রথম দিনে টিকিট ছাড়া দুই-তিনজন যাত্রীকে জরিমানা করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’ স্টেশনের পেছনের তিনটি গেট খোলা রাখা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। খুব দ্রুত এ বিষয়ে তিনি ব্যবস্থা নিবেন।’